‘সিন্ধুপারে চলছে হোথায় উলট-পালট কান্ড,
হাড় গুঁড়িয়ে বানিয়ে দিলে নতুন কী ব্রহ্মা-!
ভালোয় মন্দে সুরাসুরের ধাক্কা লাগায় চিত্তে। ’
-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
এই ক্লান্তিকর সময়ে জীবনের তাগিদে মানুষ বেছে নিয়েছে আপন ঠিকানা। মৃত্যুকে পাশ কাটিয়ে বেঁচে থাকার তাগিদে নেমেছে নতুন লড়াইয়ে। কাটিয়ে উঠছে করোনার ভয়।
শুক্রবার গ্রামে গিয়েছিলাম। মসজিদে নামাজে গিয়ে দেখলাম কারও মুখে মাস্ক নেই। হাটবাজারে একই চিত্র। বিকালে গেলাম এক সামাজিক অনুষ্ঠানে। ভিড় আগের মতোই। ভাবখানা এমন- করোনা নামের কোনো কিছু নেই এ বিশ্বে। কোনো দিন ছিল না।
মানুষ কোলাকুলি করছে। হাত মেলাচ্ছে। কাজ করছে যে যার মতো। সবকিছু স্বাভাবিক করার এক নতুন লড়াই। সবাই বুঝতে পারছে দুনিয়া থেকে একদল মানুষ নীরবে বিদায় নেবে। মৃত্যুর হিমশীতল পরশ স্পর্শ করবে। বিদায় বেলায় শেষ কথাগুলো বলা হয়তো হবে না। আরেক দল মানুষ বেঁচে থাকবে কঠিন ইমিউনিটি নিয়ে। এ এক কঠিন নিয়তি। একদিকে শব আরেক দিকে আনন্দযাত্রা কিন্তু শুধু একটি খবরে মুহূর্তের আনন্দেও নেমে আসতে পারে বিষাদের ছায়া। স্বপ্নরা যেতে পারে চিরতরে হারিয়ে। বিষণœতার কালো মেঘের ডানা পেখম মেলবে। বিস্মিত প্রশ্নবিদ্ধ পৃথিবীর আগামী দিনগুলো আরও খারাপ যাবে বলেই মনে হয় আমার। কারণ করোনাকালে মানুষের নেতিবাচক কর্মকান্ড আগের চেয়ে বেড়েছে। হতাশা-বঞ্চনার পরিধিও কমেনি। চলার পথে যা চাই না তা এসে সামনে দাঁড়াচ্ছে। ঈর্ষার অনল, হিংসার দাবদাহ জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে ছারখার করছে অনেক কিছু। বেড়েছে অনেকের ভন্ডামি, নোংরামি। ভয়ঙ্কর আগুনে কেউ কেউ ঢালছে ঘি। কিন্তু ভাবখানা সাধুসন্ন্যাসের মতো। কিছু মানুষ কথা বলে পুরোহিতের মতো। আচরণে দেখায় যিশুখ্রিস্টের আপন ভাই। বেশভূষায় ভাব প্রকাশে মসজিদের ইমাম-মুয়াজ্জিন। কিন্তু বাস্তবে তাদের কাজকর্ম সম্পূর্ণ বিপরীত। তারাই বাড়িয়েছে চারদিকে হানাহানি, সন্ত্রাস, নিষ্ঠুরতা, অন্যায়-অসংগতি। কঠিনতম সত্য- জগতের স্বাভাবিকতা উধাও হচ্ছে। বাড়ছে অস্বাভাবিকতা। চারদিকে অন্ধকারের হাতছানি। অপকর্ম, ঘুষ, দুর্নীতি, লুটপাট মানুষই করছে। জিনভূতেরা আসমান থেকে নেমে কিছু করে না। দুনিয়ার অন্যায়গুলো এ গ্রহের মানুষই করে।
