ভারতের পশ্চিমবঙ্গকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণার দাবি উঠেছে। সম্প্রতি এই দাবি জানিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়েছে খালিস্তানপন্থি সংগঠন ‘শিখস ফর জাস্টিস’ (এসএফজে)।
একইসঙ্গে মহারাষ্ট্রকেও স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণার দাবি জানিয়েছে তারা। এ লক্ষ্যে চিঠি পাঠানো হয়েছে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরের কাছেও। দু’জনকেই একতরফাভাবে ভারত থেকে আলাদা হয়ে স্বাধীনতা ঘোষণা করতে আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।
খালিস্তানি দলটির দাবি, ১৯৪৭ সালে ভারতের স্বাধীনতার পর থেকেই পশ্চিমবঙ্গ ও মহারাষ্ট্রের প্রাকৃতিক সম্পদ লুট করছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। শুধু তাই নয়, নয়া দিল্লির বৈষম্যমূলক নীতির কারণে বাঙালি ও মারাঠিদের জাতিগত, ভাষাগত এবং সংস্কৃতিক পরিচয় হারিয়ে যাচ্ছে।
কারণ, ভারত সরকার বরাবরই এইসব বৈচিত্র্য অস্বীকার করে রাজ্যগুলোর ওপর একটি ঐতিহাসিক একজাতিতত্ত্ব চাপিয়ে দিয়ে আসছে। এই অবস্থায় ‘ভারতীয় আধিপত্যবাদ’ থেকে বাঙালি ও মারাঠি সম্প্রদায়ের সমৃদ্ধি, জাতি, পরিচয়, ভাষা এবং সংস্কৃতি রক্ষার জন্য এই দুটি রাজ্যকে ভারত থেকে পৃথক হয়ে স্বাধীন হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে দলটি।
এসএফজে তাদের চিঠিতে আরও দাবি করেছে, ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে একতরফাভাবে স্বাধীনতা ঘোষণা করার ক্ষমতা রয়েছে উভয় রাজ্যের নির্বাচিত আইনসভার। এক্ষেত্রে কসোভোর উদাহরণ দিয়ে দলটি জানিয়েছে, কসোভোর স্বাধীনতার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক আদালতের বিচারক যে আন্তর্জাতিক আইনের মানদণ্ড প্রতিষ্ঠা করেছেন, তাতে বাংলা ও মহারাষ্ট্রের স্বাধীনতা লাভ করতে অসুবিধা হবে না। শুধু তাই নয়, দুই রাজ্যের সরকার চাইলে আন্তর্জাতিক আদালতে তাদের আইনি সহায়তা দিতেও প্রস্তুত সংগঠনটি।
খালিস্তানপন্থি শিখ ফর জাস্টিস সংগঠনটি ভারতে নিষিদ্ধ। এর আগে বিচ্ছিন্নতাবাদী এই সংগঠনের ওয়েবসাইট চালু হওয়ার মাত্র চার দিনের মাথায় নিষিদ্ধ করে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। ভারত ভেঙে স্বাধীন খালিস্তান গঠনের লক্ষ্যে তাদের ওয়েবসাইটে গণভোটের ডাক দেওয়া হয়েছিল।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, চলমান কৃষক বিক্ষোভের ব্যাপারেও সক্রিয় রয়েছে এসএফজে। কৃষকদের সমর্থনে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ভারতীয় দূতাবাসের সামনে মোদি সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিলও করেছে খালিস্তানপন্থিরা।
আর এরমধ্যে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনের মাত্র কিছুদিন আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে চিঠি লেখা বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
অবশ্য ভারতের বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমের দাবি, পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা ইন্টার সার্ভিস ইন্টেলিজেন্স (আইএসআই)-এর সমর্থন ও সহযোগিতায় এ ধরনের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে এসএফজে।