বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে এক তরুণীকে একাধিক বার ধর্ষণ করার অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আবুল বাশার নামে এক ধর্ষককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে ধর্ষণের কারণে জন্ম নেওয়া শিশুটি আসামির পরিচয়ে বড় করার আদেশ দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (২৫ জানুয়ারি) দুপুরে বরগুনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. হাফিজুর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আবুল বাশার (২৫) বরগুনা সদর উপজেলার আয়লাপাতাকাটা ইউনিয়নের বধুঠাকুরানী গ্রামের আবদুল হালিম মিয়ার ছেলে। রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
জানা যায়, মামলার বাদী ও ভিকটিম ওই আদালতে ২০০৯ সালের ৩ নভেম্বর আসামি আবুল বাশারের বিরুদ্ধে মামলা করেন, ২০০৯ সালের ২৫ আগস্ট থেকে ১ নভেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন সময় আবুল বাশার তাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ করেছে। ধর্ষণের ফলে ভিকটিম অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। এসময় বাশার ভিকটিমকে বিয়ে করতে রাজি না হলে তিনি আদালতে মামলা করেন। মামলা চলাকালীন ভিকটিম ছেলে সন্তানের মা হন।
আদালত রায়ে উল্লেখ করেন, ধর্ষণের ফলে ১০ বছর আগে ভিকটিমের একটি পুত্র সন্তান জন্ম নেয়। সিয়াম নামের ছেলেটি এখন পঞ্চম শ্রেণিতে পড়াশোনা করছে। সন্তানটি বাশারের পরিচয়ে বড় হবে। দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ড রাষ্ট্র আদায় করে ভিকটিমকে দেওয়া হবে। এছাড়া শিশুটির লেখাপড়া ও ভরণপোষণের দায়িত্ব সরকার বহন করবে। রায় ঘোষণার সময় বাদী তার শিশু সন্তান নিয়ে আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
রাষ্ট্রপক্ষে এপিপি আশ্রাফুল আলম বলেন, বাদীপক্ষ রায়ে সন্তুষ্ট। বাদী বলেন, আসামি বাশার আমাকে বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে অসংখ্যবার ধর্ষণ করেছে, কিন্তু বিয়ে করেনি। আমার ছেলেকে স্কুলে ভর্তির সময় তার বাবার নাম ঠিকই আবুল বাশার দেওয়া হয়েছে। আমি এখন পর্যন্ত বিয়ে করিনি।
আসামি আবুল বাশার আদালতের বারান্দায় বলেন, এই রায়ের বিরুদ্ধে আমি হাইকোর্টে আপিল করব। আসামিপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন, আইনজীবী মো. নিজাম উদ্দিন।