বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪৪ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করেছে। আজ (বুধবার) দিন শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪৪ দশমিক শূন্য দুই বিলিয়ন ডলার, যা অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এই তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। এর আগে গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪৩ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছিল।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স এই রেকর্ড গড়তে বড় ভূমিকা রেখেছে। ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ২৩ দিনে প্রবাসীরা রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন ১৪৯ কোটি ডলার। গত বছরের একই সময়ে রেমিট্যান্স এসেছিল ১২৪ কোটি মার্কিন ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, মূলত প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের ওপর ভর করেই রিজার্ভ নতুন এ উচ্চতায় উঠেছে। তিনি বলেন, বর্তমানের রিজার্ভ দিয়ে প্রতি মাসে চার বিলিয়ন ডলার হিসাবে প্রায় সাড়ে ১০ মাসের বেশি সময়ের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব।
তবে রপ্তানি আয়ের ইতিবাচক ধারা এবং বিদেশি ঋণ-সহায়তা বৃদ্ধিও রিজার্ভ বৃদ্ধিতে ভূমিকা রেখেছে বলে মনে করছেন অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. জায়েদ বখত। তিনি বলেন, একদিকে প্রবাসীরা বেশি বেশি রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন। অন্যদিকে বিদেশি ঋণ-সহায়তাও সরকার পাচ্ছে। তার মতে, রিজার্ভ মহামারি মোকাবিলায় সরকারকে সাহস জোগাচ্ছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, ৩০ ডিসেম্বর রিজার্ভ ৪৩ বিলিয়ন ছাড়ায়। এর আগে গত ১৫ ডিসেম্বর এই রিজার্ভ ৪২ বিলিয়ন ডলার ছাড়ায়। গত এক বছরে রিজার্ভ বেড়েছে ১২ বিলিয়ন ডলারের বেশি। ২০২০ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি রিজার্ভে ছিল ৩২ দশমিক ৬০ বিলিয়ন ডলার।
প্রসঙ্গত, গত কয়েক বছর ধরেই রিজার্ভ ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে। ১০ বছর আগে ২০০৯-১০ অর্থবছরের জুন শেষে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ১০ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন ডলার। ২০১৩-১৪ অর্থবছর শেষে সেই রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ডলার ছাড়ায়।
৩০ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করে ২০১৯ সালের অক্টোবরে। ২০২০ সালের ৩০ জুন সেই রিজার্ভ বেড়ে ৩৬ বিলিয়ন ডলারে ওঠে। অক্টোবরের ৮ তারিখে ছাড়ায় ৪০ বিলিয়ন ডলার।
মহামারির মধ্যেই চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে দুই দশমিক ছয় বিলিয়ন ডলারের রেমিটেন্স এসেছিল দেশে, যা এ যাবতকালের সর্বোচ্চ।