প্রত্যয় যদি থাকে দৃঢ়, তখন কোনও প্রতিবন্ধকতাই বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে না। তার আরও একটি প্রমাণ করলেন সুরাইয়া জামান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘খ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় ময়মনসিংহের কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে পরীক্ষা দিয়েছেন তিনি। আর একটি প্রত্যয়ী মনই নয় তার প্রত্যয়ী পা দিয়ে লিখে এই পরীক্ষায় অংশ নিলেন সুরাইয়া জামান।
শনিবার (২ অক্টোবর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ‘খ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা হয়। পরীক্ষায় অংশ নিতে শেরপুর থেকে ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে যান সুরাইয়া জামান। তার হাত অকেজো। তাই পা দিয়ে লিখে অংশ নেন ভর্তি পরীক্ষায়। পরিবারের আশা, মেয়ে উত্তীর্ণ হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি যুদ্ধে। মেয়েটির বড় কিছু করার স্বপ্ন দেখে গোটা পরিবার।
সুরাইয়া জামান শেরপুর সদরের কামারিয়া ইউনিয়নের আন্ধারিয়া সুতিরপাড় গ্রামের মো. ছফির উদ্দিনের মেয়ে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আর দশজন শির্ক্ষাথীর মতো চেয়ার বেঞ্চে বসে নয় বরং পরীক্ষা কেন্দ্রের ভেতরে দেওয়ালের একটি কোণে পাটাতনের ওপর বসে পরীক্ষা দিচ্ছিলেন সুরাইয়া। হাতে লিখতে না পারলেও নিজের পাকে হাতের মতো ব্যবহার করে পরীক্ষা দিচ্ছেন তিনি। এর মধ্য দিয়ে পরীক্ষায় তিনি আরো ১০ জন শিক্ষার্থীকে ঠিকই চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন।
পরীক্ষার হলে যখন প্রতিবন্ধী মেয়ে পরীক্ষা দিচ্ছেন, তখন বাহিরে অপেক্ষায় ছিলেন মা র্মুশিদা ছফির। তিনি বলেন, মেয়েকে নিয়ে আজকের এই অবস্থানে আসার পেছনের গল্পটাও সংগ্রামের। তিন মেয়ের মধ্যে সুরাইয়া প্রথম। মেয়েকে কখনও অবহেলার চোখে দেখেনি পরিবার।
আমার মেয়েটা জন্মগত প্রতিবন্ধী হলেও তার জন্য কখনও মন খরাপ করেনি। সে এসএসসি এবং এইচএসসিতে ভালো ফলাফল করেছে। এবার সে পা দিয়ে লিখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। লেখাপড়া করে সে দেশ ও জাতির সেবা করুক এটাই আমার চাওয়া।
মুর্শিদা জানান, সুরাইয়া মেধাবী একজন শিক্ষার্থী। শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে পেছনে ফেলে তিনি এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৪.১১ এবং এইচএসসিতে ৪.০০ পেয়েছেন।