আরিফুর রহমান :: অবসরকালীন ছুটিতে (পিআরএল) যাওয়ার আগে শতাধিক পদে নিয়োগ সম্পন্ন করতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) চেয়ারম্যান মো. মোশতাক হাসান, এনডিসি। আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে তিনি এ জনবল নিয়োগ দিতে চাইছেন। নিয়োগকে কেন্দ্র করে লাখ লাখ টাকা লেনদেন হচ্ছে বলে গুঞ্জন উঠেছে এরইমধ্যে। বিসিকের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, শিল্প মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও সদ্য যোগদানকারী সচিবের নামে চাকরি প্রার্থীদের কাছ থেকে বিপুল অঙ্কের ঘুষ আদায় করা হচ্ছে। অভিযোগ ওঠেছে করোনা পরিস্থিতির মধ্যেই সরকারের দেওয়া বিধি-নিষেধকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে গত ১৮ জুন কোনো রকম স্বাস্থ্যবিধি না মেনে কর্মকর্তা পর্যায়ে নিয়োগের লিখিত পরীক্ষা সম্পন্ন করেছে বিসিক কর্তৃপক্ষ। করোনা পরিস্থিতির মধ্যে এত তাড়াহুড়ো করে কেন নিয়োগ সম্পন্ন করা হচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর গত ৪ মার্চ ৪২ ক্যাটাগরিতে ১৩৯ পদে নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বিসিক কর্তৃপক্ষ। এই ৪২টি ক্যাটাগরির মধ্যে ২৬টি ক্যাটাগরির ৮৮টি পদের লিখিত পরীক্ষা ১৮ জুন গ্রহণ করা হয়। সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় মন্ত্রী পরিষদ কর্তৃক লকডাউনের আদেশকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে ‘স্বাস্থ্যবিধির বুলি শুনিয়ে’ ছোট্ট এক কক্ষে ৬০-৭০ জনকে বসিয়ে কোনো রকম মানহীন প্রশ্ন দিয়ে লিখিত পরীক্ষা সম্পন্ন করেছে বিসিক কর্তৃপক্ষ। শুধু এটি নয় ব্যবস্থাপক থেকে আঞ্চলিক পরিচালক পর্যায়ের সকল পদের জন্য একই প্রশ্নে পরীক্ষা সম্পন্ন করা হয়েছে। পরীক্ষার প্রশ্নের মান নিয়ে অনেক পরীক্ষার্থী হতাশ ও সংশয় প্রকাশ করেন। এছাড়াও পরীক্ষা কেন্দ্রের সিটপ্ল্যান ও স্বাস্থ্যবিধি মানা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষোভ ও হতাশা ব্যক্ত করেছেন হাজারও পরীক্ষার্থী। একের পর এক অনিয়ম সংঘটিত করে চলেছেন বিসিক চেয়ারম্যান মো. মোশতাক হাসান। সরকারের প্রতিটি বিভাগ এমনকি বিসিএসেও ৪ বছরের অনার্সের ডিগ্রি থাকলে তারা ১ম শ্রেণি/৯ম গ্রেডের যে কোনো পদে আবেদনের যোগ্যতা রাখেন। কিন্তু বিসিকে ২০২১ সালে প্রকাশিত বিজ্ঞাপনে কেন মাস্টার্স পাশকে একমাত্র যোগ্যতা ধরা হলো এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ২০১৮, ২০১৯ সালের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে ৪ বছরের অনার্সের ডিগ্রি থাকলে তারা ১ম শ্রেণি/৯ম গ্রেডের যে কোনো পদে আবেদনের যোগ্য ছিলেন এবং সে অনুসারে আবেদনও করেছিলেন। তাহলে এবার সে নিয়মকে পাল্টানো হলো, কোনো বিশেষ উদ্দেশে এটি করা হলো কি না- সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। তাড়াহুড়ো করে পরীক্ষা নেওয়া এবং খুবই নিম্নমানের প্রশ্নের কারণে নিয়োগের সচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন পরীক্ষার্থীরা। তাদের আশঙ্কা গতবারের মত রাতের আঁধারে রেজাল্ট দিয়ে নিয়োগ সম্পন্ন করতে পারেন বর্তমান চেয়ারম্যান!
