সব কিছু
facebook channelkhulna.tv
খুলনা বুধবার , ১৯শে চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২রা এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
নাটকীয়তার পর কপ-২৬ জলবায়ু চুক্তিতে সম্মত দেশগুলো | চ্যানেল খুলনা

নাটকীয়তার পর কপ-২৬ জলবায়ু চুক্তিতে সম্মত দেশগুলো

বৈশ্বিক তাপমাত্রা ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার আশা দেখিয়ে শেষ হয়েছে জাতিসংঘের বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন ‘কপ-২৬’।
স্কটল্যান্ডের রাজধানী গ্লাসগোতে অনুষ্ঠিত দুই সপ্তাহব্যাপী এই আলোচনায় অংশ নেয় ২০০টিরও বেশি দেশ, এনজিওসহ বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা।

সম্মেলনটির চেয়ারম্যান অলোক শর্মা জানিয়েছেন, গ্লাসগোতে উপস্থিত প্রায় ২০০টি জাতীয় প্রতিনিধিদলের কেউই বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে কয়লা, তেল ও গ্যাসের মতো জীবাশ্ম জ্বালানির অতিরিক্ত ব্যবহারের কুফল নিয়ে দ্বিমত পোষণ করেননি।
দু’সপ্তাহের এই সম্মেলন আলোচনার স্বার্থে আরও একদিন বাড়ানো হয়েছিল। সম্মেলনের শুরুতেই জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমানোর প্রতি গুরুত্ব দেওয়া হয়। কারণ এই জ্বালানি বিশ্বের প্রায় সব উন্নয়নশীল দেশের শক্তি উৎপাদনের প্রধান উৎস হলেও, এটি বৈশ্বিক উষ্ণায়নের প্রধান কারণ হিসেবে কাজ করছে।
তবে, কপ-২৬ জলবায়ু চুক্তিতে জীবাশ্ম জ্বলানির ব্যবহার বন্ধ সংক্রান্ত ধারায় আপত্তি তোলে ভারত। ভারতের আপত্তির সঙ্গে চীনসহ কয়লা নির্ভর দেশগুলোও একাত্মতা জানায়। আর এই আপত্তির কারণে সম্মেলনের শেষ মুহুর্তে কয়লার ব্যবহার ‘বন্ধের’ পরিবর্তে চুক্তিতে লেখা হয়েছে কয়লার ব্যবহার ‘কমানো’ হবে।
চুক্তির ভাষা অনুযায়ী, ‘ফেজ আউট’ এর পরিবর্তে কয়লা শক্তি ‘ফেজ ডাউন’ করার জন্য দেশগুলোকে তাদের প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করতে হবে, এমন নির্দেশনা দিয়ে ধারাটি দ্রুত সংশোধন করা হয়।
ভারতের পরিবেশ ও জলবায়ু মন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদব বলেন, ‘উদীয়মান অর্থনৈতিক পরিস্থিতির জন্য’ এই সংশোধন জরুরি ছিল।
তিনি বলেন, “আমরা উন্নয়নশীল দেশগুলোর অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনার সঙ্গে সঙ্গে জলবায়ু ক্ষেত্রেও যুক্তিসঙ্গত ঐক্যমতে পৌঁছানোর চেষ্টা করেছি।”
তিনি আরও বলেন, “ঐতিহাসিকভাবে বিশ্বের ধনী দেশগুলো থেকেই সবচেয়ে বেশি গ্রিন হাউস গ্যাস নির্গত হয়ে আসছে।”
চুক্তিতে সংশোধন ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও সুইজারল্যান্ডের মতো ধনী দেশগুলোর পাশাপাশি ছোট দ্বীপ রাষ্ট্রগুলোকেও হতাশা করেছে। কারণ সমুদ্রের উচ্চতা বৃদ্ধিতে দ্বীপ রাষ্ট্রগুলোই সবচেয়ে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। তবে, সামগ্রিক চুক্তির স্বার্থে ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলো চুক্তির এই সংশোধন মেনে নিয়েছে বলে জানা যায়।
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, “অনুমোদিত চুক্তিটি একটি সমঝোতা। এটি বর্তমান বিশ্বের স্বার্থ, শর্ত, দ্বন্দ্ব ও রাজনৈতিক ইচ্ছার অবস্থাকে প্রতিফলিত করে।”
তিনি আরও বলেন, “চুক্তির মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া হলেও, দুর্ভাগ্যবশত কিছু গভীর দ্বন্দ্ব কাটিয়ে উঠতে সম্মিলিত রাজনৈতিক ইচ্ছা এক্ষেত্রে যথেষ্ট নয়।”
গভীর হতাশা
জলবায়ু পরিবর্তনে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর সঙ্গে ভারত ও চীনের মতো জীবাশ্ম জ্বালানি নির্ভর দেশগুলোর সমন্বয় সাধন কঠিন হয়ে পড়েছিল সম্মেলনের চেয়ারম্যান অলোক শর্মার পক্ষে। একদিকে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর অস্তিত্ব বাঁচানোর লড়াই, অন্যদিকে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহারের ওপর নির্ভর করছে উন্নয়নশীল দেশগুলোর অর্থনীতি।
শেষ মুহূর্তে চুক্তিতে সংশোধন আনায় দুর্বল দেশগুলোর ক্ষোভের প্রেক্ষিতে অলোক শর্মার কণ্ঠ আবেগ মিশ্রিত হয়ে ওঠে।
সম্মেলনে তিনি বলেন, “আমি সকল প্রতিনিধিদের বলতে চাই, এই প্রক্রিয়াটি যেভাবে উন্মোচিত হয়েছে তার জন্য আমি ক্ষমাপ্রার্থী এবং গভীরভাবে দুঃখিত”।
সম্মেলনের আগে তিনি যে সর্বাধিক লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিলেন ও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তা জলবায়ু কর্মী ও ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোকে খুব আশাবাদী করে তুলেছিল। বিশ্ব উষ্ণনায়নে যে গ্রিন হাউজ গ্যাসই সবচেয়ে বেশি দায়ী এতে কোনো সন্দেহ নেই। তাই এই চুক্তিটি যথাযথভাবে কার্যকার করার কোনো বিকল্প পথ বিশ্বনেতাদের কাছে আপাতত নেই।
বিজ্ঞানীরা ইতোমধ্যেই জানিয়েছেন, বৈশ্বিক তাপমাত্রা ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে উঠলে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ব্যাপকভাবে বাড়বে; সেইসঙ্গে নানান ধরনের বিপর্যয় যেমন- খরা, ভয়ঙ্কর ঝড় ও দাবানল ইত্যাদি আরও চরম আকার ধারণ করবে।
কয়লার যুগ অবসান হতে চলেছে
পরিবেশবাদী সংস্থা গ্রিনপিসের নির্বাহী পরিচালক জেনিফার মরগান পুরো সম্মেলনটি দেখেছেন একটি ভিন্ন আঙ্গিকে।
তিনি বলেন, “তারা চুক্তিতে একটি শব্দ পরিবর্তন করেছে মাত্র; কিন্তু কয়লার যুগ যে শেষ হতে চলেছে- কপ-২৬ থেকে আসা এই সংকেতকে তারা অস্বীকার করতে পারবে না।”
উন্নয়নশীল দেশগুলোর যুক্তি ধনী দেশগুলো হতেই বেশি কার্বন নির্গত হয়। তাই বৈশ্বিক উষ্ণতা কমানোয় তাদের দায়বদ্ধতাই বেশি। উন্নয়নশীল দেশগুলো এ কারণেই ধনী দেশগুলো থেকে আরও বেশি তহবিলের দাবি জানিয়েছে।
এদিকে, নতুন কপ চুক্তি দরিদ্র দেশগুলোকে আবারও প্রতিশ্রুতির বাণী শোনালেও, তা যথাযথভাবে পূরণ হবে কিনা এর কোনো নিশ্চয়তা নেই।
জলবায়ু অভিযোজনে ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২৫ সালের মধ্যে জলবায়ু তহবিলে দ্বিগুণ অর্থায়নের দাবি করা হয়েছে। ধনী দেশগুলোর প্রতি এ দাবি জানিয়েছে ঝুঁকিপূর্ণ দ্বীপ রাষ্ট্রগুলো।
জাতিসংঘের একটি কমিটি আগামী বছর বার্ষিক জলবায়ু তহবিলে প্রতি বছর ১০০ বিলিয়ন ডলার সরবরাহের বিষয়টির অগ্রগতি নিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করবে। যদিও ধনী দেশগুলো ২০২০ সালের মধ্যেই এই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করেছিল; তবে পরবর্তীতে তা বাস্তবায়িত হয়নি। এছাড়া, জলবায়ু তহবিল নিয়ে আলোচনার জন্য ২০২২, ২০২৪ ও ২০২৬ সালে দাতা দেশগুলোকে বৈঠকে ডাকা হবে।
জাতিসংঘের মতে, বছরে ১০০ বিলিয়ন ডলার দরিদ্র দেশগুলোর প্রকৃত চাহিদার তুলনায় অনেক কম। বিপর্যয় ও দুর্যোগের ফলে ফসল ও অন্যান্য আর্থিক ক্ষতি বাদ দিয়েই ২০৩০ সাল নাগাদ কেবল অভিযোজনের খরচই দাঁড়াতে পারে ৩০০ বিলিয়ন ডলারে।

