পিরোজপুরের এহসান গ্রুপের প্রতারণার শিকার ভুক্তভোগীরা মামলা আতঙ্কে ভুগছেন। বেশি বাড়াবাড়ি করলে ক্ষতিগ্রস্তদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়ার হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।
সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগীদের পক্ষে লিখিত বক্তব্যে এই অভিযোগ করেন মো. হারুন অর রশিদ, যিনি এক সময় এই প্রতিষ্ঠানটিতে কর্মরত ছিলেন।
হারুন অর রশিদ বলেন- এহসান রিয়েল এস্টেট এন্ড বিল্ডার্স লিমিটেডের প্রতারণার শিকার হয়ে ক্ষতিগ্রস্তরা আইনি সহায়তা পাওয়ার জন্য প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় একাধিক মামলা করি। এর প্রেক্ষিতে আদালত তদন্ত সাপেক্ষে আসামিদের নামে একাধিক গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। কিন্তু আসামিদের বিরুদ্ধে একাধিক গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকা সত্বেও তাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না। আসামিরা উল্টো ক্ষতিগ্রস্থ সদস্যদের জীবন নাশের হুমকি ধামকি দিচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন হারুন।
ভূক্তভুগীরা আশঙ্কা করছেন-আসামিদের কাছে থাকা ক্ষতিগ্রস্থ সদস্যদের সকল গুরত্বপূর্ণতথ্য কাগজপত্র গুম করার পাশাপাশি জমি বিক্রি করে ও সদস্যদের টাকা পাচার করে আসামিরা যে কোন সময় দেশ ত্যাগ করতে পারে।
হারুন অর রশিদ আরও জানান- বর্তমানে এহসান গ্রুপের উপদেষ্টা, আঃ রব খানের বিরুদ্ধে ২৭ টি গ্রেপ্তারি পারোয়ানা আছে। এছাড়া প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান সালমা আহসান, ক্যাশিয়ার শামীম আহসান, সভাপতি শাহ আলম ও ম্যানেজার নাজমুল ইসলামের বিরুদ্ধে একাধিক গ্রেপ্তারি পারোয়ানা রয়েছে।
তিনি জানান, আসামিরা বর্তমানে নিজ বাড়িতে অবস্থান করছেন। এ অবস্থায় ভূক্তভূগীরা পিরোজপুর সদর থানার ওসিকে আসামীদের গ্রেপ্তারে তাগাদা দিলে, বেশি বারাবারি করিলে ভূক্তভূগীদের বিরুদ্ধে মামলা দেবেন বলে হুমকি দেন ওসি। যোগ করেন মো. হারুন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পিরোজপুর সদর থানার ওসি বলেন-এসব কথা বলার প্রশ্নই ওঠে না। আমরা আসামীদের গ্রেপ্তারে সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছি। এহসান গ্রুপের বিরুদ্ধে হওয়া মামলাগুলো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থা তদন্ত করছে। এই মামলার বেশ কয়েকজন আসামী বর্তমানে কারাগারে আছে। বাকিদের গ্রেপ্তারেও আমরা তৎপর রয়েছি।
লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, এহসান গ্রুপের উপদেষ্টা আঃ রব খান ভূক্তভূগিদের হুমকি দিচ্ছেন যে, পুলিশের এক উর্ধ্বতন কর্মকর্তার সাথে আমাদের ভালো সম্পর্ক আছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আমাদের গ্রেপ্তার করবে না।
ক্ষতিগ্রস্থ সদস্যদের দাবি,- উপদেষ্টা আঃ রব খান, চেয়ারম্যান, সালমা আহসান, সভাপতি, শাহ আলম, ক্যাশিয়ার, শামীম আহসান সহ সকলকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হোক। আসামীদের কাছে থাকা সতের হাজার কোটি টাকা সুষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে ফেরৎ দেওয়া হোক।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- আব্দুর রশিদ শেখ, মাওলানা রফিকুল ইসলাম, মো, এখলাছুর রহমান, আক্তারুজ্জামান, মো. আমিনুল ইসলাম, মো. মারুফ শিকদার ও রিপন শিকদার। তারা সবাই এহসান গ্রুপের প্রতরাণার শিকার।