নির্মাণাধীন পদ্মাসেতুর পিলারের সঙ্গে রো রো ফেরির সংঘর্ষের ঘটনায়, সেতুর কোনো ক্ষতি হয়নি। যেটুকু আঘাত লেগেছে, সেটা নিয়ে চিন্তিত নন পদ্মা সেতু নির্মাণ সংশ্লিষ্টরা।
শুক্রবার (২৩ জুলাই) পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেছেন, ‘সামান্যই ক্ষতি হয়েছে। এটা কোনো ব্যাপার না। ধাক্কা লাগতে পারে এমন চিন্তা তো আমাদের ছিল, যেহেতু বড় নদীর মধ্যে বড় জাহাজ যাবে। সেই প্রভিশন আছে, ধাক্কা লাগতে পারে।’
ন্যূনতম ক্ষতি কী হয়েছে জানতে চাইলে এই মেগা প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক বলেন, ‘’পদ্মা সেতুর কাঠামো এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে, এটি পাঁচ হাজার টন পর্যন্ত আঘাত সহনীয়। যেটুকু আঘাত লেগেছে, এটা নিয়ে আমরা চিন্তিত না। তবে এসব ঘটনা যাতে রিপিট না হয় সে ব্যাপারে আমরা কাজ করছি।’
পদ্মা বহুমুখী সেতুর পিলারের সঙ্গে ফেরি এমভি শাহজালালের সংঘর্ষের বিষয়টি তদন্তে চার সদস্যের কমিটি গঠন করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি)।
বিআইডব্লিউটিসির পরিচালক (বাণিজ্যিক) এস এম আশিকুজ্জামানকে আহ্বায়ক করে গঠিত তদন্ত কমিটিতে আরও আছেন বিআইডব্লিউটিএ-এর পরিচালক মো. শাহজাহান, বিআইডব্লিটিসির এজিএম (মেরিন) আহমেদ আলি ও এজিএম (প্রকৌশল) রুবেলুজ্জামান।
এই কমিটিকে আগামী তিন দিনের মধ্যে বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যানের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এর আগে ওই ফেরির ইনচার্জ ইনল্যান্ড মাস্টার অফিসার আব্দুর রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত করে বিআইডব্লিউটিসি। এতে বলা হয়, ফেরিটি সঠিকভাবে পরিচালনায় ব্যর্থ হওয়ায় তাকে বরখাস্ত করা হলো।
সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মুন্সিগঞ্জের লৌহজং উপজেলায় এই ঘটনা ঘটে। রো রো ফেরি শাহ্ জালাল মাদারীপুরের বাংলাবাজার ঘাট থেকে মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাট যাচ্ছিল। পথে পদ্মা সেতুর একটি পিলারে ফেরিটি ধাক্কা খায়।
ফেরি শাহ্ জালালের সাময়িক বরখাস্ত হওয়া মাস্টার আবদুর রহমানের ভাষ্য, নদীর মধ্যে পদ্মা সেতুর ১৭ নম্বর পিলারের কাছে এলে ফেরির বৈদ্যুতিক সার্কিট পড়ে যায়। এতে স্টেয়ারিংও বন্ধ হয়ে যায়। নদীর প্রবল স্রোতে ফেরিটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। এতে পদ্মা সেতুর ১৭ নম্বর খুঁটিতে ফেরিটির ধাক্কা লাগে। পরে ফেরিটি শিমুলিয়া ঘাটে আনা হয়।
এ ঘটনায় ফেরির অন্তত ২৫ যাত্রী ও স্টাফ আহত হয়েছেন। ফেরি শাহ্ জালালও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এর আগে গত মঙ্গলবার পদ্মা সেতুর ১৬ নম্বর একটি পিলারের সঙ্গে ধাক্কা লেগে রো রো ফেরি শাহ মখদুমের তলা ফুটো হয়ে যায়।