-রয়টার্স ভায়া দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড।

https://channelkhulna.tv/

আন্তর্জাতিক আরও সংবাদ

মধ্যপ্রাচ্যে ঈদের চাঁদ দেখা গেছে , দাবি ইন্টারন্যাশনাল অ্যাস্ট্রনমিকালের

বিশ্বের কোন দেশে কবে হতে পারে ঈদ

নামাজের সময় ভূমিকম্প, মসজিদ ধসে ৩ জনের মৃত্যু

গর্তে ফেলে ভাড়াটিয়াকে জীবন্ত কবর দিলেন বাড়িওয়ালা

যুক্তরাষ্ট্রে গাড়ি আমদানিতে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ ট্রাম্পের

ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা র-এর ওপর মার্কিন ফেডারেল সংস্থার নিষেধাজ্ঞার সুপারিশ

চ্যানেল খুলনা মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন  
DMCA.com Protection Status
সম্পাদক: মো. হাসানুর রহমান তানজির
It’s An Sister Concern of Channel Khulna Media
© ২০১৮ - ২০২৪ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | চ্যানেল খুলনা.বাংলা, channelkhulna.com.bd
যোগাযোগঃ ৫ কেডিএ বানিজ্যিক এলাকা, আপার যশোর রোড, খুলনা।
প্রধান কার্যালয়ঃ ৫২/১, রোড- ২১৭, খালিশপুর, খুলনা।
ফোন- 09696-408030, 01704-408030, ই-মেইল: channelkhulnatv@gmail.com
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য অধিদফতরে অনলাইন নিউজ পোর্টাল নিবন্ধনের জন্য আবেদিত।