চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃবিমানযোগে আমদানির পর কিছুটা কমে আসা পর পেঁয়াজের দাম গতকাল রবিবার আবার বেড়েছে। একদিনের ব্যবধানে উল্টো ৩০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে প্রতি কেজি পেঁয়াজের মূল্য। খুচরা বাজারে আগের দিন ১৮০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হওয়া দেশী পেঁয়াজ গতকাল বিক্রি হয়েছে ২২০ থেকে ২৫০ টাকায়। নগরীর সর্ববৃহৎ মোকাম বড় বাজার, সোনাডাঙ্গা পাইকারী বাজারসহ সর্বত্র সরবরাহ কম থাকায় দাম বাড়ছে বলে জানান বিক্রেতারা। এক সপ্তাহ আগে কোথাও কোথাও তিনশ’ টাকা পর্যন্ত উঠেছিল দেশী পেঁয়াজের দাম। অন্যদিকে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি কথা বলেন, আগামী দশদিনের মধ্যে (ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ) পেঁয়াজের বাজার স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
একাধিক বাজার ঘুরে দেখা যায়, খুচরা পর্যায়ে দেশী পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৫০ টাকা কেজি দরে। খুচরায় আফগান, তুরস্ক ও মিয়ানমারের পেঁয়াজ ১৮০ থেকে ২২০টাকা, মিসর ও চায়নার পেঁয়াজ ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে দেখা যায়। অন্যদিকে দেশী পেঁয়াজ বিক্রি হয় ২২০ থেকে ২৫০ টাকা কেজি দরে।
খুচরা বিক্রেতারা জানান, রবিবার ভোর থেকে সারাদিন বড় বাজার ও সোনাডাঙ্গাসহ পাইকারী বাজারে পেঁয়াজের কোনো সরবরাহ পাওয়া যায়নি। বড় বাজারে খুচরা কিনেছি ২২০ থেকে ২৪০ টাকা কেজি দরে অল্পকিছু পেঁয়াজ, যা ২৫০ টাকার নিচে বিক্রি করলে লোকসান হবে। ক্রেতা ধরে রাখার জন্যই পেঁয়াজ বিক্রি করছি, অন্যথায় পেঁয়াজই দোকানে রাখতো না বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা।
ময়লাপোতা মোড়স্থ কেসিসি সন্ধ্যা বাজারের সুমি স্টোরের মালিক জানান, তিনি আফগানস্থানের পেঁয়াজ ১৮০ টাকা ও দেশী পেঁয়াজ বিক্রি করছেন ২৩০ টাকা কেজি দরে। যেমন ক্রয়, তেমন বিক্রয় বলে মন্তব্য তার।
নগরীর তারেরপুকুর মোড়ের বিসমিল¬াহ্ স্টোরের মালিক মোঃ হালিম বলেন, আজ (রবিবার) বড় বাজারের কোন পাইকারের কাছে পেঁয়াজ পাইনি। বড় বাজারের খুচরা বিক্রেতার কাছ থেকে কয় কেজি পেঁয়াজ কিনেছি অনেক বেশি দামে, যা ২৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করলেও লোকসান হবে। তবুও কাস্টমার ধরে রাখার জন্যে কিছু পেঁয়াজ রাখতে হয়; তাই লোকসান করে হলেও রেখেছি।
বিমানযোগে বিভিন্ন দেশ থেকে পেঁয়াজ দেশে পৌঁছালেও ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে আসছে না পেঁয়াজের মূল্য। আমদানির পরিমাণ আরো বাড়লে দাম কমবে বলে আশা করছেন পাইকাররা। তবে কোন মন্তব্য করতে চান না তারা।
অন্যদিকে, বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়ায় অব্যাহত রয়েছে টিসিবি’র খোলা বাজারে ট্রাকসেলে পেঁয়াজ বিক্রি। দীর্ঘ সময় ধরে সারিবদ্ধ লাইনে দাঁড়িয়ে পেঁয়াজ কিনতে দেখা গেছে ক্রেতাদের। প্রতিদিন একেকটি ট্রাকযোগে এক হাজার কেজি পেঁয়াজ বিক্রি করছে। বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত টিসিবি’র বিক্রি অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লি¬ষ্টরা।
এদিকে গতকাল রবিবার রাজধানীর মতিঝিলে এফবিসিসিআই ভবনে বৈঠক শেষে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি কথা বলেন, আগামী ১০ দিনের মধ্যে আমদানি করা পেঁয়াজ দেশের বাজারে আসবে। তাছাড়া দেশীয় নতুন পেঁয়াজ এই সময়ের মধ্যে বাজারে উঠতে পারে। ফলে ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে পেঁয়াজের মূল্য স্বাভাবিক হয়ে আসবে।
দাম কমার যুক্তি তুলে ধরে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, জাহাজে করে আমদানি করা পেঁয়াজ আগামী ১০ দিনের মধ্যে দেশের বাজারে আসবে। এ পেঁয়াজ চট্টগ্রাম বন্দর পর্যন্ত আমদানি খরচ পড়ছে কেজি প্রতি ৩২ টাকা। তবে খুচরা বাজারে এটি সর্বোচ্চ ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হবে। ‘এছাড়া ডিসেম্বরের প্রথমেই বাজারে দেশি নতুন পেঁয়াজ আসতে শুরু করবে। সব মিলিয়ে বলতে পারি আগামী ১০ দিনের মধ্যে (ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ) পেঁয়াজের বাজার স্বাভাবিক হয়ে যাবে।