চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃজ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে দায়ের করা দুর্নীতি মামলায় রাজবাড়ি জেলার গোয়ালন্দ থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলামকে ১৪ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। প্রত্যেক মামলায় তাকে সাত বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এর একটি মামলায় তাঁর স্ত্রী জাকিয়া ইসলাম অনুকে দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
আজ বুধবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত ৪ এর বিচারক শেখ নাজমুল আলম এই রায় দেন। রায়ে সাইফুল ইসলামকে সর্বমোট সাড়ে ৬ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানার টাকা দিতে ব্যর্থ হলে আরো দুই বছর ছয় মাস কারাভোগ করতে হবে। জাকিয়াকেও এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। জরিমানা দিতে ব্যর্থ হলে আরো এক বছরের কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে বলে রায়ে বলা হয়েছে।
একই সঙ্গে সাইফুল ইসলাম ও তার স্ত্রীর নামে বেনাবে থাকা সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। দুই মামলায় যে সব সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে তা হলো রাজধানীর গুলশানে একটি ফ্ল্যাট, রামপুরার ৫ কাঠা জমি, নায়ায়নগঞ্জে তিনটি স্থানের এক একর ৭৭ শতাংশ জমি, গুলশানের একটি ব্যাংকে থাকা দুই লাখ ৫০ হাজার টাকা, রামপুরার অ্যাবাকাস থাই ও চাইনিজ রেস্টুরেন্ট, তিনটি সিএনজি স্টেশন ও অন্যান্য সম্পদ।
রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায় ঘোষণার পর সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, সাবেক ওসি সাইফুল ইসলামের দুর্নীতির বিষয়টি দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) জানতে ২০০৯ সালের ৪ আগস্ট সম্পদের হিসাব দিতে নোটিস দেয়। সাইফুল ইসলাম ওই বছরের ৩০ আগস্ট সম্পদের হিসাব দাখিল করেন দুদকে। তার পাঁচ কোটি ২৪ লাখ ২৩ হাজার ৩৫০ টাকার সম্পদ রয়েছে বলে হিসাব দাখিল করেন। পরে দুদক অনুসন্ধান করে তার আরো সম্পদ রয়েছে বলে ২০১০ সালের ২২ জুন ও ২৬ সেপ্টেম্বর রমনা থানায় জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে দুটি মামলা করে।
দুদকের তৎকালীন সহকারী পরিচালক মোজাহার আলী এই দুটি মামলা দায়ের করেন। একটি মামলার অভিযোগ দুই কোটি ৫০ লাখ ৫৭ হাজার ৭৮৬ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও ৩১ লাখ ৪৫ হাজার টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগ মামলা হয়। এই মামলায় সাইফুল ইসলাম ও তার স্ত্রীকে আসামি করা হয়। আরেক মামলায় ২৬ লাখ ৯০ হাজার ৯২৫ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও সাত লাখ ১০ হাজার ১২৫ টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগ আনা হয়। এই মামলায় সাইফুল ইসলাম একা আসামি।
উভয় মামলায় ২০১১ সালের ২০ জানুয়ারি অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। পরে বিচার চলাকালে প্রত্যেক মামলায় ২৩ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দেন।