সব কিছু
facebook channelkhulna.tv
খুলনা রবিবার , ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
দাকোপে ১০টাকা কেজির চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ | চ্যানেল খুলনা

দাকোপে ১০টাকা কেজির চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ

চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃখাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় খুলনার দাকোপ উপজেলার বানীশান্তা ইউনিয়নের দরিদ্র ও দুস্থদের জন্য ১০টাকা কেজি দরে চাল বিক্রির তালিকা প্রণয়ন ও চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ইউনিয়ন পরিষদের কয়েকজন (ইউপি) সদস্য ও বাছাই কমিটির সদস্যদের স্বজনপ্রীতির জন্য ওই চাল বিত্তবানদের ঘরে যাচ্ছে বলে অনেকের অভিযোগ। এ ছাড়া ওই ইউনিয়নের ডিলারের বিরুদ্ধে রয়েছে ওজনে কম দেওয়াসহ অতিরিক্ত ৩১০ টাকা আদায়ের অভিযোগ।

এলাকার কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জনপ্রতি ৩০ কেজি না দিয়ে মজুদঘরের ভিতরে বস্তায় হুক ব্যবহার করে কার্ডধারীদের মাঝে ২৫ থেকে ২৬ কেজি করে চাল বিতরণ করা হয়। ইউনিয়নের পূর্ব ঢাংমারী গ্রামের ইনতাজ আলী হাওলাদার(৬৬) নামের এক কার্ডধারী ডিলারের কাছে চাল নিতে এলে ৩০ কেজিতে তিনশ টাকার পরিবর্তে অতিরিক্ত আরও ১০ টাকা আদায় করার অভিযোগ আনেন। এ সময় কার্ডধারীরা অনেকেই অতিরিক্ত ১০ টাকা করে আদায়ের অভিযোগ করেন। পরে স্থানীয়দের তোপের মুখে পড়ে নিয়মানুযায়ী চাল বিতরণ করলেও অতিরিক্ত টাকা ফেরত দেয়নি।

ওই ইউনিয়নে গেলে ফেয়ার প্রাইজের চাল পেয়েছেন অন্তত ১৫ জন এই চাল বিতরণে অনিয়মের বিষয়ে অভিযোগ করেন। ঢাংমারী গ্রামের খোকন শেখ বলেন, ৩০ কেজি করে চাল দেওয়ার কথা থাকলেও দেওয়া হয়েছে ২৫ কেজি করে। প্রতিবাদ করলেও কেউ তোয়াক্কা করেননি। তিনি আরও বলেন, ৩০ কেজি ওজনের বস্তায় হুক ব্যবহার করে ডিলারের লোক চাল বের করে নেন, আবার কোনো কোনো বস্তা ছেড়া-ফাটা। ডিলারের কথামত ‘যার ভাগ্যে যা পড়বে সেই বস্তাই নিতে হবে’, তাতে করে চাল ঠিকমত পায়না।

ইউনিয়নের ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ৫২০ জন উপকারভোগিদের মাঝে সোমবার (১১ নভেম্বর) এই চাল বিতরণ করা হয়। চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় ইউপি সদস্য বিপুল সরকার। তিনি জানান, দীর্ঘদিন ধরে চাল বিতরণ করা হচ্ছে। কিন্তু কখন হয়, কিভাবে করা হয়-এ বিষয়ে আমাদেরকে ডিলারেরা জানান না। তবে সোমবারে ওজনে কম দেওয়া ও অতিরিক্ত টাকা আদায়ের বিষয় শুনেছি। ঘটনাটির পরে ইউপি চেয়ারম্যান ও সকল ইউপি সদস্যরা একত্রিত হয়ে পরিষদের সম্মেলনকক্ষে বসে আলোচনা করেছি, সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য চেয়ারম্যানকে বলা হয়েছে।

পূর্ব ঢাংমারী গ্রামের হান্না হালদার নামের এক বৃদ্ধা অভিযোগ করে বলেন, ডিলারের কাছে সময় মতো এসে চাল না পেয়ে বাড়ি ফিরে যেতে হয়। এছাড়া দীর্ঘদিন ধরে ডিলারের কর্মচারীদের কাছ থেকে চাল বাড়ি গিয়ে ওজন করে দেখা যায় প্রায় ২৬ কেজি থাকে।

এদিকে অতিরিক্তি টাকা আদায় ও ওজনে চাল কম দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বানীশান্তা ইউনিয়নের ডিলার বরুণ পাইকের বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে বরুণ  বলেন, আমি কখনোই চাল কম দেয়নি। অভিযোগ অস্বীকার করে ডিলার বলেন, কার্ডধারীদের কথামত বস্তা বাবদ ১০ টাকা অতিরিক্তি আদায় করা হয়েছে। এছাড়া খাদ্যগুদাম থেকে যেভাবে চালের বস্তা পাওয়া গেছে সেভাবে বিতরণ করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, তার কাছ থেকে ৫২০ জন কার্ডধারী চাল উত্তোলন করেন। এরমধ্যে সোমবার (১১ নভেম্বর) ৩৯২ জন কার্ডধারী চাল নিয়েছে। তিনি দাবি করে বলেন, শুধু আমি নয় উপজেলার সকল ডিলারেরা বস্তা বাবদ কার্ডধারীর কাছ থেকে অতিরিক্ত ১০ টাকা আদায় করে থাকে।

চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ এনে খুলনা মৎস্য দপ্তরের ইউনিয়ন পর্যায় মৎস্যচাষ প্রকল্পের উপপরিচালক লুকাস সরকার বলেন, ওই ইউনিয়নে তার নিজের গ্রামের বাড়ি হওয়ায় সেখানে গিয়ে এই চাল বিতরণে ওজনে কম ও অনিয়ম চোখে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রতিবাদ করেছি। তিনি আরও বলেন, সোমবার চাল বিতরণে অনিয়ম হলে স্থানীয়রা তাৎক্ষণিকভাবে বিতরণ কাজ বন্ধ করায়। পরে সঠিক নিয়মে যদিও চাল দেওয়া হয়েছে, তবে বিতরণের সময়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে তদারক কর্মকর্তা সেখানে থাকেন না বলে দাবি করেন তিনি।

বানীশান্তা ইউনিয়নে ফেয়ার প্রাইজ চাল বিতরণে প্রশাসনের পক্ষ থেকে তদারক কর্মকর্তা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা পরিতোষ কুমার রায় জানান, অনিয়মের বিষয় শোনার সাথে সাথে সেখানে আমাদের কর্মচারী পাঠানো হয়েছিল। তবে ওই ডিলার ৩০ কেজির পরিবর্তে ২৯ কেজি চাল কার্ডধারীদের মাঝে বিতরণ করে থাকে। তিনি আরও বলেন, খাদ্যগুদাম থেকে চাল নিতে গেলে বহন খরচা বাবদ কিছু টাকা কেটে রাখে, তাই অতিরিক্ত ১০ টাকা ডিলারা আদায় করে থাকে বলে জেনেছি।

বানীশান্তা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সুদেব কুমার রায় মুঠোফোনে বলেন, চাল ওজনে কম দেওয়ার কথা শুনেছি। পরে ডিলারের সহযোগির সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেছি। কিন্তু কবে নাগাদ চাল বিতরণ করা হয়, তা কখনো আমাকে জানায় না। তিনি আরও বলেন, যেহেতু ঘুর্ণিঝড় বুলবুলের পরের দিনে চাল বিতরণ করে থাকে, তাই ঘটনাস্থলে তাৎক্ষনিক যেতে পারেনি। তবে আজ বিকেলে (বৃহস্পতিবার) ওই গ্রামে গিয়ে ভুক্তভোগিদের কাছে সঠিকভাবে শুনে প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হবে।

দাকোপ উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সুজিৎ কুমার মুখার্জি বলেন, ডিলারের কাছ থেকে কোনো প্রকার টাকা দাবি করা হয় না। এছাড়া বস্তাসহ চাল উপকারভোগিদের জন্য বরাদ্দ করেন সরকার। এর জন্য কোনো রকম অতিরিক্ত টাকা আদায় করার নিয়ম নেই। তাছাড়া সবকিছুর জন্য ডিলারদের প্রতি কেজিতে ঢেড় টাকা কমিশন দেওয়া হচ্ছে। তবে যদি চাল বিতরণে ওজনে কম ও অতিরিক্ত টাকা আদায় করে থাকে, তাহলে ওই এলাকায় গিয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ ব্যাপারে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. তানভীর রহমানের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হলে, তিনি  জানান এ ধরণের অনিয়ম ও অতিরিক্ত টাকা আদায় যদি করে থাকে তাহলে সঠিক তদন্ত করে সুষ্ঠ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

https://channelkhulna.tv/

সংবাদ প্রতিদিন আরও সংবাদ

সাবেক আইজিপি ও কেএমপি কমিশনারসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা

আদালত চত্বরে সাবেক মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্রের ওপর ডিম নিক্ষেপ

আমির হোসেন আমু গ্রেপ্তার

কাকরাইল মসজিদে সাদপন্থিদের ঢুকতে দেওয়া হবে না তাবলিগ জামাত

কালীগঞ্জে ভারতীয় গরু আনতে গিয়ে যুবক আটক

পাটের ব্যাগ পুনরায় সর্বত্র চালুর উদ্যোগ নিয়েছি : সাখাওয়াত

চ্যানেল খুলনা মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন  
DMCA.com Protection Status
সম্পাদক: মো. হাসানুর রহমান তানজির
It’s An Sister Concern of Channel Khulna Media
© ২০১৮ - ২০২৪ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | চ্যানেল খুলনা.বাংলা, channelkhulna.com.bd
যোগাযোগঃ কেডিএ এপ্রোচ রোড (টেক্সটাইল মিল মোড়), নিউ মার্কেট, খুলনা।
প্রধান কার্যালয়ঃ ৫২/১, রোড- ২১৭, খালিশপুর, খুলনা।
ফোন- 09696-408030, 01704-408030, ই-মেইল: channelkhulnatv@gmail.com
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য অধিদফতরে অনলাইন নিউজ পোর্টাল নিবন্ধনের জন্য আবেদিত।