কবিগুরু বলেছেন, ‘দিন চলে যায় গুনগুনিয়ে ঘুম পাড়ানির ছড়া; শান-বাঁধানো ঘাটের ধারে নামছে কাঁখের ঘড়া। ’ সেদিন দেখলাম খিচুড়ি প্রশিক্ষণে বিদেশ যাওয়া নিয়ে এক প্রতিমন্ত্রী সাহেব দারুণ চটেছেন। এক হাত নিলেন সাংবাদিকদের। সাংবাদিকদের যা খুশি বলা যায়। সমস্যা নেই। এ নিয়ে কথা বলার কেউ নেই। প্রতিবাদও কেউ করে না। বরং দলীয় বিভাজনে বিভক্তরা সমালোচনাকারী ক্ষমতাবানদের পক্ষেই অবস্থান নেয়। নিজের পেশার মর্যাদা নিয়ে ভাবনা নেই কারও। ক্ষমতাবানরা ব্যস্ত মেইনস্ট্রিম মিডিয়াকে নিয়ে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রল আর ইউটিউবের লাইভ তাদের চোখে পড়ে না। পড়বে কী করে, অনেক মাননীয় ঢাকা শহরে নতুন। তাই বলছি, মাননীয়রা! ঢাকা শহরটা চিনুন। সবকিছু জানুন। মানুষের মনের চিন্তাকে গুরুত্ব দিন। কাজে লাগবে। সব সহজ হয়ে উঠবে। দাম্ভিকতা সংকটের সমাধান করে না। সর্বনাশ ডেকে আনে। প্রতিষ্ঠান চালাতে কাজটা বুঝতে হয়। একটা ভুল টেনে আনে আরেকটাকে। আর একবার ভুল দিয়ে শুরু হলে তা চলতেই থাকে। বাস্তবতাকে সাময়িক আড়াল করা যায়। দীর্ঘ মেয়াদে নয়। সময় ও পরিস্থিতির মূল্যায়ন করতে হয় সবকিছু দেখে-শুনে। জবাবদিহি না থাকলে অদক্ষরা সর্বনাশ ডেকে আনে। একটা পর্যায়ে সর্বনাশা খেলায় সব তছনছ হয়ে যায়। বাস্তবতা কোনোভাবে এড়ানো যায় না। সমস্যা একটি প্রতিষ্ঠানের নয়। সবখানে একই চিত্র। সতর্ক করাটা খারাপ কিছু নয়। সত্যিকারের বন্ধুরাই সতর্ক করে। অসৎরা করে চাটুকারিতা। আর চাটুকাররা সর্বনাশ ডেকে আনে। জওহরলাল নেহরু আত্মজীবনীতে লিখেছেন, ‘যা জানার তা জানা হয়েছে, যা কিছু করার ছিল তাও করা হয়ে গেছে- এই প্রাচীন ধারণার মতো ভয়ঙ্কর নির্বুদ্ধিতা আর কিছু নেই। ’ তিনি আরও লিখেছেন, ‘আমাদেরকে বুঝতে হবে, উনবিংশ শতাব্দীর ব্যবস্থার দিন চলে গেছে, বর্তমান প্রয়োজন পূরণে তার কোনো সার্থকতা নেই। এক নজির থেকে অন্য নজিরে উপনীত হওয়ার যে আইনজীবীসুলভ মনোবৃত্তি বিদ্যমান, যেখানে অতীতের কোনো নজির নেই, সেখানে তা কোনোই কাজে লাগবে না। লৌহবর্ত্মের ওপর গরুর গাড়ি চাপিয়ে দিয়ে তাকে আমরা রেলগাড়ি বলতে পারি না। বর্তমান যুগে তা অচল বলে বাতিল করতেই হবে। ’
