চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেছেন, ভোটাধিকার হরণের দায়ে ক্ষমতা থেকে সরে না দাঁড়ালে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সরকারকে টেনে নামাতে হবে। শুধু পদত্যাগ পদত্যাগ বললে হবে না। পদত্যাগ না করলে লাথি মেরে নামাতে হবে। ওই সব ভাষায় না হলে, তাদের হাত ধরে টেনে রাস্তায় নামিয়ে দিতে হবে। শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ২ বছর কারাবাসের প্রতিবাদে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক প্রতিবাদ সভায় এ কথা বলেন তিনি।
সভাপতির বক্তব্যে ড. কামাল বলেন, বঙ্গবন্ধু গণতন্ত্র চেয়েছিলেন। অথচ আমাদের এখানে এখন গণতন্ত্র নেই। স্বাধীনতার পরিবর্তে আমরা স্বৈরতন্ত্রকে মেনে নিয়েছি। গণতন্ত্র রক্ষার জন্য মাঝে মাঝে ঝুঁকি নিতে হয়, আমাদের ঝুঁকি নিতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, ভোটাধিকার হরণের দায়ে ক্ষমতা থেকে সরে না দাঁড়ালে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সরকারকে টেনে নামানো হবে।
ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ এই নেতা বলেন, সংবিধানের ৭ম অনুচ্ছেদে লেখা আছে– দেশের মালিক জনগণ। স্বাধীন দেশে স্বৈরাচার থাকার কোনো অধিকার নেই। এই দেশের প্রতিটি জনগণ যেন তার মৌলিক অধিকার পালন করতে পারে সে কথা বঙ্গবন্ধু বলে গেছেন। তিনি কখনও অন্যায়ের ব্যাপারে আপস করেননি।
স্বাধীনতার ৪৮ বছরে কেউ দেশে রাজবন্দি হবে এটা শুনতে কেমন লাগে বলে উল্লেখ করে ড. কামাল বলেন, আজ বিরোধী দলের নেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য সভা করতে হবে এটা অকল্পনীয় ও দুঃখের বিষয়। এখন সভা-সমাবেশে নয়, ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনকে সামনে রেখে মাঠে নামবো। স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিকে সামনে রেখে মানুষকে অনুপ্রাণিত করে মাঠে নামতে হবে। চলেন আমরা মালিক হিসেবে ভূমিকা রাখি। যারা আমাদের ক্ষমতাকে আত্মসাৎ করেছে তাদের চিহ্নিত করি।
আ স ম আবদুর রব বলেন, ঐক্যফ্রন্ট গঠন করার আগে আমরা ৮ দফা দাবি দিয়েছিলাম। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনও দাবিই পূরণ হয়নি। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন, খালেদা জিয়ার মুক্তি ছিল দাবিগুলোর মধ্যে। আমি বিএনপি করি না। কিন্তু গণতন্ত্রের স্বার্থে খালেদা জিয়ার মুক্তি জরুরি।
দেশে এখন নির্বাচনের নামে প্রহসন হয় দাবি করে ড. কামাল বলেন, তারা রাষ্ট্রক্ষমতাকে জবরদখল করে চালিয়ে যাচ্ছে। আজ সব মানুষের পক্ষে বলতে হচ্ছে, ঐক্যবদ্ধ হয়ে নিজের অধিকার ফিরিয়ে আনতে হবে। দেশের ইতিহাসে দেখেছি, জনগণকে অধিকার বঞ্চিত করে কেউ স্বৈরতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করতে পারেনি। শাসকরা চেষ্টা করেছে, কিন্তু তাদের ভয়াবহ পরিণতি হয়েছে। আজ যারা স্বৈরাচার চালিয়ে যাচ্ছে, তাদের সেই ইতিহাসের দিকে তাকিয়ে দেখা দরকার যে বাঙালি কখনও স্বৈরাচারকে মেনে নেয়নি। আজ আমরা সবাই চাই, শান্তিপূর্ণভাবে দেশটাকে মানুষের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হোক।
প্রতিবাদ সভায় খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে ঐক্যবদ্ধভাবে রাজপথে নামার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানান ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা।
জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু সঞ্চালনায় সভায় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান, জেএসডির সভাপতি আসম আবদুর রব, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী এবং নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নাসহ শীর্ষ নেতারা।