চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃ বিশ্বে বাংলাদেশ এখন শুধু উন্নয়নের রোল মডেল নয়, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায়ও রোল মডেল। বাংলাদেশ দুর্যোগের দেশ। দুর্যোগের সঙ্গেই বসবাস করতে হবে। কিন্তু মানুষের যাতে ক্ষতি কম হয়, মানুষ যাতে বাঁচে সেদিকে আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে।আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস উপলক্ষে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী দুর্যোগ মোকাবিলায় দেশের ১৪টি জেলায় ১০০টি আশ্রয়কেন্দ্র এবং ৬৪টি জেলায় ১১ হাজার ৬ শ ৪টি দুর্যোগ সহনীয় বাড়ির উদ্বোধন করেন।
এসময় দেশের উপকূলীয় এলাকায় সবুজ বেষ্টনী গড়ে তুলতে বৃক্ষ রূপণের নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকতে যে বিশাল ঝাউবন। এই ঝাউবনটি কিন্তু জাতির পিতার নির্দেশে তৈরি করা হয়েছিল। ঠিক এভাবে উপকূল অঞ্চলে জলোচ্ছ্বাস মোকাবেলা করার জন্য বৃক্ষ রূপণ করা হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ একটি ব-দ্বিপ। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে যে ক্ষতি হচ্ছে তা মোকাবেলায় আমরা দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নিয়েছি। আমাদের শিশু কিশোরদের ভবিষ্যৎ সুন্দর করতে আমাদের সরকার কাজ করছে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘১৯৯১ সালে যে ঘূর্ণিঝড় হয়েছিল সেসময় যারা সরকারে ছিল তারা বলতে গেলে এর খবরই জানত না। যেহেতু আমাদের সংগঠন সারা বাংলাদেশে সক্রিয় সেদিন আমি খুব ভোররাতে টেলিফোন পাই যে ঘূর্ণিঝড়ে মানুষের ক্ষতি হয়েছে। শুধু মানুষ না বিমানবাহীনির প্লেন, হেলিকপ্টার, নৌবাহিনীর জাহাজ পর্যন্ত ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। এবং পুরো উপকূলীয় অঞ্চল ব্যাপক ক্ষতি সম্মুখীন হয়। চট্টগ্রামেই সবচেয়ে বেশি।’
তৎকালীন সরকারের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ বিষয়ে তখনকার সরকার একেবারেই নীরব ছিল। আমি তখন বিরোধীদলে। তখন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন খালেদা জিয়া। এ বিষয়টা যখন আমি পার্লামেন্টে তুললাম তিনি সংসদে বললেন, যত মানুষ মরার কথা তত মানুষ মরে নাই। আমি তখন জিজ্ঞেস করতে বাধ্য হয়েছিলাম, কত মানুষ মরলে আপনার তত মানুষ হবে আপনি জবাব দেন। অর্থাৎ একটি সরকার সতর্ক না থাকলে দেশের ক্ষতি হয়।’
এসময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘৯৭ সালে একটি ঘূর্ণিঝড় হয়েছিলো। তখন আমরা সরকারে। আমি সেদিন স্পেনে যাওয়ার কথা ছিলো কিন্তু খবর পেয়ে আমি সেটা ক্যানসেল করি।’
প্রতিবছর ১৩ অক্টোবর আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস হিসেবে পালন করা হয়। এ উপলক্ষে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠানটিতে আরও উপস্থিত ছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মোঃ. এনামুর রহমান, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবিএম তাজুল ইসলামসহ অন্যান্যরা।