নেহরু সময়ের বাস্তবতার কথাই বলেছেন। আগের যুগের রাজনীতিবিদরা কাজ করতেন মানুষের জন্য। চিন্তা-চেতনায় থাকত মানুষ। জনপ্রতিনিধি হতেন জনকল্যাণে কাজ করার জন্য। ব্যবসা-বাণিজ্য করার জন্য নয়। ডান-বাম ধারার চিন্তা-চেতনায় ফারাক ছিল। কিন্তু সবারই সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য থাকত। মানুষের জন্য কাজ করে কেউ সুবিধা নেওয়ার কথা ভুলেও চিন্তা করতেন না। রাজনীতিকে সেবা মনে করতেন। দিনরাত ২৪ ঘণ্টা হৃদয়ে লালন করতেন মানুষকে। রাজনীতিতে প্রতিযোগিতা ছিল। কিন্তু কেউ কাউকে ধ্বংসের পরিকল্পনা নিতেন না। উন্নয়নের নামে কমিশন ভাগাভাগির লড়াইটা ছিল না। দেশসেবার ব্রত নিয়ে ভালো পরিবারের সন্তানরা রাজনীতিতে আসতেন। রাজনীতি ব্যবসা হতে পারে কস্মিনকালে কেউ তা কল্পনাও করেনি। এখন ঘাটে ঘাটে শুধুই ব্যবসায়ী। রাজনীতিবিদ কোথায়? মণি সিংহ নিজের পূর্বপুরুষদের জমিদারির অর্থবিত্ত ব্যয় করেছেন রাজনীতির জন্য। নিজের বাড়ি দান করেছেন পার্টিকে। প্রয়াত অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ কাকরাইলে থাকতেন। মাঝেমধ্যে যেতাম। বলতেন আদর্শিক রাজনীতির কথা। ধর্ম-কর্ম-সমাজতন্ত্রের থিউরি ছিল তাঁর। বঙ্গবন্ধু গণমানুষের চেতনাকে জাগিয়ে ধীরে ধীরে দেশটা স্বাধীন করেছেন। হঠাৎ করে সব করেছেন মনে করার কারণ নেই। বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনীর প্রতিটি লাইন থেকে শেখার আছে। জানার আছে। কেন রাজনীতি করতেন সে ব্যাখ্যাও তিনি দিয়েছেন কারাগারে থাকতে। একবার খুলনা জেল পরিদর্শনে এসে সিভিল সার্জন মোহাম্মদ হোসেন বঙ্গবন্ধুর কথা জানলেন। তারপর তাঁর অফিসে নিয়ে যেতে বললেন বঙ্গবন্ধুকে। এ ব্যাপারে আত্মজীবনীতে বঙ্গবন্ধু লিখেছেন, ‘আমি যেয়ে দেখি তিনি বসে আছেন। আমাকে বসতে বললেন তার কাছে। আমি বসবার সাথে সাথে জিজ্ঞাসা করলেন, আপনি কেন জেল খাটছেন? আমিও উত্তর দিলাম, ক্ষমতা দখল করার জন্য। তিনি আমার মুখের দিকে অনেকক্ষণ চেয়ে রইলেন। তারপর বললেন, ক্ষমতা দখল করে কী করবেন? বললাম, যদি পারি দেশের জনগণের জন্য কিছু করব। ক্ষমতায় না যেয়ে কি তা করা যায়? তিনি আমাকে বললেন, বহুদিন জেলের সাথে আমার সম্পর্ক রয়েছে। অনেক রাজবন্দীর সাথে আমার সাক্ষাৎ হয়েছে। অনেকের সাথে আলাপ হয়েছে, এভাবে কেউ আমাকে উত্তর দেয় নাই, যেভাবে আপনি উত্তর দিলেন। সকলের ঐ একই কথা, জনগণের উপকারের জন্য জেল খাটছি। দেশের খেদমত করছি, অত্যাচার সহ্য করতে পারছি না বলে প্রতিবাদ করেছি, তাই জেলে এসেছি। কিন্তু আপনি সোজা কথা বললেন, তাই আপনাকে ধন্যবাদ দিলাম। ’
