অনলাইন ডেস্কঃ স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, শিক্ষিত নারী হার বাড়লে খুব সহজেই তার ক্ষমতায়নও বেড়ে যাবে, সব সমস্যার সমাধান হবে। দেশের নারীরা শিক্ষিত হলে জনসংখ্যাসহ সব বিষয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে কাজ করতে পারবে।
বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) রাজধানীর খামারবাড়ির কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট অডিটরিয়ামে ‘বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘জনসংখ্যা ও উন্নয়নে আন্তর্জাতিক সম্মেলনের ২৫ বছর: প্রতিশ্রুতির দ্রুত বাস্তবায়ন’। এসময় জনসংখ্যাকে সম্পদে পরিণত করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে বলেও মন্তব্য করেন মন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে জাহিদ মালেক বলেন, ‘আমাদের দেশের জনসংখ্যা সম্পদে রূপান্তরিত করতে হবে। দেশের ১৫ শতাংশ লোক অপুষ্টির শিকার হচ্ছে, তাদেরকে সেবা নিতে স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে যেতে হবে। আর এজন্য কেন্দ্রগুলোতে কর্মীদের উপস্থিতিও বাড়াতে হবে।’
দেশে এখনো ৫০ শতাংশের কাছাকাছি মায়ের অপ্রাতিষ্ঠানিক ডেলিভারি হচ্ছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘এই হার কমাতে হবে, তা না হলে মাতৃ মৃত্যুহার হার শূণ্যের কোঠায় আনা সম্ভব হবে না। একইসঙ্গে জনসংখ্যার বৃদ্ধির হার আরও কমাতে হবে। জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ১৯৭৪ এর ২ দশমিক ৬১ শতাংশ থেকে বর্তমানে ১.৩৭ শতাংশে হ্রাস পেয়েছে। একই সঙ্গে পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি ব্যবহারকারীর হার ১৯৭৫ সালে ৭.৭ শতাংশ থেকে বর্তমানে ৬৩.১ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। এখন আমাদের আরো উদ্যমী হয়ে নবদম্পতি, কিশোরী মাতৃত্ব, দরিদ্র-নিরক্ষর ও দুর্গম অঞ্চলের সক্ষম দম্পতিদের চিহ্নিত করে তাদের কাছে পরিবার পরিকল্পনা সেবা পৌঁছে দেওয়ার পদক্ষেপ নিতে হবে।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ‘মাতৃমৃত্যু রোধে সরকারের বহুমুখী কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়নের ফলে বর্তমানে মাতৃমৃত্যুর হার ১৬৯ এ (প্রতি লাখ জীবিত জন্মে) হ্রাস পেয়েছে। এরপরও আমাদের আত্মতুষ্টির কোনো সুযোগ নেই। কেননা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে (এসডিজি) ২০৩০ সালের মধ্যে মাতৃমৃত্যু হার প্রতি লাখ জীবিত জন্মে ৭০ এর নিচে এবং নবজাতকের মৃত্যুহার প্রতি হাজার জীবিত জন্মে ১৬ থেকে ১২ তে নামিয়ে আনতে হবে। এ জন্য সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।’
মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব শেখ ইউসুফ হারুনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- সাবেক স্বাস্থ্য মন্ত্রী প্রফেসর আ ফ ম রুহুল হক, পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের মহাপরিচালক কাজী মোস্তফা সারোয়ার, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক প্রফেসর ডা. আবুল কালাম আজাদ, জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিলের (ইউএনএফপিএ) বাংলাদেশ প্রতিনিধি আশা টোর্কেলসন, পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের আইইএমের পরিচালক ডা. আশরাফুন্নেসা প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে পরিবার পরিকল্পনা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড ২০১৮-১৯ প্রদান করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। এ বছর মিডিয়া অ্যাওয়ার্ডে প্রিন্ট মিডিয়া (প্রথম স্থান) পুরষ্কার পান দৈনিক ইনকিলাবের স্টাফ রিপোর্টার মাইনুল হাসান সোহেল (হাসান সোহেল) এবং দৈনিক যুগান্তরের সাব-এডিটর রীতা ভৈৗমিক। টেলিভিশন মিডিয়া (প্রথম স্থান) পুরষ্কার পান গাজী টেলিভিশনের চিফ রিপোর্টার রাজু আহমেদ এবং ডিবিসি টেলিভিশনের সিনিয়র রিপোর্টার তাহসিনা সাদেক জেসি।