চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃ বছর ঘুরে আবার আসার প্রতিশ্রুতি দিয়ে লাখো ভক্তকে ভারাক্রান্ত করে ঘোড়ায় চড়ে বিদায় নিলেন দেবী দুর্গা। এরই মধ্য দিয়ে শেষ হলো হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা।
মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) রাজধানীসহ সারাদেশে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান এই ধর্মীয় উৎসব।
দেবী বিসর্জনের পর সেখান থেকে শান্তিজল এনে তা রাখা হবে মঙ্গলঘটে, দুর্গা মায়ের সন্তানেরা তা ধারণ করবেন হৃদয়েও।
ঢাকের বাদ্য, শঙ্খ আর উলুধ্বনিতে শুক্রবার (৪ অক্টোবর) ষষ্ঠীতে শুরু হয় শারদীয় দুর্গাপূজা৷ পরের তিনদিন আনন্দের বর্ণিল ছটা ছড়িয়ে যায় সর্বত্র৷ আজ (মঙ্গলবার) সেখানে বাজলো বিষাদের করুণ সুর।
সন্ধ্যায় রাজধানীর বুড়িগঙ্গা তীরে ‘দুর্গা মা কি, জয়। মহামায়া কি, জয়।’ একের পর এক এমন জয়ধ্বনি, ঢাক-ঢোল, কাঁসর ও ঘণ্টা বাজিয়ে প্রতিমা বিসর্জনের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা হয়। বিকেলে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির থেকে শোভাযাত্রা করে শতাধিক প্রতিমা এখানে বিসর্জন দেওয়া হয়। এ সময় অনেক ভক্ত কান্নায় ভেঙে পড়েন। সৃষ্টি হয় হৃদয় বিদারক দৃশ্যের।
মঙ্গলবার সকাল ৯টা ৫৭ মিনিট থেকে দেবী বিসর্জনের লগ্ন শুরু হয়। ফলে সকাল থেকেই মণ্ডপে মণ্ডপে নামে ভক্তদের ঢল। এসময় মণ্ডপে মণ্ডপে ঢাকের বাদ্য, শঙ্খধ্বনি, মন্ত্রপাঠ, উলুধ্বনি, অঞ্জলি, নাচ, সিঁদুর খেলা হয়। মুখরিত হয়ে ওঠে মণ্ডপ প্রাঙ্গণ। ধান, দুর্বা, মিষ্টি আর আবির দিয়ে দেবীকে বিদায় জানান ভক্তরা।
একদিকে বিদায়ের সুর, অন্যদিকে উৎসবের আমেজ। ঢাকেশ্বরী মন্দির, রামকৃষ্ণ মিশন, কলাবাগান মাঠ, বনানী পূজামণ্ডপ, খামারবাড়ি পূজামণ্ডপ, তাঁতী বাজার, শাঁখারী বাজারসহ বিভিন্ন মণ্ডপে চলে আবির উৎসব।
সকালে দেওয়া হয় দর্পণ ঘট বিসর্জন। এমনই আয়োজনের মধ্য দিয়ে দুর্গতিনাশিনী দেবী বাবার বাড়ি থেকে বিদায় নিয়ে গেলেন স্বামীগৃহে। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস অসুর শক্তি বিনাশকারী দেবী বিদায় নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পৃথিবী থেকে সব অপশক্তির বিনাশ হবে। শান্তির সুবাতাস ছড়িয়ে যাবে সবখানে।
প্রতিমা বিসর্জনের সময় বুড়িগঙ্গার দুই তীরে হাজারো ভক্ত ও দর্শনার্থী ভিড় জমান। অনেকে প্রতিমা বিসর্জনের সময় নৌকায় করে নদীতে আনন্দ-উৎসব করেন। আবার অনেকে মায়ের বিদায়ের বিরহে কান্নায় ভেঙে পড়েন। এ উপলক্ষে ওয়াইজঘাট এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়।