খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনে মেয়র পদে ভোট করতে প্রায় ২০লাখ টাকা ব্যয় করবেন নৌকার প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেক। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৮ লাখ টাকায় ভোট করবেন বলে জানিয়েছেন লাঙ্গলের প্রার্থী মো. শফিকুল ইসলাম মধু। আর প্রায় ৭ লাখ টাকায় ভোট করার কথা জানিয়ে হাতপাখার প্রার্থী মোঃ আঃ আউয়াল বলেছেন, এর মধ্যে ৫ লাখ ৮৫হাজার টাকাই দেনা আর স্বেচ্ছায় দানের টাকা। জাকের পার্টির প্রার্থী এস, এম, সাব্বির হোসেন নিজ আয় ধার আর দানের টাকায় নির্বাচনে ব্যয় করবেন ৪ লাখ টাকা।
নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা হলফনামায় নিজস্ব আয় থেকে নির্বাচনি ব্যয় ১৯ লাখ ৯৫ হাজার ১৫০টাকা উল্লেখ করেছেন নৌকার প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেক। যার মধ্যে নির্বাচনি ক্যাম্প বা অফিস, প্রার্থীর কেন্দ্রীয় ক্যাম্প বা অফিস, প্রতিন্দ্বদ্বী প্রার্থীর অফিস আপ্যায়ন, ঘরোয়া বৈঠক বা সভা, ভোটার স্লিপ, সিডি, যাতায়াত, মাইকিং, লিফলেট, হ্যান্ডবিল, ডিজিটাল ব্যানার এবং পোস্টার বাবদ খরচের হিসাব দেওয়া হয়েছে। তিনি নির্বাচনি ক্যাম্প স্থাপন করবেন মোট ৫টি। নির্বাচনি এজেন্ট ও কর্মীদের খরচ ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৮২ হাজার ৬শত টাকা।
জাতীয় পার্টির প্রার্থী মো. শফিকুল ইসলাম মধুও হলফনামায় কারও সহযোগিতা ছাড়া ব্যক্তিগত তহবিল থেকে ১৮ লাখ ২৬ হাজার ৯শত টাকা নির্বাচনে ব্যয় করার কথা জানিয়েছেন। নির্বাচনি ক্যাম্প ৫টি স্থাপন করবেন মধু এবং নির্বাচনি এজেন্ট ও কর্মীদের খরচ ধরা হয়েছে ৬ লাখ ২০ হাজার টাকা।
আর ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মোঃ আঃ আউয়াল নির্বাচনে ব্যয় করবেন ৬ লাখ ৮৫ হাজার টাকা। এর মধ্যে শিক্ষকতা এবং ব্যবসা থেকে নিজের আয় ১ লাখ টাকা, তার ভাই মাও: নাসির উদ্দিন ও মো. রহমাতে আলম এর কাছ থেকে স্বেচ্ছাপ্রণোদিত দান হিসাবে ১লাখ ২০হাজার টাকা এবং শেখ হাসান ওবায়দুল করীম ও শেখ মো. নাছির উদ্দীন এর কাছ থেকে ৭০ হাজার টাকা স্বেচ্ছাপ্রণোদিত দান হিসাবে পাওয়া অর্থের কথা উল্লেখ করেছেন তিনি। আর তার শশুর আব্দুল ওহাব এবং শ্যালক আবু উবায়দার কাছ থেকে ধার নিয়েছেন ২লাখ টাকা। তিনি আল আবু তাহের ৮০ হাজার ও গাজী ফেরদাউস সুমনের কাছ থেকে ৭০ হাজার ধার নেওয়ার উল্লেখ করেছেন। এছাড়াও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ খুলনা মহানগর শাখা থেকে স্বেচ্ছায় ৪৫ হাজার টাকা দানের কথা উল্লেখ করেছেন। তিনি নির্বাচনি ক্যাম্প স্থাপন করবেন ৫টি। আর নির্বাচনি এজেন্ট ও কর্র্মী বাবদ খরচ ধরা হয়েছে ৭৫ হাজার টাকা।
একইভাবে জাকের পার্টির প্রার্থী এস, এম, সাব্বির হোসেন ৪ লাখ ৩৪ হাজার ৫শত টাকা নির্বাচনে ব্যয় করবেন। যেখানে তার নগদ তহবিল থেকে ৬৫ হাজার টাকা ও ভাই ফারুক হোসেনের কাছ থেকে ধার বাবদ প্রাপ্য ২ লাখ টাকা ব্যয় করবেন। চারটি নির্বাচনি ক্যাম্প স্থাপনের কথা উল্লেখ করেছেন তিনি। এজেন্ট ও কর্মী বাবদ খরচ উল্লেখ করেছেন ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
কেসিসি নির্বাচনে চার বৈধ মেয়র প্রার্থী প্রতীক বরাদ্দের অপেক্ষায় রয়েছেন। বরাদ্দ পেলেই নামবেন আনুষ্ঠানিক প্রচার-প্রচারণায়। যদিও মনোনয়ন জমার পর থেকেই তারা কৌশলী প্রচারণা চালাচ্ছেন। এতেও তাদের ব্যয় হচ্ছে ব্যাপক অর্থ।
খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দীন বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু করার লক্ষ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রাখা হয়েছে। প্রতীক বরাদ্দের পর প্রার্থীরা আনুষ্ঠানিক প্রচারণা চালাবেন। আর নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে ইভিএম নিয়ে সাধারণ মানুষের মাঝে সচেতনতা বাড়াতে প্রচার চালানো হবে।
উল্লেখ্য খুলনা বিভাগীয় কমিশনার ও রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার (২৩ মে) বিকেল পর্যন্ত ৪ জন মেয়র প্রার্থী, ৩৯ জন সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী ও ১৪১ জন সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থীসহ মোট ১৮৪ জনের মনোনয়নপত্র বৈধ রয়েছে।