কোভিড পরবর্তীতে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের মধ্যে ২০২১ সালে দেশে দারিদ্র্যের হার দাঁড়িয়েছে ২৫ শতাংশ। পাঁচ বছর আগে ২০১৬ সালেও দারিদ্র্যের হার ২৫ শতাংশ ছিল। বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) মহাপরিচালক (ডিজি) ড. বিনায়ক সেন এ তথ্য জানান।
বৃহস্পতিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বিআইডিএস প্রকাশিত ‘এক্সট্রিম প্রভার্টি: দ্য চ্যালেঞ্জেস অব ইনক্লুশন ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানান তিনি। অনুষ্ঠানে প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন বিআইডিএস’র সিনিয়র রিসার্চ ফেলো জুলফিকার আলী ও বদরুন নেসা আহমেদ।
বিনায়ক সেন বলেন, ‘২০১৬ সালে দারিদ্র্যের হার যা ছিল, ২০২১ এর জানুয়ারিতেও একই আছে। ২০১৬ সালে দারিদ্র্যের হার কমেছিল। কিন্তু করোনা মহামারির ফলে এটা বেড়ে গিয়েছিল।’
প্রতিবেদনে মূলত অতিদরিদ্র জনগোষ্ঠীর জেলা কুড়িগ্রামের সঙ্গে দারিদ্র্যের হার, রোগ-ব্যাধি সংক্রমণের হার এবং ভূমিহীনদের তুলনামূলক বিশ্লেষণ করা হয়েছে।
শেরেবাংলা নগরস্থ পরিকল্পনা কমিশনের এনইসি সম্মেলন কেন্দ্র আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উত্তরাঞ্চলের জেলা কুড়িগ্রামের অর্ধেকের বেশি মানুষ রোগাক্রান্ত। এ জেলার ৫৪ শতাংশ মানুষ অতিদরিদ্র। চরম দারিদ্র্যতায় বসবাস করে কুড়িগ্রামের ৫৩ দশমিক ৯ শতাংশ মানুষ। এ জেলায় রোগ-ব্যাধিতে ভোগা মানুষও বেশি। রোগ নিয়ে ঘুরছেন কুড়িগ্রামের প্রায় ৫৭ শতাংশ মানুষ। কুড়িগ্রামের শতকরা ১৬ দশমিক ৭০ শতাংশ পরিবারের প্রধান নারী। সেখানে ভূমিহীন অবস্থায় রয়েছেন ৬০ শতাংশ। দিনমজুর হিসেবে জীবনযাপন করছেন ৩৭ দশমিক ২ শতাংশ বাসিন্দা। তবে জাতীয়ভাবে নারীপ্রধান পরিবার ১২ দশমিক ৫০ শতাংশ, ভূমিহীন ৮ শতাংশ।
প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, নারায়ণগঞ্জে অতিদরিদ্রের হার শূন্য শতাংশ। এছাড়া মাদারীপুরে শূন্য দশমিক ৯ শতাংশ, মুন্সীগঞ্জে এক দশমিক ২ শতাংশ, ঢাকায় এক দশমিক ৭ শতাংশ, গাজীপুরে এক দশমিক ৯ শতাংশ।
দেশের মোট জনসংখ্যা ১৭ কোটি ধরে গবেষণাটি করা হয়েছে। বর্তমানে মোট জনসংখ্যার মধ্যে এক কোটি ৭০ লাখ মানুষ অতিদরিদ্র। দেশের পূর্বাঞ্চলীয় জেলাগুলো উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলের তুলনায় ভালো অবস্থানে আছে বলেও প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, অতিদরিদ্রের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে বান্দরবান। সেখানে ৫০ দশমিক ৩ শতাংশ মানুষ অতিদরিদ্র। এছাড়া অতিদরিদ্র দিনাজপুরে ৪৫ শতাংশ, মাগুরায় ৩৭ দশমিক ৭ শতাংশ, জামালপুরে ৩৫ দশমিক ৫ শতাংশ।
অনুষ্ঠানে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম ও হোসেন জিল্লুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পরিকল্পনা কমিশনের আর্থসামাজিক অবকাঠামো বিভাগের সদস্য মোসাম্মৎ নাসিমা বেগম।