রাশিয়ার হাতে আটক বিরোধী রাজনৈতিক নেতা অ্যালেক্সাই নাভালনিকে মুক্তির দাবি জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও কয়েকটি ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশের সরকার। তবে এসবের পাত্তা দিচ্ছে না রাশিয়া। দেশটি বলছে, পশ্চিমাদের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক সমস্যার বিষয়টি অন্যদিকে ঘোরাতে এসব অভিযোগ করছে তারা।
পাঁচ মাস পর রোববার জার্মানি থেকে মস্কোর বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পরপরই ৪৪ বছরের এ রাজনীতিককে আটক করে কর্তৃপক্ষ। এর আগে তাকে বিষ প্রয়োগে হত্যা চেষ্টা করা হয়। এ ঘটনায় নাভালনি রাশিয়ান কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনেন। এরপরই যে কোনো মূল্যে তাকে আটক করতে মরিয়া হয়ে ওঠে মস্কো।
নাভালনিকে আটকের পর আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিন্দার ঝড় উঠলেও পাত্তা দেয়নি মস্কো। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরব বলেন, পশ্চিমারা রাজনীতিবিদরা তাদের অভ্যন্তরীণ সমস্যা অন্যদিকে ঘোরাতে একটি পথ তৈরি করেছে।
এদিকে টুইটারে দেওয়া পোস্টে এ ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও। তিনি বলেন, অ্যালেক্সাই নাভালনিকে গ্রেফতারের ব্যাপারে রাশিয়ার সিদ্ধান্তে যুক্তরাষ্ট্র গভীরভাবে বিচলিত। আত্মবিশ্বাসী রাজনৈতিক নেতারা প্রতিদ্বন্দ্বী কণ্ঠস্বরকে ভয় পান না। তারা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে সহিংসতা কিংবা তাদের ভুলভাবে আটকের পরোয়া করেন না।
রুশ কর্তৃপক্ষ সমালোচকদের মুখ বন্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা করছে উল্লেখ করে অবিলম্বে নাভালনির নিঃশর্ত মুক্তির আহ্বান জানিয়েছেন পম্পেও।
বাইডেন প্রশাসনের সম্ভাব্য জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভান বলেছেন, নাভালনির ওপর ক্রেমলিনের হামলা কেবল মানবাধিকারেরই লঙ্ঘন নয় বরং রাশিয়ায় যারা তার কণ্ঠস্বর শুনতে চায় তাদের ওপরও আঘাত।
একই ধরনের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ফ্রান্স, ইতালি ও যুক্তরাজ্যের মতো ইউরোপের প্রভাবশালী দেশগুলো। ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট চার্লস মিশেল বলেছেন, মস্কো পৌঁছানোর পর নাভালনিকে আটকের ঘটনা গ্রহণযোগ্য নয়। রুশ কর্তৃপক্ষকে অবিলম্বে তাকে মুক্তি দেওয়ার জন্য আহ্বান জানাই।
জার্মানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাইকো মাস নাভালনিকে গ্রেফতারের ঘটনাটিকে সম্পূর্ণ দুর্বোধ্য বলে উল্লেখ করেছেন।
এছাড়া যুক্তরাজ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডমিনিক রাব রাশিয়ার বিরোধী এ নেতাকে দ্রুত মুক্তির আহ্বান জানিয়েছেন।
গত বছর আগস্টে একটি অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটে সার্বিয়া থেকে মস্কো ফেরার সময় এককাপ চা পানের পরই অসুস্থ হয়ে কোমায় চলে গিয়েছিলেন ৪৪ বছর বয়সী নাভলনি। বিমানবন্দর থেকে তাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।
অবস্থার পরিবর্তন না হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে জার্মানি নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই পরীক্ষায় জানায় যায়, সোভিয়েত আমলে তৈরি বিষাক্ত নার্ভ এজন্টে নোভিচক দিয়ে তাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল।