চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃ করোনাভাইরাস মহামারিতে সরকারি ত্রাণ ও চাল আত্মসাতের অভিযোগে আরও এক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও দুই সদস্যকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়। মঙ্গলবার (১২ মে) স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত আলাদা প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
স্থানীয় সরকার বিভাগ জানায়, করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর এ নিয়ে মোট ৫৫ জন জনপ্রতিনিধিকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হলো। এদের মধ্যে ২০ জন ইউপি চেয়ারম্যান, ৩৩ জন ইউপি সদস্য, একজন জেলা পরিষদ সদস্য এবং একজন পৌরসভার কাউন্সিলর।
দুর্যোগের কালে ত্রাণ আত্মসাৎ করে যাতে কেউ পার না পায়- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এমন নির্দেশনার পর থেকেই মূলত কঠোর হয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগ।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম ইতোপূর্বে ত্রাণ বিতরণে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর জনপ্রতিনিধি ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ার ঘোষণা দেন এবং এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় থেকে অফিস আদেশ জারি করা হয়।
মন্ত্রী এক বার্তায় স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর জনপ্রতিনিধি ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, করোনা ভাইরাসজনিত কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রমে অনিয়ম ও দুর্নীতি করলে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রয়োজনে বরখাস্ত ও ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হবে।
তিনি আরও বলেন, ত্রাণ বিতরণে অনিয়ম করা জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার কারণে বর্তমানে অনিয়মের ঘটনা কম পরিলক্ষিত হচ্ছে। এরকম শাস্তিমূলক ব্যবস্থা অব্যাহত থাকবে। কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।
মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান জানান, বরখাস্ত হওয়াদের মধ্যে অন্তত ২০ জন জেল হাজতে আছেন। তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
নতুন করে সাময়িকভাবে বরখাস্তরা হলেন- হবিগঞ্জ জেলার শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার নুরপুর ইউপির চেয়ারম্যান মুখলিছ মিয়া, রাজশাহী জেলার চারঘাট উপজেলার নিমপাড়া ইউপির ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. আকবর আলী এবং ভোলা জেলার চরফ্যাশন উপজেলার আহাম্মদপুর ইউপির ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. কামাল হোসেন।
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, তাদের বিরুদ্ধে ত্রাণ ও ভিজিডির চাল আত্মসাৎ, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল আত্মসাৎ এবং মৎস্য ভিজিএফের চাল আত্মসাতের অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে এবং সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ করেছেন। তাদের এই অপরাধমূলক কার্যক্রমের পরিপ্রেক্ষিতে তাদের দ্বারা ইউনিয়ন পরিষদের ক্ষমতা প্রয়োগ প্রশাসনিক দৃষ্টিকোণে সমীচীন নয় মর্মে সরকার মনে করে। কাজেই স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন ২০০৯ এর ৩৪(১) ধারা অনুযায়ী তাদের স্বীয় পদ হতে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হলো।
একইসময় সাময়িকভাবে বরখাস্ত চেয়ারম্যান ও সদস্যদের আলাদা আলাদা কারণদর্শানো নোটিশে কেন তাদের চূড়ান্তভাবে পদ থেকে অপসারণ করা হবে না তার জবাব পত্রপ্রাপ্তির ১০ কার্যদিবসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্থানীয় সরকার বিভাগে পাঠানোর অনুরোধ করা হয়।