শেখ মাহতাব হোসেন:: খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলায় বাণিজ্যিকভাবে পতিত জমিতে চাষ হচ্ছে পানিফল। স্থানীয় বাজারে পানিফল বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা কেজি। খুলনা শহরের আশপাশের বিভিন্ন বিল, জলাশয়ে এই পানিফল চাষ হচ্ছে। পানিতে জন্মে বলে এ নাম পানিফল। লতাপাতার মতো জলাশয়ে ভাসতে দেখা যায় পানিফলের গাছ।
মৌসুমি ফসল হিসেবে পানিফল চাষ হয়। অনেকে মাছের সঙ্গে মিশ্রভাবেও চাষ করে থাকেন। পানিফলে পানি এবং প্রচুর খনিজ উপাদান থাকে। জানা গেছে, ডুমুরিয়ায় পতিত খাল-বিল ও জলাশয়জুড়ে চাষ হচ্ছে পানিফলের গাছ। লাভজনক হওয়ায় এ জেলায় পানিফল চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকের। প্রতিবছর চাষ যেমন বাড়ছে তেমনি হাটে বাজারে বেচাকেনাও বেশ ভালো হচ্ছে। কম খরচে ভালো ফলনে ভালো দাম পেয়ে কৃষক খুশি। জেলা শহর ছাড়াও উত্তরের বিভিন্ন জেলায় পানিফল উৎপাদিত হচ্ছে।
খুলনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, আষাঢ় মাস থেকে ভাদ্র- আশ্বিন মাস পর্যন্ত চারা লাগানো যায়। চারা লাগানোর ২ থেকে আড়াই মাস পর ফল তোলা যায়। প্রতি গাছ থেকে ৩/৪ বার ফল তোলা যায়, যা পৌষ মাস বা ডিসেম্বর
পর্যন্ত পাওয়া যায়। এ ফলের কোনো বীজ নেই, মৌসুম শেষে পরিপক্ব ফল থেকে আবারো চারা গব্দায়, সে চারা পরে জলাশয়ে লাগানো হয়। কৃষি বিভাগ আশা করছে আগামী বছরেও আরো বেশি জলাশয়ে এ ফলের চাষ হবে। এদিকে কম খরচে লাভবান হওয়ায় ডুমুরিয়ার কৃষকরা এ ফলের চাষে আগ্রহী হচ্ছে।
উপজেলার বিলডাকাতিয়ার খাল-বিল- জলাশয়জুড়ে এখন শোভা পাচ্ছে পানিফলের গাছ। শহর গ্রামে সব খানেই এ ফলের চাহিদা রয়েছে। সেদ্ধ করেও এ ফল খাওয়া যায়। বাজারে কাঁচা ফলের পাশাপাশি সেদ্ধ ফলও বিক্রি হয়ে থাকে।
কাক ডাকা ভোর থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত শহরের গল্লামারী ব্রিজের পাশে পানিফলের বাজার বসে। এখানকার ব্যবসায়ী আবু হানিফ জানান, আশ্বিন থেকে পৌষ মাস পর্যন্ত এ বাজারে পানিফল বিক্রি হয়ে থাকে। ভরা মৌসুমে প্রতিদিন শত মণ পানিফলের কেনাবেচা হয় এ বাজারে।
খুলনা শহর ছাড়াও আশপাশের বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছে বলে জানান তিনি। খুলনা বাজাবে প্রতি মণ পানিফল পাইকারি ৮০০-১২০০ টাকা দরে কেনাবেচা হচ্ছে। কাঁচা ফলের দাম কম হলেও পরিপূর্ণ ফলের দাম বেশি।
এ ব্যাপারে খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. ইনসাদ ইবনে আমিন আমাদের ডুমুরিয়া খুলনা প্রতিনিধি শেখ মাহতাব হোসেন কে জানান, উপজেলার গুটুদিয়া ইউনিয়নের লতা খামার বাটি গ্রামের, ক্ষিতিশ মন্ডল ও দীপংকর মণ্ডল সাড়ে ১৫ বিঘা জমিতে পানিফল চাষ করেছে। এছাড়া অঞ্চলের আরো অনেকেই এখন এই ফল চাষ করছেন।
পানিফল অত্যন্ত সুস্বাদু। ডুমুরিয়ার থেকে পানিফলসহ চারা দেশের বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে যাচ্ছে। কৃষি বিভাগ প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান করছে। আগামীতে জেলার অন্যান্য উপজেলাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে চাষাবাদের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান এ কৃষি কর্মকর্তা।