পঞ্চগড়ের আটোয়ারীতে ধর্ষণ মামলার আপোসের কথা শুনে বিষ পান করে আত্নহত্যার চেষ্টা করেছেন এক শিক্ষার্থী। বর্তমানে এই শিক্ষার্থী আটোয়ারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আছে।
রবিবার (১৩ ডিসেম্বর) রাতে ওই শিক্ষার্থী বাড়িতে রাখা মরিচের আবাদে ব্যবহৃত তরল কিটনাশক খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। পরে তার চিৎকারে বাবা মা সহ প্রতিবেশিরা এসে তাকে উদ্ধার করে দ্রুত আটোয়ারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
এ ঘনায় সোমবার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেলে ২ জনের নাম উল্লেখ্য করে অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেছে ওই ছাত্রীর বাবা।
জানা যায়, চলতি বছরের গত ১১ সেপ্টেম্বর দশম শ্রেণির ওই শিক্ষার্থী তার বাড়ি থেকে নানার বাড়িতে বেড়াতে গেলে এসময় এ্যাডভোকেট হাবিবুর রহমান হাবিব নামে এক আইনজীবি ওই স্কুল শিক্ষার্থী কৌশলে ধর্ষণ করে।
এসময় স্কুল শিক্ষার্থী চিৎকার করলে সাথে সাথে স্থানীয়রা দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে স্কুল শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করে এবং ধর্ষক হাবিবুর রহমান হাবিবকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে। সেদিন রাতে ওই শিক্ষার্থীর বাবা আটোয়ারী থানায় বাদি হয়ে এ্যাডভোকেট হাবিবুর রহমানকে প্রধান আসামী করে তিনজনের নামে একটি ধর্ষণ ও অপহরণ মামলা দায়ের করে। বর্তমানে মামলার প্রধান আসামী হাবিবুর রহমান জেলহাজতে রয়েছে।
ওই শিক্ষার্থীর বাবা মায়ের অভিযোগ, মামলা চলাকালীন অবস্থায় উপজেলা পুজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি ও স্থানীয় সাংবাদিক মনোজ রায় ও আলোয়া খোয়া ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রতন বিলাশ বর্মন মামলা আপোসের জন্য গত প্রায় দুই মাস ধরে বিভিন্নভাবে প্রলোভন দেখিয়ে আসছেন। কয়েকদিন আগে মনোজ রায় ও ইউপি সদস্য রতন মিমাংসার কাগজ তৈরী করে বাড়িতে নিয়ে আসেন এবং ওই কাগজে স্বাক্ষর করার জন্য পরিবারের সদস্যদেরকে চাপ দিতে থাকেন। আপোষ মিমাংসার কথা জানতে পারলে মেয়ে অসম্মতি জানায়। পরে তাকে মানষিক চাপ সৃষ্টি করা হলে নিরুপায় হয়ে বিষ পান করে আত্নহত্যার চেষ্টা করে সে।
শিক্ষার্থীর বাবা আরো জানান, আমার মেয়েকে নায্য বিচার থেকে বঞ্চিত করে সাংবাদিক মনোজ ও রতন মেম্বারসহ যারা মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছেন তাদের আমি দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি চাই।
তবে এ বিষয়ে অভিযুক্ত সাংবাদিক মনোজ রায় ও রতন মেম্বারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তাদের পাওয়া যায়নি।
আটোয়ারী উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা: হুমায়ুন কবির জানান, রোগী বর্তমানে পর্যবেক্ষণে রয়েছে। ৭২ ঘন্টার আগে এ বিষয়ে কিছু বলা যাচ্ছেনা।
রাতে আটোয়ারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইজার উদ্দীন জানান, শিক্ষার্থীর বাবা আটোয়ারী থানায় ২ জনের নাম উল্লেখ্য করে এবং অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেছে। তাদের আটক করার চেষ্টা চলছে।