নিজস্ব প্রতিবেদকঃখুলনার বুক চিড়ে বয়ে যাওয়া কেডিএ এভিনিউ সড়কের ড্রেন নির্মাণ কাজের ধীরগতির কারণে চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে নগরবাসীকে। নগরীর অতি গুরুত্বপূর্ণ প্রায় দুই কিলোমিটার রাস্তার প্রায় দুইপাশই দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় প্রতিদিনই সৃষ্টি হচ্ছে অসহনীয় যানজট। রাস্তার দুই পাশের ড্রেনের ময়লা ঠিক মত অপসারণ না হওয়ায় বৃষ্টিতে কাঁদাপানিতে নাকাল হতে হচ্ছে চলাচলকারীদের। যানজট নিরসনে ভূমিকা নেই ট্রাফিক বিভাগের এমন অভিযোগ করেছেন নগরবাসী।
সরেজমিনে দেখা গেছে, মহানগরীর ড্রেন নির্মাণের জন্য কেডিএ এভিনিউয়ের রাস্তার দু’পাশে খোঁড়াখুঁড়ি ও ফুটপাত ভেঙে ফেলায় দুর্ভোগে পড়েছেন এ সড়ক দিয়ে চলাচলকারীরা। একদিকে ড্রেনের পুননির্মাণ কাজ মন্থরগতিতে চলছে, অপরদিকে রাস্তার উপরে নির্মাণ সামগ্রী ফেলে রাখায় ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন যাত্রীরা। ড্রেন নির্মাণের জন্য মূল সড়কে যান চলাচলেও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে।
নগরীর অন্যতম প্রধান এ সড়কে প্রতিদিন হাজারো মানুষ চলাচল করেন। নিত্য দিনই ঘটছে ছোট বড় দুর্ঘটনা। নির্মাণ কাজের ধীরগতি ও ট্রাফিক ব্যবস্থা সচল না থাকার কারণে এমনটি ঘটছে বলছেন ভুক্তভোগীরা। অভিযোগ রয়েছে, গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কের ময়লা পোতা ও শিববাড়ি মোড়ে ট্রাফিক থাকলেও দিনে ট্রাফিক আইন লঙ্ঘন করে ডুকছে বাস, ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যানের মতো ভারি যানবাহন। প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। ট্রাফিক বিভাগের সার্জেন্টসহ কনস্টেবলরা দায়িত্বে থাকার পর কীভাবে নগরীতে দিনে এ সড়ক দিয়ে ভারি যানবাহন চলাচল করছে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকে।
নগরীর এ সড়কের জীবন বিমা ভবনের পেছনের বাসিন্দা আরিফুর রহমান, সজল বিশ্বাস, তাসলিমা আকতার বলেন, করোনা ভাইরাস শুরু হওয়ার আগ থেকেই রাস্তার একপাশ বন্ধ রয়েছে। যে কারণে সড়কের একপাশ দিয়ে যানবাহন চলছে। এতে যানজট প্রতিদিন লেগে রয়েছে। যান চলাচলের উপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ায় সম্প্রতি এ সড়কে সকাল- সন্ধ্যা এমনকি রাতেও যানজটের সৃষ্টি হয়।
খুলনার কেডিএ এভিনিউ সড়কে অসনীয় যানজট। নিয়ন্ত্রণহীন ইজিবাইকের চাপ এ সড়কের যানজট আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। এতে ভোগান্তির শেষ নেই নগরবাসীর। এজন্য সিটি করপোরেশনসহ সেবামূলক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সমন্বয়হীনতকেই দায়ী করেছেন নাগরিক সমাজ।
এম রহমান নামের এক যাত্রী বলেন, করোনা কালে এভাবে যদি সড়কে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকতে হয় তাহলে বিপদের আশঙ্কা রয়েছে। এ সড়কে যানজট নিরসনে ট্রাফিক বিভাগের কোনো ভূমিকা নেই। শুধু মাত্র নগরের ময়লাপোতা ও শিববাড়ির মোড়ে ট্রাফিক রয়েছে। যারা দায় সাড়া দায়িত্ব পালন করছেন। যে কারণে দিনের বেলায়ও পরিবহন ঢুকছে।
জানা যায়, খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) ও বাংলাদেশ মিউনিসিপ্যাল ডেভেলপমেন্ট ফান্ড (বিএমডিএফ) এর অর্থায়নে মহানগরীর কেডিএ এভিনিউ এবং আবু আহমেদ সড়ক, ড্রেন ও ফুটপাত পুননির্মাণের জন্য ২০১৯ সাল থেকে পুরাতন ড্রেন ও ফুটপাত ভাঙার কাজ শুরু হয়। দীর্ঘ সময় পার হলেও মহানগরীর শিববাড়ী মোড় থেকে রয়্যালের মোড় পর্যন্ত নতুন ড্রেন নির্মাণকাজ চলছে মন্থর গতিতে। পুরো রাস্তার ফুটপাত ভেঙে ফেলায় জনদুর্ভোগ চরমে উঠেছে। ভাঙা ফুটপাত ও ড্রেনের ওপর দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ কাঠের সিঁড়ি ব্যবহার করে চলাচল করছে সাধারণ মানুষ। কেডিএর রাস্তার পাশের সব বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ (কেএমপি) ডিসি ট্রাফিক রিয়াজ উদ্দিন বলেন, আমি খুলনায় আসার পর সাত মাস ধরে দেখছি কেডিএ এভিনিউ সড়কে ড্রেনের কাজ চলছে। যে কারণে সড়কের এক পাশ বন্ধ রাখা হচ্ছে। আর এতে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। যানজট নিরসনে এ সড়কের বিভিন্ন মোড়ে ট্রাফিক ব্যবস্থা নেই কেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ট্রাফিক বিভাগে জনবল সঙ্কটের কারণে সব জায়গায় লোক দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।