চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃদুর্ণীতি দমন কমিশন (দুদক)র হট লাইনে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অভিযোগ কেন্দ্রে আগত অভিযোগের প্রেক্ষিতে আজ সারাদেশে পৃথক পৃথক জেলায় ৬টি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করেছে । এছাড়াও দুদক অভিযোগ কেন্দ্র ( টোল ফ্রি হটলাইন – ১০৬) এ আগত অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুর্নীতি প্রতিরোধে ১০ উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে পত্র প্রদান করেছে দুদক। শুরুতেই দুদক রাজশাহীতে বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলার জন্য তাহেরপুর পৌরসভা এলাকায় অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় তাহেরপুর শহররক্ষা বেড়িবাঁধের নির্মাণ কাজে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে এই মর্মে দুদক অভিযোগ কেন্দ্র হটলাইন -১০৬ আগত অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করেছে দুদক এনফোর্সমেন্ট টিম। সরেজমিনে দেখা যায়, বেড়িবাঁধের প্রকল্পের মোট মূল্য প্রায় ৫ কোটি টাকা এবং বাঁধটির দৈর্ঘ্যে ৪১৫ মিটার যার মধ্যে ৪০০ মিটারের কাজ সমাপ্ত হয়েছে। প্রকল্প পরিদর্শনে দেখা যায় অত্যন্ত নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হওয়ায় নির্মাণের ৩ মাস যেতে না যেতেই বাঁধের প্রায় ৬০ ভাগ নদীতে বিলীন হয়ে গিয়েছে। বাঁধের অন্যান্য অংশেও ফাটল দেখা দিয়েছে। দুদক টিম প্রকল্প সংশ্লিষ্ট নথিপত্র সংগ্রহ করে এবং তা যাচাই পূর্বক অনুসন্ধানের অনুমোদন চেয়ে কমিশনে প্রতিবেদন উপস্থাপন করবে।
দ্বিতীয় অভিযান শেরপুর জেলার সদর উপজেলার চরপক্ষিমারী ইউনিয়নে অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচির ৪০ দিনের প্রকল্পে দুর্নীতির সত্যতা পায় দুদক টিম। নন্দীজোড় গাজী মেম্বারের বাড়ী হতে খাসপাড়া কামারপাড়া দেলোয়ারের বাড়ী পর্যন্ত রাস্তা মেরামতের জন্য ৬,৪০,০০০ টাকা বরাদ্দ করা হয়। এতে ৮০ জন উপকারভোগীর কাজ করার কথা থাকলেও মাত্র ১৮ জনকে কাজ দিয়ে বাকি টাকা আত্মসাতের প্রমাণ পায় । এছাড়া আরো চার-পাঁচটি প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে তথ্য-উপাত্ত যাচাই বাছাই কার্যক্রম চলমান রয়েছে।তৃতীয় অভিযান পরিচালিত হয় রাজধানীর উত্তরা বিআরটিএ তে ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদান, ফিটনেস প্রদান, নতুন নম্বর প্লেট গ্রহণ ইত্যাদি সেবা গ্রহণে ঘুষ গ্রহণ এবং গ্রাহক হয়রানির অভিযোগে অভিযান পরিচালনা করে আরেকটি টিম। অভিযানকালে দুদক টিম দেখতে পায় সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে দালালদের দৌরাত্ম্য রয়েছে। এ সময় দুদক টিমের উপস্থিতি বুঝতে পেরে কয়েকজন দালাল দৌড়ে পালিয়ে যায়। কিছু সেবাপ্রার্থী অভিযোগ জানান তাদের কাজ অনেকদিন যাবত পেন্ডিং রয়েছে। দিনের পর দিন ঘুরে তারা তাদের কাজ সমাধা করতে পারছেন না। উচ্চশিক্ষার নিমিত্ত দেশের বাইরে যাওয়ার জন্য তিনজন ছাত্রের ড্রাইভিং লাইসেন্স পেন্ডিং ছিল অনেকদিন ধরে যা দুদক টিমের হস্তক্ষেপে তাৎক্ষণিক সমাধান করা হয়। এছাড়া একজন সেবা প্রার্থী তার ড্রাইভিং লাইসেন্স সংশোধনের জন্য আবেদন করে বেশ কয়েকদিন যাবত ঘুরলেও তার সমস্যার সমাধান করা হচ্ছিল না। দুদক টিমের হস্তক্ষেপে তার ড্রাইভিং লাইসেন্সও তাৎক্ষণিকভাবে সংশোধন করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। এছাড়া এসব অনিয়মের সাথে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়ায় একজন ডাটা এন্ট্রি অপারেটরকে শোকজ করার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। ৪র্থ অভিয়ান টিম ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কারাগারের ক্যান্টিনের খাদ্য দ্রব্যের নির্ধারিত মূল্যের অধিক মূল্য রাখা এবং কাঁচামাল বাইরে বিক্রি করে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে আরেকটি অভিযান পরিচালনা করে দুদক। অভিযানকালে দেখা যায়, কারা ফটকের বাইরে অবস্থিত ক্যান্টিনে মূল্য তালিকা খাতায় যা লেখা হয় বাস্তবে তার থেকে ২০-৪০ টাকা করে বেশি নেওয়া হচ্ছে। এ সম্পর্কে জেল কর্তৃপক্ষকে জানতে চাওয়া হলে তারা ঘটনা আমলে নিয়ে দ্রুত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে মর্মে দুদক টিমকে আশ্বস্ত করে। এছাড়াও ৫ম ও ৬ষ্ঠ অভিয়ান নড়াইল জেলায় ভূয়া সনদের মাধ্যমে শিক্ষক পদে নিয়োগ ও সেটেলমেন্ট অফিসে জমির নকশা, রেকর্ড, পর্চা শ্রেণী পরিবর্তন বাবদ ঘুষ গ্রহণ ও গ্রাহক হয়রানির অভিযোগে নড়াইলে আরও দুটি এনফর্সমেন্ট অভিযান পরিচালিত হয়। এবং দুদক অভিযোগ কেন্দ্র ( টোল ফ্রি হটলাইন – ১০৬) এ আগত অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুর্নীতি প্রতিরোধে ১০ উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে পত্র প্রদান করা হয় । উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের পত্রে
সরকারি খাস জমি দখল, নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন, ধান সংগ্রহ অনিয়ম সহ বিভিন্ন অভিযোগ সুরাহার জন্য ০৫ জেলা প্রশাসককে ও প্রতিবন্ধী ভাতা প্রদানে অনিয়ম, কোচিং বাণিজ্য, পেনশন প্রদানে ঘুষ লেনদেন, টেন্ডার প্রক্রিয়ায় অনিয়মসহ বিভিন্ন দুর্নীতি প্রতিরোধে ১০ উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে
প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহনে পত্র প্রদান করেছে দুদক এনফর্সমেন্ট ইউনিট।