খুলনার টুটপাড়া এলাকায় ন্যাশনাল হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারটি চিকিৎসক ছাড়াই রোগীদের সেবা দিচ্ছেন। হাসপাতালের রেজিস্ট্রার্ড চিকিৎসকরা কয়েকদিন পূর্বে পদত্যাগ করে চলে যওয়ায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। না বুঝে হাসপাতালটিতে আসা রোগি ও তাদের স্বজনরা বুঝতেই পারছেন না তারা কি ধরনের চিকিৎসাসেবা পাবেন। গতকাল বৃহস্পতিবার ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে হসপিটালটির এ সকল চিত্র সামনে এসেছে। জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ ইমরান খানের নেতৃত্বে এ অভিযান চালানো হয়। এ সময় নানা অব্যবস্থাপনার কারনে হাসপাতালের নির্বাহী পরিচালক মোঃ মনিরুল ইসলামকে ৩ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ ইমরান খান জানান, ভ্রাম্যমাণ আদালত চলাকালে হসপিটালটিতে কোন চিকিৎসক পাওয়া যায়নি। চিকিৎসাসেবায় অব্যবস্থাপনা ও অবহেলার কারনে রোগীর মৃত্যুর অভিযোগেরও প্রমাণ পাওয়া গেছে। তাদের নিজস্ব ফার্মেসীতে থেকে মেয়াদ উত্তীর্ন ওষুধ ও অপারেশন কক্ষে অবৈধ প্যাথেডিন জব্দ করা হয়। এছাড়া পোস্ট অপারেটিভ কক্ষে প্রয়োজনীয় কোন যন্ত্রপাতি ছিলো না।
অভিযানে হাসপাতালটির ৬ জন মালিকের নাম পাওয়া যায়, এরা হলেন মামুনার রশিদ, ফারহানা ইসলাম, ডাঃ দিপংকর নাগ, ডাঃ বঙ্গ কমল বসু, নিমাই চন্দ্র রায়। হাসপাতালটির পরিচালক মামুনুর রশিদ জানায়, এখানে রেজিস্ট্রার্ড যে সকল চিকিৎসক ছিলেন কয়েকদিন আগে তারা পদত্যাগ (রিজাইন) দিয়ে চলে গেছেন। নতুন করে চিকিৎসক নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে।
ড্রাগসুপার মোঃ আব্দুর রশিদ জানান, হাসপাতালের ফার্মেসী থেকে মেয়াদ উত্তীর্ন ওষুদসহ অননুমোদিত ওষুধ পাওয়া গেছে। একারনে তাদের বিরুদ্ধে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ড্রাগ এ্যাক্ট অনুযায়ী ব্যবস্থা নিয়েছেন।
তবে নতুন কোন চিকিৎসক নিয়োগ না করলেও চিকিৎসাসেবা চলছে পুরো দমে। এছাড়া অনুমোদনহীন শয্যা তৈরি করে হসপিটালটিতে রোগি ভর্তি রাখা হচ্ছে। গ্রামাঞ্চল থেকে চিকিৎসার জন্য ছুটে আসা অসহায় মানুষকে ভুল বুঝিয়ে এক শ্রেণীর দালাল এসকল নিম্নমানের হাসপাতালে নিয়ে আসে। পরবর্তীতে সর্বস্ব হারিয়ে অনেকে মৃত্যুর কোলেও ঢলে পড়ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
অভিযানে র্যাব-৬’র স্পেশাল কমান্ডার মেজর শামীম সরকার, ড্রাগসুপার মোঃ আব্দুর রশিদসহ সিভিল সার্জন কার্যালয়ের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য গত ২৪ জুন অপারেশনের পর চিকিৎসক ও ব্যবস্থাপনা অবহেলায় সালেহা বেগম (৬৫) নামে একজনের মৃত্যুর অভিযোগ উঠে। ওই ঘটনা নিয়ে রোগীর স্বজনরা হাসপাতালের সামনে বিক্ষোভ শুরু করলে সদর থানা পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন।