গত কয়েকদিন ধরেই চড়া দামে বিক্রি হওয়া চালের দাম কমতে শুরু করেছে। নতুন চাল বাজারে আসতে শুরু করায় মোটা ও মাঝারি মানের নতুন চালের দাম কেজিপ্রতি দুই থেকে পাঁচ টাকা কমছে। তবে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে পুরাতন নাজির ও মিনিটেসহ ভালো মানের চাল।
চালের মিলের মালিকরা বলছেন, এখনও পুরোদমে ধান টাকা শুরু হয়নি। ফলে বেশি দামেই কেনা ধানের চাল বাজারে বিক্রি হচ্ছে, তাই দাম এখনও কিছুটা বেশি।
পুরাতন চাল বেশি দামেই কিনতে হয় বিধায় আগের দামেই বিক্রি করছেন বলে জানিয়েছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, দেশে বোরো ধান কাটা শুরু হয়েছে। নতুন ধানের চালও বাজারে আসতে শুরু করেছে। এ কারণে নতুন চালের দাম কমছে। আরও কমতে পারে বলে জানান তারা।
তবে পুরাতন চালের দাম না কমায় ক্রেতারা ক্ষুব্ধ। তারা বলছেন, ধানের দামের তুলনায় এখনও চালের দাম অনেক বেশি। বাজার মনিটরিংয়ের মাধ্যমে চালের দাম যৌক্তিক মূল্যে আনা উচিৎ।
আজ শুক্রবার (৭ মে) রাজধানীর বাড্ডা, রামপুরা ও মালিবাগ এলাকায় দেখা গেছে, পুরাতন ভালো মানের মিনিকেট ও নাজিরশাইল চাল বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৬৪-৬৫ টাকায়। তবে নতুন মিনিকেট ও নাজির বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৬০ টাকায়। অর্থাৎ, পুরাতন চালের দামের তুলনায় নতুন চাল কেজি প্রতি পাঁচ টাকা কম। মধ্যমানের মিনিটে চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকা কেজিতে আর হাসকি নাজির বিক্রি হচ্ছে ৫২ টাকা কেজি দরে।
দীর্ঘদিন ধরে ৫৪-৫৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হওয়া লতা বা ২৮ নম্বর চাল বিক্রি হচ্ছে ৫২ টাকা কেজিতে। কেজিপ্রতি ২ টাকা কমে ৫০ টাকার মোটা স্বর্ণা চাল ৪৭ থেকে ৪৮ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। ৫২ থেকে ৫৪ টাকা বিক্রি হওয়া পাইজম চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৯-৫০ টাকা কেজি দরে। অর্থাৎ, এই জাতের চালও কেজিপ্রতি দু টাকা কমেছে।
এছাড়াও বাজারগুলোতে ভালোমানের কাটারিভোগ চাল বিক্রি হচ্ছে ৯৫-১০০ টাকা, মধ্যমানের কাটারিভোগের চাল বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা কেজি। সিদ্ধকাটারি চাল বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকা কেজিতে। টেপু শাইল বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকা কেজিতে। চিনি গুড়া পোলাও চাল ১০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। আর চিনিগুড়া ক্ষুদ বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজিতে। বাসমতি চাল বিক্রি হচ্ছে ৭৫-৮০ টাকা কেজিতে।
বাড্ডা পাঁচতলা বাজারে চাল ব্যবসায়ী মজিব উদ্দিন এই প্রতিবেদককে বলেন, নতুন চাল বাজারে আসতে শুরু করেছে। এ কারণে চালের দাম কমতে শুরু করেছে। তিনি বলেন, স্বর্ণা,পাইজাম এবং ২৮ নম্বর চাল কেজিপ্রতি কমেছে ২ টাকা। আর তিন জাতের নতুন চাল কেজিপ্রতি কমেছে ৩-৪ টাকা।
রামপুরা রওশন ট্রেডার্সের মালিক মুন্না হাওলাদার বলেন, পুরাতন মিনিকেট এক বস্তা চাল আমরা বিক্রি করি ৩ হাজার থেকে ৩১শ টাকা। আর খুচরা বাজারে বিক্রি করে ৩ হাজার ২০০ টাকা। নতুন মিনিকেট চাল পাইকারি বিক্রি করি ২৮শ টাকা বস্তা।
মধ্যবাড্ডার মা-বাবা মেসার্স এন্টারপ্রাইজের কর্ণধার জুনায়েদ আহমেদ শামিম বলেন, মিলে নতুন ধান থেকে চাল তৈরি শুরু করেছে। কয়েকদিন ধরে সেই চাল বাজারে আসছে। ফলে নতুন চালের দাম কমেছে। তবে পুরাতন চালের দাম খুব বেশি কমেনি।
পশ্চিম রামপুরা কাঁচাবাজারে চালের দোকানদাররা জানান, নতুন চাল কেজিপ্রতি ২ থেকে ৫ টাকা কমেছে। এখন তো ধানের সিজন, আস্তে আস্তে চালের দাম কমবে।
বাংলাদেশ রাইস মিলস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতা নজরুল ইসলাম বাবু এই প্রতিবেদককে বলেন, দেশের চাহিদার তুলনায় চাল কম ছিল বলেই দাম বেড়েছে। এখনও পুরাতন চাল সেই দামেই বিক্রি হচ্ছে, আমাদের করার কিছুই নেই। নতুন চাল আসতে শুরু করেছে। এমনিতেই চালের দাম কমে যাবে বলে জানান তিনি।