চিত্রনায়িকা পরীমণিকে ধর্ষণচেষ্টা ও হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদ ও পরীমণির বন্ধু অমিসহ পাঁচজনকে আটক করেছে পুলিশ। নাসির উদ্দিন মাহমুদ ব্যবসায়ী এবং জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য। তিনি রাজধানীর উত্তরা ক্লাবের সাবেক সভাপতিও।
সোমবার (১৪ জুন) দুপুরে রাজধানীর উত্তরা ১ নম্বর সেক্টরের ১২ নম্বর রোডে নাসির উদ্দিনের বাসা থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। তার বাসায় এখনো অভিযান চলছে। সেখান থেকে বেশ কিছু বিদেশি মদ, বিয়ার, ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।
আটককৃতদের মিন্টো রোডের ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা কার্যালয়ে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর মামলার তদন্ত সংস্থা সাভার থানা পুলিশে হস্তান্তর করা হবে।
এর আগে ধর্ষণচেষ্টা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে সোমবার দুপুর ১২টার দিকে সাভার থানায় ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিনসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন পরীমণি।
মামলার এজাহারে পরীমণি জানান, গত ৮ জুন রাত সাড়ে ১১টার দিকে তার বনানীর বাসা থেকে কস্টিউম ডিজাইনার জিমি, বন্ধু অমি (৪০) ও বোন বনিসহ (২০) দুটি গাড়িযোগে উত্তরার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হই। পথিমধ্যে বেড়িবাঁধস্থ ঢাকা বোট ক্লাবে তার দুই মিনিটের কাজ আছে বলে জানায় অমি। অমির কথামতো সবাই রাত আনুমানিক ১২টা ২০ মিনিটের দিকে ঢাকা বোট ক্লাবের সামনে গিয়ে গাড়ি দাঁড় করাই। কিন্তু বোট ক্লাব বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অমি কোনও এক ব্যক্তির সঙ্গে ফোনে কথা বলে। তখন ঢাকা বোট ক্লাবের সিকিউরিটি গার্ডরা গেট খুলে দেয়। এসময় আমার ছোটবোন বনি ওয়াশরুম ব্যবহারের জন্য বোট ক্লাবে প্রবেশ করে এবং বারের কাছের টয়লেটে যায়। টয়লেট হতে বের হতেই এক নম্বর বিবাদী নাসির উদ্দিন মাহমুদ আমাদেরকে ডেকে বারের ভেতরে বসার অনুরোধ করেন এবং কফি পানের প্রস্তাব দেন। আমরা বিষয়টি এড়িয়ে যেতে চাইলে অমিসহ এক নম্বর আসামি মদ্যপানের জন্য জোর করেন। আমি মদ্যপান করতে না চাইলে এক নম্বর আসামি জোর করে আমার মুখে মদের বোতল প্রবেশ করিয়ে মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করে। এতে আমার সামনের দাঁতে ও ঠোঁটে আঘাত পাই।
এজাহারে পরীমণি আরও বলেন, এক নম্বর আসামি (নাসির উদ্দিন মাহমুদ) আমাকে সেসময় অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং আমার শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে স্পর্শ করে এবং জোর করে ধর্ষণের চেষ্টা করে। সে উত্তেজিত হয়ে টেবিলে থাকা গ্লাস ও মদের বোতল ভাঙচুর করে আমার গায়ে ছুঁড়ে মারে। তখন আমার কস্টিউম ডিজাইনার জিমি তাকে বাধা দিতে গেলে তাকেও মারধর করে জখম করা হয়।
পরীমণি বলেন, আমি প্রথমে জাতীয় জরুরি সেবা-৯৯৯ নম্বরে ফোন দিতে গেলে আমার ফোনটি টান মেরে ফেলে দেওয়া হয়। এসময় অমিসহ অজ্ঞাতনামা চারজন নাসির উদ্দিন মাহমুদকে ঘটনা ঘটাতে সহযোগিতা করে।
এর আগে রোববার (১৩ জুন) রাতে প্রথমে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি স্ট্যাটাসে ধর্ষণচেষ্টা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ তুলে প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিচার চান পরীমণি। তার কিছু পরে নিজের বাসায় সাংবাদিকদের সঙ্গেও কথা বলেন তিনি।