বিশ্বস্থ সূত্রে জানা যায়, বিসিক চেয়ারম্যান আগামী ৩০ নভেম্বর পিআরএলে যাবেন। আর এই সময়ের আগেই তড়িঘড়ি করে তিনি নিয়োগ সম্পন্ন করতে চান। পিআরএলে যাওয়ার আগেই বিপুল অর্থ হাতানোর চেষ্টা করছেন বলে মনে করছেন প্রতিষ্ঠানটির অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারী। তাই তিনি তার পছন্দের প্রার্থীদের নিয়োগ দেওয়ার জন্য এই কাজে লিপ্ত হয়েছেন। সদ্য নিয়োগ পাওয়া এজিএম ও ডিএম (যাদের যোগ্যতা নিয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় নিউজ হয়েছিল) তাদেরকেই উচ্চতর পদে আবারও নিয়োগ দিতে মরিয়া হয়েছে বিসিক চেয়ারম্যান।
সূত্র জানায়, বিসিক চেয়ারম্যান মো. মোশতাক হাসান ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিসিকে যোগদান করেন। যোগদানের ২ বছর ৫ মাস সময়ে একটা প্রকল্পও পাস করতে পারেননি তিনি। শিল্প মন্ত্রণালয় ও পরিকল্পনা কমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ নিরবচ্ছিন্ন রাখেন না। কোভিড-১৯ এ বিসিকের অনেক কর্মকর্তা আক্রান্ত হলেও তাদের প্রণোদনার জন্য সরকারের সঙ্গে পত্র যোগাযোগ পর্যন্ত করেননি। চেয়ারম্যান দফতরে একজন কর্মচারী আক্রান্ত হলেও সরকার ঘোষিত প্রণোদনার মধ্যে বিসিককে অন্তর্ভুক্ত করতে কোনো তৎপর চালাননি। তিনি বিসিকের উন্নয়নের জন্য কোনো কাজই করেননি। সারাদিন টকশোতে ব্যস্ত থাকেন। তাকে টকশো নেওয়ার জন্য একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলকে প্রতিমাসে ১ লাখ টাকা দেওয়া হয় বিসিকের রাজস্ব খাত থেকে। গত বছরে ৩য়, ৫ম ও ৬ষ্ঠ গ্রেডের নিয়োগ নিয়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে নিউজ হয়। পরীক্ষার্থীরা সেই প্রশ্নবিদ্ধ লিখিত পরীক্ষা বাতিল করে শিল্প মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে অতিরিক্ত সচিব পর্যায়ের একজনকে আহ্বায়ক করে তদন্ত কমিটি গঠন করার মাধ্যমে সঠিক চিত্রতুলে ধরতে চান। ভুক্তভোগীরা চাইছেন পিএসসি বা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে যেন মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হয়।
নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের অভিজ্ঞতা দেখিয়ে নিয়োগ: বিভাগীয় প্রার্থীদের বঞ্চিত করে ৬ষ্ঠ গ্রেডের ১৬টি পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে বিসিক। ৬ষ্ঠ গ্রেডের ১৬টি পদের এই নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। যাদের চূড়ান্তভাবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে তাদের অধিকাংশই নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের অভিজ্ঞতা দেখিয়েছেন। অনেক ক্ষেত্রে দেখানো পদগুলোও বিসিকের কাজের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। এ নিয়ে বঞ্চিত চাকরি প্রার্থীরা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিয়োগ নিয়ে সমালোচনা করেছেন। প্রতারণার শিকার হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলছেন কেউ কেউ। ২০২০ সালের গত ২৯ আগস্ট তারিখে প্রকাশিত ৬ষ্ঠ গ্রেডের ১৬টি পদে নিয়োগপ্রাপ্তদের বিস্তারিত তথ্য ভোরের পাতার কাছে এসেছে।
এতে দেখা যায়, নিয়োগপ্রাপ্তদের অধিকাংশেরই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির শর্ত পূরণ করতে পারেননি। নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের অভিজ্ঞতা দেখানো হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে দেখানো পদগুলোও বিসিকের কাজের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উপব্যবস্থাপক পদে নিয়োগের জন্য সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে ৫ বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
