বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ব্যবস্থাপনায় খুলনায় রবিবার (২৯-০৫-২০২২) ‘আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস-২০২২’ উদ্যাপন উপলক্ষ্যে পিসকিপার্স রান ও র্যালি অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী, বাংলাদেশ পুলিশ, বাংলাদেশে জাতিসংঘের সংস্থাসমূহ, স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তা ও সদস্যবৃন্দ, সশস্ত্র বাহিনীর বিভিন্ন স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রী ও বিএনসিসি শিক্ষার্থীসহ মোট ৩৩৬ জন অংশগ্রহণ করে। উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খুলনা নৌ অঞ্চলের আঞ্চলিক কমান্ডার রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, এনজিপি, পিসিজিএম, এনডিসি, এএফডব্লিউসি, পিএসসি। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি নিহত শান্তিরক্ষীদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করেন এবং পরে বেলুন, ফেস্টুন ও পায়রা উড়িয়ে র্যালির আনুষ্ঠানিক শুভ উদ্বোধন করেন।
এরপর র্যালিটি শহরের শিববাড়ী মোড় হতে শুরু হয়ে খুলনা শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে সার্কিট হাউজ ময়দানে এসে সমাপ্ত হয়। উল্লেখ্য, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারী বিশ্বের সকল দেশের শান্তিরক্ষীদের অসামান্য অবদানকে স্মরণীয় করে রাখতে প্রতিবছর ২৯ মে দিবসটি পালন করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় এবছরও বাংলাদেশে দিবসটি পালনের লক্ষ্যে খুলনায় বিভিন্ন কর্মসূচীর পাশাপাশি র্যালীর আয়োজন হয়।
উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী ১,৬২,৫৮৪ জন এবং বাংলাদেশ পুলিশের ২০,৭৯৪ জনসহ সর্বমোট ১,৮৩,৩৭৮ জন শান্তিরক্ষী সদস্য বিশ্বের ৪৩টি দেশে এ পর্যন্ত ৫৫টি মিশন সফলতার সাথে সম্পন্ন করেছে। বর্তমানে ৯টি মিশনে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী ও বাংলাদেশ পুলিশের ৬,৮২৫ জন শান্তিরক্ষী নিয়োজিত আছে। ফলে বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ সর্বোচ্চ সংখ্যক শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ হিসেবে মর্যাদা লাভ করেছে। বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠার এই মহান দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে এ পর্যন্ত বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী ও বাংলাদেশ পুলিশের ১৬১ জন সদস্য জীবন উৎসর্গ করেছেন। আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী এবং বাংলাদেশ পুলিশ সদস্যদের সক্রিয় অংশগ্রহণে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে দেশের সুনাম বৃদ্ধির পাশাপাশি জাতিসংঘেরও ভাবমূর্তি সমুন্নত রাখতে সক্ষম হয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠা ও মানবাধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ইতোমধ্যে জাতিসংঘের পরীক্ষিত বন্ধু হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে। পরিবর্তিত বিশ্বের ক্রমবর্ধমান চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীদের বিচক্ষণতা, পেশাদারিত্ব এবং সাহসিকতার মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের স্থানীয় প্রশাসনকে সহায়তা করে যাচ্ছে।