রাজনীতিতে সোজা কথা বলার যুগ শেষ হয়ে গেছে। মানুষের জন্য কিছু করার ক্ষমতার আদর্শ এখন আর নেই। এখন কেউ সমালোচনাও সহ্য করতে পারে না। সব দলে সব মতে একই চিত্র। বাংলাদেশ নিয়ে বলে কী হবে, দুনিয়াটাই যেন বদলে গেছে চোখের সামনে। ভাবতে পারেন আমেরিকানরা ২০০ বছর আগে সংবিধানে বলে গেছে, সংবাদপত্র বন্ধ করা যাবে না। মতপ্রকাশের অবাধ সুযোগ থাকবে। এখন সেই আমেরিকার প্রেসিডেন্ট কী বলছেন তা নাই বললাম। কাজ করতে গেলে অনেক ঝামেলাই পোহাতে হয়। অনেক সময় ভালো কাজ কারও চোখে পড়ে না। এ ব্যাপারে আমেরিকার একটি স্টেটের বাস্তব একটি ঘটনা আছে। ১৮৬৭ সালে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ছিলেন অ্যান্ড্রু জনসন। তাঁর পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন উইলিয়াম এইচ সেওয়ার্ড। তখন আলাস্কা রাজ্যের মালিক রাশিয়া। কিন্তু বরফে ঢাকা এ এলাকায় মানুষ বাস করতে চাইত না। সরকারের জন্য পুরোটাই এক ধরনের লায়বেলেটিস। আর বিশাল দেশ শাসন করায়ও ঝামেলার শেষ ছিল না। রাশিয়ার সার্বিক অর্থনীতিও ভালো ছিল না। ইউরোপ পাত্তা দিত না রাশিয়াকে। এমনকি স্বীকারও করত না রাশিয়া ইউরোপের অংশ। ভাবখানা এমন- গরিবের প্রতি সবারই অবজ্ঞা। সে পরিস্থিতি সামাল দিয়ে দেশ চালাতে গিয়ে রাশিয়া সিদ্ধান্ত নিল আলাস্কা রাজ্যটি বিক্রি করে দেবে। কিন্তু ক্রেতা কে? পাশের দেশ কানাডা তখন ব্রিটিশ কলোনি। ব্রিটিশরা তাদের শাসন ক্ষমতার সুবিধার্থে কানাডার পাশের এ রাজ্য কিনতে আগ্রহ ব্যক্ত করে। আলাস্কা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে এলে কয়েকটি দেশে সরাসরি যেতে সুবিধা ব্রিটিশদের। কিন্তু রাশিয়া ব্রিটিশদের কাছে বিক্রি করতে নারাজ। এর মাঝে এগিয়ে আসেন আমেরিকান পররাষ্ট্রমন্ত্রী উইলিয়াম এইচ সেওয়ার্ড। তিনি জানান আমেরিকার আগ্রহের কথা। রাশিয়া দাম হাঁকল ১০ মিলিয়ন ডলার। ব্রিটিশরাও একটা দাম নিয়ে ঘোরাঘুরি করতে থাকে। আমেরিকা ৭ মিলিয়ন প্রস্তাব দেয়। শেষ পর্যন্ত এ দামে রাজি হলো রাশিয়া। আর আমেরিকা কিনল আলাস্কা। আর এ কেনার পেছনে বড় ভূমিকা পালনকারী মানুষটির নাম পররাষ্ট্রমন্ত্রী উইলিয়াম এইচ সেওয়ার্ড। কিন্তু আলাস্কা কেনায় খুশি হলেন না আমেরিকানদের বড় অংশ। মুহূর্তে আমেরিকাজুড়ে সেওয়ার্ডের ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। ভাগ্যিস সে সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ছিল না। তাই রক্ষা। তার পরও সমালোচনা থামল না। অনেকেই বললেন, সেওয়ার্ড বরফ কিনতে অর্থ ব্যয় করেছেন। কেউ কেউ আলাস্কার নাম দিল ‘সিওয়ার্ড আইসবক্স’। দলের রাজনীতিবিদরাও ছাড়লেন