উপব্যবস্থাপক পদে প্রথম হওয়া মো. জাফর ইকবাল ভূইয়া (২০০০১৪৩) ইয়া সিইপিজেড লি. এ অফিসার হিসেবে কমর্রত থাকার অভিজ্ঞতা দেখিয়েছেন। প্রতিষ্ঠানটিতে তিনি ২০১৩ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি যোগদান করেছিলেন। সেই হিসেবে তার চাকরির অভিজ্ঞতা ৫ বছর। এই পদে নিয়োগ পেয়েছেন আলী আজগর নাসির (২০০০০১৮২)। যিনি তার চাকরির অভিজ্ঞতা দেখিয়েছেন ইনোভেশন ডিজাইন এন্ড এন্টার প্রেইনরশিপ একাডেমি প্রজেক্ট নামের প্রতিষ্ঠানটিতে এসোসিয়েট ডকুমেন্টেশন হিসেবে। পদটিতে তিনি ২০১৩ সালের ৩ জুন যোগদান করেন। সেই অনুযায়ী তার চাকরির অভিজ্ঞতা ৬ বছর। একই পদে নিয়োগ পাওয়া গোলাম হাফিজ (২০০০০২৮৭) অভিজ্ঞতা দেখিয়েছেন ইন্ট্রোকো গ্রুপের এসিসটেন্ট ম্যানেজার হিসেবে। পদটিতে তিনি যোগদান করেন ২০১৩ সালের ১ ফেব্রুয়ারি। ৫ বছরের অভিজ্ঞতা দেখিয়েছেন তিনি। একই পদে নিয়োগ পাওয়া আনিস উদ্দিন (২০০০০৩১৩) অভিজ্ঞতা দেখিয়েছেন ডাচ বাংলা ব্যাকের রিলেশনশিপ ম্যানেজার হিসেবে। তৃতীয় শ্রেণীর এই পদটিতে তিনি ২০০৮ সালের ৩০ জুন তিনি যোগদান করেছিলেন। সেই হিসেবে তার চাকরির অভিজ্ঞতা রয়েছে ১০ বছর। উপব্যবস্থাপক পদে নিয়োগ পাওয়া ইসমাইল হোসেন (২০০০০৮৫৫) ফরিদপুর সুগার মিলস লিমিটেডে ডেপুটি ম্যানেজার হিসেবে ৭ বছর চাকরির অভিজ্ঞতা দেখিয়েছেন। ২০১১ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি তিনি এ পদে যোগদান করেছিলেন।
একই পদে নিয়োগ পাওয়া রোকন উদ্দিন (২০০০০২০৬) সাউথইস্ট ব্যাংকের এক্সিকিউটিভ অফিসার হিসেবে ৫ বছর কাজ করার অভিজ্ঞতা দেখিয়েছেন। ২০১২ সালের ১১ জানুয়ারি এ পদে নিয়োগ পেয়েছিলেন তিনি। একই পদে নিয়োগ পেয়েছেন আমজাদ হোসেন (২০০০০৩৯৪)। যিনি সোসাল ইসলামী ব্যাংকে সিনিয়র এক্সিকিউটিভ অফিসার হিসেবে ৮ বছর চাকুরীর অভিজ্ঞতা দেখিয়েছেন। ২০১০ সালের ১ এপ্রিল এ পদে যোগদান করেন তিনি। সর্বশেষ নিয়োগ পাওয়া নাসরিন সুলতানা (২০০০০৩৬৯) অভিজ্ঞতা দেখিয়েছেন দৃক পিকচার লাইব্রেরি লিমিটেডের। প্রতিষ্ঠানটির এক্সিকিউটিভ মার্কেটিং ও ব্যান্ডিং হিসেবে ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল যোগদান করেন তিনি। সেই হিসেবে তার চাকরির অভিজ্ঞতা দেখিয়েছেন ৫ বছর।
একইভাবে বিশেষজ্ঞ পদে ৩ জনকে চূড়ান্তভাবে নিয়োগ দেয় বিসিক কতৃপক্ষ। এ পদে নিয়োগের শর্ত ছিল সংশ্লিষ্ট পদে ৫ বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। এ পদে নিয়োগ প্রাপ্তদের মধ্যে প্রথম হওয়া মো. মুনতাসীর মামুন (২১০০০০৫২) ২০১৭ সালে বিসিকে অ্যাসিসটেন্ট ফ্যাকাল্টি মেম্বার হিসেবে যোগদান করেন। সেই হিসেবে তার চাকরির আবেদনের সময় অভিজ্ঞতা ছিল মাত্র ১ বছর। একই পদে নিয়োগ পেয়েছেন স্বর্ণা আইস মিমি (২১০০০০১৫)। যিনি চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ২০১২ সালের ২৬ ডিসেম্বর ইন্সট্রাকটর পদে যোগদান করেন। সেই হিসেবে তার চাকরির অভিজ্ঞতা দেখিয়েছেন ৭ বছর। একই পদে নিয়োগ পেয়েছেন মো. সুহেল হাওলাদার (২০০০০৩৯)। যিনি শাহজালাল ফার্টিলাইজার প্রজেক্টে সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে কমর্রত ছিলেন। এই পদে তিনি যোগদান করেন ২০১৩ সালের ২৭ জুন। সেই হিসেবে তার অভিজ্ঞতা রয়েছে ৭ বছরের চাকরির।
