মোছা. মমেনা বেগম। বয়স ৭৪। ৩ মেয়ে, ২ ছেলে। স্বামী মারা গেছেন প্রায় ২০ বছর আগে। অনেক কষ্টে ছেলে-মেয়েদের বড় করে বিয়ে দিয়েছেন। তবে এখন আর শরীর চলে না। কাজও করতে পারেন না। এলাকার মানুষ বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করে। তা দিয়ে কোনো রকম সংসার চলে।
এদিকে তার মেঝো মেয়েকে বিয়ে দেওয়ার প্রায় ১০ বছর পর মেয়েটি মানসিক প্রতিবন্ধী হয়ে যায়। নাম তার নাছিমা খাতুন। মানসিক প্রতিবন্ধী হওয়ার কারণে শ্বশুর বাড়ির লোকজন তেমন যত্ন করে না। পড়ে তিনি তাকে নিজ বাড়িতে নিয়ে আসেন।
মমেনা বেগমের সংসারে মানসিক প্রতিবন্ধী মেয়ে, নাতীসহ বর্তমান সদস্য সংখ্যা ৯ জন। থাকার ঘর মাত্র ২টি। একটি বড় ছেলের, আর একটি ছোট ছেলের। ছোট ছেলে স্ত্রী, ছেলেকে নিয়ে জীবিকা নির্বাহের জন্য ঢাকায় থাকেন। তার থাকার ঘর নেই। ছোট ছেলে বাড়িতে আসলে মানসিক প্রতিবন্ধী মেয়েকে নিয়ে ঘরের বারান্দায় থাকতে হয়।
এই চিত্রটি দেখা গেছে দিনাজপুর জেলার বোচাগঞ্জ উপজেলার ২নম্বর ইশানিয়া ইউনিয়নের ৮নম্বর ওয়ার্ডের মহেশাইল গ্রামের হতদরিদ্র মমেনা বেগমের সংসারে।
সরেজমিনে গিয়ে হতদ্ররিদ্র মমেনা বেগমের বাড়ীতে গিয়ে দেখা যায়, চারদিকে খড়ের ছাউনি দিয়ে ঘেরা উপরে নিম্নমানের টীন দিয়ে তৈরি একটি ঘর। এটি তার ছোট ছেলের ঘর । এই ঘরে থাকেন তার মানসিক প্রতিবন্ধী মেয়েকে নিয়ে। আর একটি ঘর বড় ছেলের ঘর চারদিকে টিনের তৈরী স্ত্রী, দুই সন্তানকে নিয়ে থাকেন ।
হতদ্ররিদ্র মমেনা বেগমে বলেন, আমাদের কষ্ট বারে। খুবেই কষ্ট। বাড়ি নাই ঘরে নাই। বেটার ঘর থাকি। বেটা বাড়িতে আইলে বারান্দাত থাকি। মানসিক প্রতিবন্ধী মেয়ের কথা বলতেই কেঁদে ফেলেন। বলেন, বেটিটা পাগল। গায়ে কাপড় রাখে না। মানুষে সাহায্য করি দেয়। তা দিয়ে খাই। সরকার যদি আমাকে একটা ঘর দেয়। তাহলে আর কিছু চাই না।
তিনি আরো বলেন, এই জায়গাটার ছোট ছেলে ২.৫ শতাংশ নিছে। এই বাড়ির জমিটা ছাড়া আর কিছু নাই। আমার বয়সক ভাতা, মেয়ের প্রতিবন্ধী ভাতা পায়। এদিয়ে সংসার চলে।
বোচাগঞ্জ উপজেলার ২নম্বর ইশানিয়া ইউনিয়নের ৭, ৮, ৯নম্বর ওয়ার্ডের সংরিক্ষত মহিলা মেম্বার মোছা. ঝর্না বেগম বলেন, মমেনা বেগমের মেয়ের প্রতিবন্ধী কার্ড করে দিয়েছি। ওদের কেউ নেই। তারা খুব অসহায়। আমি প্রতিবন্ধী মেয়েটার জন্য সমাজসেবায় বাড়ির আবেদন করেছি।