দীর্ঘ ৬ বছর পর আগামীকাল রোববার পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার মাঠে অনুষ্ঠিতব্য সম্মেলনকে কেন্দ্র করে সাজ-সজ্জায় ভরে উঠেছে জেলা শহরের বিভিন্ন এলাকা। নতুন কমিটিতে কে হচ্ছেন সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক এ নিয়ে গুঞ্জন চলছে স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা বিরাজ করছে। মাঠের চতুর্দিক সম্ভাব্য প্রার্থীদের সমর্থনে সাঁটানো পোস্টার-ব্যানার ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে। জেলা শহরের বিভিন্ন সড়কে অসংখ্য তোরন নির্মিত হয়েছে। তৃণমূল নেতাকর্মীরা দলকে সুসংগঠিত করার লক্ষ্যে যোগ্য নেতৃত্বকেই চাইছেন। সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন দুটি পদের জন্য প্রতিদন্দিতায় রয়েছেন ত্যাগী নেতারা। এ নিয়ে সরব আলোচনা, যুক্তি-তর্ক কোথাও ফিসফাস।
জেলা আওয়ামীলীগ সূত্রে জানা যায়, রোববার সকালে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য আলহাজ্ব আমির হোসেন আমু এমপি, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ. ফ. ম. বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাড. আফজাল হোসেন, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. শাম্মী আহম্মেদ, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিষ্টার বিপ্লব বড়ুয়া, শিল্প ও বানিজ্যিক বিষয়ক সম্পাদক মোঃ সিদ্দিকুর রহমান, কেন্দ্রীয় সদস্য অ্যাডভোকেট আমিরুল ইসলাম এমপি, আনিসুর রহমান ও গোলাম কবীর রাব্বানী চিনু। সভায় সভাপতিত্ব করবেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এ কে এম এ আউয়াল।
এদিকে সম্মেলনে বর্তমান সভাপতি একেএমএ আউয়াল সভাপতি থাকলেও সাধারন সম্পাদক পদে একাধিক সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম আলোচনায় আসছে। তাদের মধ্যে বর্তমান সাধারন সম্পাদক অ্যাডভোকেট এমএ হাকিম হাওলাদার, বর্তমান কমিটির যুগ্ম সম্পাদক আক্তারুজ্জামান ফুলু, সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়াউল আহসান গাজী, সাংগঠনিক সম্পাদক মহিউদ্দিন মহারাজ এবং সদস্য ইসাহাক আলী খান পান্নার নাম শোনা যাচ্ছে।
অন্যদিকে, বর্তমান জেলা কমিটির প্রবীন ও এক নম্বর সদস্য এবং সাবেক এমপি অধ্যক্ষ শাহ আলম বলেন, আমি আওয়ামীলীগকে ভালবাসি, বঙ্গবন্ধু আমার আদর্শের প্রতীক এবং আমি জনগনের পক্ষের লোক। সম্মেলনে নেতারা আমাকে যেখানে পদ দিতে চায় সেখানে থাকতে কোন আপত্তি নেই।
সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহবায়ক, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও পিরোজপুর পৌর মেয়র হাবিবুর রহমান মালেক জানান, সম্মেলন আয়োজনের যাবতীয় কার্যক্রম শেষ করা হয়েছে। জেলা সম্মেলন আয়োজনের লক্ষে জেলার ৭টি উপজেলার সম্মেলন ইতোমধ্যেই সম্পন্ন করা হয়েছে। সাংগঠনিক কিছু সমস্যার কারনে শুধুমাত্র মঠবাড়িয়া উপজেলার সম্মেলন করা যায়নি।
এছাড়া সম্মেলনে নতুন মুখ আসবে কিনা জানতে চাইলে জেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি ও পৌর মেয়র হাবিবুর রহমান মালেক বলেন, করোনা পরিস্থিতে ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে দলের যেসকল নেতা কর্মীরা সাধারন মানুষের পাশে ছিল এবং মাঠ পর্যায়ে ও রাজপথে থেকে স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তিকে মোকাবেলা করেছে তাদেরকেই দলের মূল্যায়ন করা উচিত বলে মনে করেন তিনি।
প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের ১১ ডিসেম্বর জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব এ. কে. এম. এ. আউয়ালকে সভাপতি ও এ্যাড. এম. এ. হাকিম হাওলাদারকে সাধারণ সম্পাদক মনোনীত করা হয়। পরে ২০১৬ সালের ১ সেপ্টেম্বর ৭১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষনা করেছিল কেন্দ্রীয় কমিটি।