এই বিষয়ে ভুক্তভোগী চাকরির একাধিক প্রার্থীর সঙ্গে কথা হয় ভোরের পাতার। তারা এই প্রতিবেদককে জানান, সরকারি চাকরিতে ৬ষ্ঠ গ্রেডে পদোন্নতি পেতে হলে তাদেরকে ১ম শ্রেণির কর্মকর্তা বা ৯ম গ্রেডে ৫ বছরের অভিজ্ঞতা থাকা লাগে। সেখানে নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠান থেকে শুধু ৫ বছরের অভিজ্ঞতা থাকলেই যদি ৬ষ্ঠ গ্রেডে নিয়োগ পাওয়া যায় তাহলে ১ম শ্রেণির কর্মকর্তার মর্যাদা কোথায় থাকল। এভাবে নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের অভিজ্ঞতার মাধ্যমে যদি ওপরের পোস্টে নিয়োগ দেয়া হয় তাহলে সরকারি চাকরির সুনাম ক্ষুণ্ণ হবে বলে মনে করেন তারা।
চাকরির বিধিমালা: বিসিক চাকরি প্রবিধানমালা-১৯৮৯ এবং সংশোধিত ১৯৯৪ প্রবিধান ৩ এর উপ প্রবিধান (২) অনুসারে ‘সরকার কর্তৃক সময় সময় জারীকৃত আদেশ অনুসাওে কোন বিশেষ শ্রেণির প্রার্থী এবং করপোরেশন বা করপোরেশন পরিচালিত কোন প্রকল্পে কমর্রত আছেন বা ছিলেন এমন প্রার্থীর ক্ষেত্রে উক্ত বয়সসীমা শিথিল যোগ্য হইবে’; ‘আরও শর্ত থাকে যে এই প্রবিধান মালার যাহা কিছুই থাকুকনা কেন করপোরেশন বা করপোরেশন পরিচালিত কোন প্রকল্পে আছেন বা ছিলেন এমন কোন প্রার্থীর যদি সংশ্লিষ্ট কাজের অভিজ্ঞতা থাকে, তাহা হইলে নিয়োগের ক্ষেত্রে তাহাকে অগ্রাধিকার দেয়া যাইতে পারে’। কিন্তু বিজ্ঞপ্তিতে তার প্রতিফলন না থাকায় কর্মকর্তারা ওই বছরের ৮ আগস্ট তা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট পিটিশন ১০০৯/২০১৯ দায়ের করেন। আদালত যুক্তিতর্ক শেষে গত বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি কেন অবৈধ হবে না মর্মে রুল এবং নিয়োগ কার্যক্রমের ওপর স্থগিতাদেশ জারি করেন। কিন্তু আদালতের নির্দেশ উপেক্ষা করে পরের দিন ৪ ফেব্রুয়ারি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করে। এরপর ১১ মার্চ মৌখিক পরীক্ষা হণের সিদ্ধান্ত নিলেও পরে সেখান থেকে পিছু হটে।
কমিটি গঠন: নাম সর্বস্য প্রতিষ্ঠানের অভিজ্ঞতা দেখিয়ে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক)। ৬ষ্ঠ গ্রেডের ১৬টি পদের এই নিয়োগে অনিয়মের বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সংবাদটি ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি আমলে নিয়ে পরের দিনই অভিজ্ঞতা সনদ যাচাই বাছাইয়ে কমিটি পূর্ণগঠন করেছে সংস্থাটি। সম্প্রতি বিসিক সচিব মফিদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে বলা হয়, বিসিক পরিচালনা পর্ষদের ৪২তম বিশেষ সভার সিদ্ধান্তক্রমে বিসিকের রাজস্বখাতভূক্ত ৩য় হতে ষষ্ঠ গ্রেড পর্যন্ত পদ সমূহে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত প্রার্থীদের অভিজ্ঞতা সনদ যাচাইয়ের জন্য নিম্নবর্ণিত কর্মকর্তাগণের সমন্বয়ে কমিটি পুনর্গঠন করা হলো। কমিটি প্রার্থীদের অভিজ্ঞতা সনদ যাচাই পূর্বক ১০ কার্য দিবসের মধ্যে চেয়ারম্যান, বিসিক বরাবর প্রতিবেদন দাখিল করবেন।
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বিসিকের চেয়ারম্যান মোশতাক হাসান এনডিসি বলেন, ‘৬ষ্ঠ গ্রেডের ১৬টি পদে নিয়োগে যে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে তা সত্য নয়। আমরা যথাযথ যাচাই বাছাই শেষে চূড়ান্ত প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করেছি। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী এ সকল পদে আরও নিয়োগ দেওয়ার সুযোগ ছিল। প্রায় ৩ শতাধিক প্রার্থী মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। এর মধ্যে মাত্র ১৬ জনকে আমরা চূড়ান্ত করেছি।’ চেয়ারম্যান আরো বলেন, ‘৬ষ্ঠ গ্রেডে নিয়োগের ব্যাপারে আদালতে মামলা ছিল। মামলাটি উঠিয়ে নেওয়ার পরে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। বিভাগীয় কর্মকর্তাদের গ্রেডেশন লিস্ট তৈরির কাজ চলছে। এটি শেষ হওয়ার পরে তাদের পদোন্নতিও দেওয়া হবে।