পাইকগাছায় মৃত্যু ব্যক্তিকে জীবিত দেখিয়ে জমি রেজিস্ট্রি অতঃপর দখলের পায়তারা চেষ্টা অব্যহত রয়েছে । ঘটনাটি জানাজানির পর এলাকায় ব্যপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। চায়ের টেবিল থেকে শুরু করে হাট-বাজারে মৃত ব্যক্তি কর্তৃক জমি রেজিষ্ট্রি ঘটনা এখন টপ অফ পাইকগাছায় পরিনত হয়েছে।
ঘটনার সত্যতার অনুসন্ধানে সরেজমিনে গিয়ে জানাযায়, খুলনার পাইকগাছা উপজেলার চাঁদখালী ইউপির চককাওয়ালী গ্রামের মৃত ইমান আলী মোড়লের পুত্র জয়নাল মোড়ল ২০০৮ সালের ২৬ আগষ্ট রাতে খুলনার কয়রা থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে আনন্দ সিল্কি (ঢাকা মেট্রো জ- ১১২৯২০) পরিবহনের হেলপার হিসেবে রওনা হন। ২৭ আগষ্ট ভোর আনুমানিক ৫ টায় উক্ত গাড়ি ঢাকার গাবতলীর পর্বতা সিনেমা হলের সামনে গাড়িটি দুর্ঘটনায় পতিত হয়। যার ফলে ঘটনা স্থলে মুত্যু বরণ করেণ হেলপার জয়নাল মোড়ল। উক্ত ২৭ আগষ্ট ২০০৮ সালে মিরপুর মডেলে থানার ১০৪ নং মামলার তথ্য বিবরনী থেকে এ তথ্য পাওয়া যায়। অপরদিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের ২৭আগষ্ট ২০০৮ সালের ১৮০৮/০৮ নং ময়না তদন্তের রিপোর্টে তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। অথচ পাইকগাছার চাঁদখালী ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃক ১ সেপ্টেম্বর ২০০৯ সালের প্রদেয় ১০২৬ নং মৃত্যু সনদে উপরুক্ত জয়নাল মোড়লের মৃত্যু তারিখ দেখানো হয় ১৭ সেপ্টেম্বর ২০০৮ সাল।
অন্যদিকে উপজেলার চককাওয়ালী গ্রামের রেজাউল করিম গাজী ২৭ আগষ্ট ২০০৮ সালে মৃত জয়নাল মোড়ল কে দাতা দেখিয়ে নিজে গ্রহিতা হয়ে পাইকগাছা সাব-রেজিট্রি অফিসে ২০০৮ সালের ২ সেপ্টেম্বর ৩৪৩৮ নং বায়নাপত্র দলিলে মৃত জয়নাল মোড়লের অসহায় পরিবারের শেষ সম্বল বসতভিটা রেজিট্রি করে নেন। জয়নাল মোড়লের বিধবা স্ত্রী ও এতিম দু’সন্তান তাদের বতসভিটায় শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করে আসছিলেন। হঠাৎ রেজাউল করিম সম্প্রতি মৃত জয়নালের পরিবারকে উক্ত বায়নাপত্র দলিল দেখিয়ে ভিটে বাড়ি খালি করতে বলেন। এর পর থেকে আজ পর্যন্ত প্রতিদিনই নানা কৌশলে ভয়ভীতি দেখিয়ে বাড়ি থেকে বের করার জন্য ও উক্ত বায়নাপত্রের জমি রেজাউলের অনুকুলে রেজিস্ট্রি করে দেয়ার জন্য চাপ দিয়ে যাচ্ছে। এমনটি অভিযোগ করে মৃত জয়নালের স্ত্রী জাহানারা খাতুন বলেন, আমার মৃত স্বামীকে জীবিত দেখিয়ে রেজাউল একটি জাল বায়না দলিল রেজিস্ট্রি করে নিয়েছে। বর্তমানে আমাদের কে এই ভিটেমাটি তার নামে লিখে দেয়ার জন্য বিভিন্ন দপ্তরে মিথ্যা মামলা ও অভিযোগ দিয়ে হয়রানী করেছে। আমি এর বিচার চায়।
ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃক সরবরাহকৃত মৃত্যু সনদে সত্যতা নিরোপন করতে তৎকালীন ও বর্তমান চেয়ারম্যান জোয়াইদুর রসুল বাবুর অফিসে যেয়ে না পাওয়ায় তার ব্যবহারিত মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত মৃত্যু সনদ রেজিষ্টারে সুপারিশকৃত তৎকালিন সংরক্ষিত মহিলা সদস্য মুরশিদা বেগম সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের রিপোর্ট ও মামলায় উল্লেক্ষিত মৃত্যুর তারিখ সঠিক। ইউনিয়ন পরিষদের মৃত্যুর সনদ ভুল হতে পারে। বহু বছর আগের ঘটনা আমার সঠিক মনে নেই।
এ বিষয়ে সাক্ষাৎকারে রেজাউল করিম বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃক মৃত্যুর সনদ সঠিক, জয়নালের মৃত্যু আগে আমাকে রেজিষ্ট্র করে দিয়েছে। এছাড়াও জয়নালের স্ত্রী জাহানারা তার স্বামীর ঋনের স্বিকারুক্তি হিসেবে আমাকে একটা ডেমিতে স্বাক্ষর করে দিয়েছে।