বিশ্ব নগর পরিকল্পনা দিবস উপলক্ষ্যে মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) সকালে নগরীর শহিদ হাদিস পার্কে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. রেজাউল করিম।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় উপাচার্য বলেন, অনেকের ধারণা, পরিকল্পনা শুধু বাড়ি-ঘর-রাস্তাঘাট ঠিকঠাক হলো কিনা কেবল এসব নিয়েই হয়। সমাজ, পৃথিবী, জাতিসহ অনেক কিছুকে বিবেচনায় নিয়ে সুষম বন্টনের মাধ্যমে পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়। বাংলাদেশের উন্নয়ন কার্যক্রমগুলো পরিকল্পনা মাফিক ও সুন্দর হতে হবে। আগামী ৫০ বা একশত বছর পরে খুলনা শহরটি কেমন হবে, কতটুকু অবকাঠামোগত উন্নয়ন হবে ও কতটুকু প্রাকৃতিক পরিবেশ ধরে রাখা হবে এটিই পরিকল্পনা। পরিকল্পার দুইটি ধাপ রয়েছে, একটি গবেষণা অন্যটি তার প্রয়োগ। অনেক সময় পরিকল্পনা প্রণয়নে গবেষণাও থাকে না, প্রয়োগও হয় না। সবকিছুতে পরিকল্পনা থাকা দরকার। পরিকল্পনা ছাড়া উন্নয়ন টেকসই হয় না।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে পরিকল্পনা নিয়ে অনেক সমালোচনা হয়। কিন্তু পরিকল্পনার বাস্তবায়ন নিয়ে কোনো গুরুত্বারোপ করা হয় না। পরিকল্পনার বাস্তবায়ন একটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত এবং যেখানে বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের সমন্বয় একান্ত প্রয়োজন। পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সবার আগে প্রয়োজন কাঠামোগত সংস্কার। তিনি যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন উদাহরণ তুলে ধরেন এবং বাংলাদেশে ওয়ার্ডভিত্তিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য দক্ষ পরিকল্পনাবিদ নিয়োগের প্রসঙ্গে গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, ক্রমবর্ধমান নগরায়নের ফলে নগরে যে বৈচিত্র্যপূর্ণ চ্যালেঞ্জসমূহ আসছে এবং তার পাশাপাশি নগরের পরিধি যেভাবে বাড়ছে তাতে দক্ষ পরিকল্পনাবিদের সংখ্যা যা প্রয়োজন তার চেয়ে আমাদের বর্তমান অবস্থা অত্যন্ত অপ্রতুল। পরিকল্পনাবিদ নিয়োগ এবং তাদের জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে পরিকল্পনার বাস্তবায়ন বাংলাদেশকে একটি বৈষম্যহীন সুষম নগরায়ন উপহার দিতে পারে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সদস্য (এস্টেট) মো. ইকবাল হোসেন, ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ তবিবুর রহমান, খুলনা সিটি কর্পোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী মশিউজ্জামান খান, ইউএসএআইডি বাংলাদেশের প্রতিনিধি জাহিদ ফারুক ও এআরসি প্রকল্প (ব্র্যাক) এর প্রকল্প প্রধান ফারহানা আফরোজ। এতে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স খুলনা চ্যাপ্টার চেয়ারম্যান আবির উল জব্বার।
আলোচনা সভার পূর্বে দিবসটি উপলক্ষ্যে নগরীতে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। এই দিবসটি ইউএসএআইডি, খুলনা সিটি কর্পোরেশন, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স খুলনা চ্যাপ্টার এবং খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ উদ্যোগে পালিত হয়।