না। আমেরিকান মিডিয়া রাজনীতিবিদদের সঙ্গে সুর মিলিয়ে বলল, দেশের অর্থ এভাবে পানিতে ব্যয় না করলেই ভালো হতো। সমালোচনার বানে সেওয়ার্ড হতভম্ব। কিন্তু প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড্রু জনসন তাঁর পক্ষে অবস্থান নেন। তিনি বললেন, একদিন আমেরিকা স্মরণ করবে সেওয়ার্ডকে। আজ সত্যি তাই হচ্ছে। আমেরিকার কাছে আলাস্কা একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য। আমেরিকার ৪৯তম স্টেট। কারণ ১৯৫৯ সালে আলাস্কা স্টেটের মর্যাদা পায়। মানুষও বসবাস করে। তেল, গ্যাস খনির জন্য এ রাজ্যটি এখন আমেরিকার কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
দুনিয়ার সব দেশে সবখানে কাজ করা মানুষের জীবনের পথপরিক্রমায় নানামুখী কষ্ট থাকে। বাধাবিপত্তি থাকে। হিসাব-নিকাশের খাতাও হয় ভিন্ন। তবু তাদের এগিয়ে যেতে হয়। বাস্তব জীবনে সময় ক্ষণ কাকে কখন কোথায় রাখবে, কী মূল্যায়ন করবে কেউ জানে না। এ জগৎ-সংসারের অনেক রূপ-রহস্য আছে। কিছু মানুষ নিজের প্রয়োজনে দ্রুত বদলায়। ক্ষণে ক্ষণে নিজের স্বার্থে নেয় নতুন রং-রূপ। সরকারি দল, বিরোধী দলের মূল্যায়নেও পরিবর্তন আসে ক্ষণে ক্ষণে। বিরোধী দলের প্রয়োজনীয় মানুষ সরকারি দলে হারিয়ে যায়। শেষ বেলায় অনেক সত্য মিলিয়ে যায় হাওয়ায়। সুবিধাবাদী, মিথ্যুক আর চাটুকাররা দাপুটে হয়। সত্য আড়ালকারীরা হয় সুবিধাভোগী। মিথ্যার বেসাতির জয় হয়। যে যত মিথ্যা বলতে পারে তার অবস্থান তত পোক্ত হয়। বাটপাড়দের হয় জয়জয়কার। নীরবে কষ্ট পেতে হয় খারাপ সময়ের কর্মীদের। এ কষ্ট সামলাতে না পেরে অনেকে নীরবে সবকিছু ছেড়ে চলে যায়। আবার অনেকে ভিতরের অনল নিয়ে কাটিয়ে দেয় একটা জীবন। চাওয়া-পাওয়ার হিসাব আর মেলায় না। অনেকটা বাড়ির পোড় খাওয়া অভিমানী ছেলেটির মতো। হয়তো ভাবনায় থাকে ঘড়ির কাঁটায় বেলা শেষ হয়ে যাবে। পথের ক্লান্তি শেষে ঘুমপাড়ানি চলে আসবে। সবকিছু অনেকটা লতার সেই গানের মতো। অসাধারণ দরদি গলায় লতা গেয়েছেন, ‘চলে যেতে যেতে দিন বলে যায়, আঁধারের শেষে ভোর হবে, হয়তো পাখির গানে গানে, তবু কেন মন উদাস হলো… হয়তোবা সব আলো মুছে যাবে, হয়তোবা থাকবে না সাথে কেউ, হয়তো মাঝপথে পথটাও ফুরিয়ে যাবে… চোখের জলের কথা শুনবে না কেউ, ভোরের আলোর কথা ভেবে, স্বপ্ন দিয়ে সাজাতে সাজাতে রাত পার হয়ে যাবে, হয়তোবা কান্নারও শেষ আছে…। ’
লেখক : সম্পাদক, বাংলাদেশ প্রতিদিন।