বিতর্কিত কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে গত দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে বিক্ষোভ করছেন ভারতের কয়েক লাখ কৃষক।
রাজধানী নয়াদিল্লির তিন সীমান্ত-সিংঘু, টিকরি ও গাজীপুরে রাস্তার পাশে তাঁবু খাটিয়ে অবস্থান করছেন তারা।
চলমান এই কৃষক আন্দোলন নিয়ে এক বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সিএনএন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দিল্লি সীমান্তে অবস্থান নেওয়া অধিকাংশ কৃষকই পাঞ্জাব, হরিয়ানা ও উত্তর প্রদেশ থেকে এসেছেন।
গত তিন মাস ধরে তীব্র শীতের মধ্যেই তাঁবু খাটিয়ে ক্যাম্প করে কৃষকরা রাস্তায় অবস্থান করেছেন। রাস্তায়ই তাদের রান্নার চুলা, পানির ট্যাঙ্ক, টয়লেট, মেডিকেল সেন্টার-সবকিছুরই ব্যবস্থা করা হয়েছে।
রাস্তার পাশে অস্থায়ীভাবে ওয়াশিং মেশিন বসানো হয়েছে, আছে একটি অস্থায়ী লাইব্রেরিও।
সিএনএন জানিয়েছে, রাতে রাস্তায় টানানো তাঁবু কিংবা তাদের ট্রাক্টর, কয়েকশ ভ্যান ও ট্রাকে গদি বিছিয়ে ঘুমান আন্দোলনরত কৃষক। তাদের মধ্যে একদল কৃষক রাত জেগে পাহারা দেন।
সকালে অন্যরা ঘুম থেকে উঠলে তারা বিশ্রাম করেন। এভাবেই আন্দোলন পরিচালনার দায়িত্ব তারা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নিয়েছেন। ক্যাম্পে রয়েছে সহজেই স্থানান্তরযোগ্য টয়লেট।
সাবান, শ্যাম্পু ও টিস্যু সরবরাহের জন্য অস্থায়ী গুদামঘর রয়েছে। এ সবকিছুই কৃষক বা কৃষকদের পক্ষে সমর্থকরা তাদেরকে দিয়েছেন।
খাওয়ার ও গোসলসহ অন্যান্য কাজে ব্যবহারের জন্য কাছাকাছি গ্রাম-লোকালয় থেকে ট্রাক্টর ব্যবহার করে ট্যাঙ্কে করে পানি আনা হয়। রাস্তার পাশেই সামান্য গ্যাসের আগুনে খাবার তৈরি হয়।
ক্যাম্পে বেশিরভাগ সময়ই ফুলকপি, আলু ইত্যাদি শীতকালীন সবজি রান্না করা হয়ে থাকে। সব কৃষকের মধ্যে খাবারগুলো বিতরণ করা হয়। ক্যাম্পে অস্থায়ী মেডিকেল সেন্টার তৈরি করা হয়েছে।
কৃষক পরিবারের ডাক্তার সন্তানসহ কয়েকজন তরুণ স্বেচ্ছাসেবক সেখানে থেকে চিকিৎসা দিচ্ছেন। তীব্র শীতের মধ্যে রাস্তায় অবস্থান করা মানুষগুলোর জন্য বিনা মূল্যে ওষুধ ও অন্যান্য চিকিৎসাসামগ্রীও সরবরাহ করা হচ্ছে।
রাস্তার উপরেই রান্না আর খাওয়া-দাওয়া। সেই রাস্তার উপরেই মেডিকেল সেন্টার বসিয়ে চলছে চিকিৎসা। কাপড় ধোয়া-চলছে কাচা ওয়াশিংটন মেশিনে।
আর লাইব্রেরিতে পড়াশোনা। সেই ডিসেম্বর থেকে এভাবেই জীবন কাটছে ভারতের আন্দোলনরত কৃষকের।