চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃসাম্প্রতিক সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে যে শুদ্ধি অভিযান শুরু হয়েছে, তা শুধু আওয়ামী লীগের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয় বরং আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা এবং প্রশাসনের মধ্যে যারা অ’পকর্ম করছেন তাদের বি’রুদ্ধেও। এই সমস্ত অপতৎপরতাকে যারা লালন পালন করছেন এবং আশ্রয় প্রশ্রয় দিচ্ছেন, তাদের বি’রুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার যারা ক্যসিনো বাণিজ্যে মদদ দিয়েছেন, তাদের বি’রুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আইজিকে নির্দেশ দিয়েছেন।
একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, এখন প্রশাসনের মধ্যেও যারা বিভিন্ন অপকর্মে জড়িত তাদের তালিকা প্রণয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রী গো’য়েন্দা সংস্থাগুলোকে নির্দেশ দিয়েছেন। এক্ষেত্রে ৫ ধরনের অ’পকর্মে জড়িত ব্যক্তিদের তালিকা তৈরী করা হবে।
১. প্রশাসনের বিভিন্ন পদে থেকে যারা দু’র্নীতি-আর্থিক লেনদেন করছেন তাদের তালিকা তৈরী করা হবে। দেখা গেছে প্রশাসনের অনেক কর্মকর্তাও অনিয়ম এবং দু’র্নীতিতে ফুলে ফেপে উঠেছেন। এদের সঙ্গে এই সমস্ত অ’পকর্মকারী এবং টে’ন্ডারবাজদের যোগসাজশ রয়েছে। যে সমস্ত টে’ন্ডারবাজ অ’পকর্মকারীরা ফুলে ফেপে উঠেছে তাদের ভাগ প্রশাসনের এই সমস্ত কর্মকর্তারাও পাচ্ছে। কাজেই দু’র্নীতিবাজ যারা রয়েছে, তাদের তালিকা তৈরীর জন্য গো’য়েন্দা সংস্থা কাহ করছে।
২. প্রশাসনের অনেক কর্মকর্তাই টেন্ডার এবং বিভিন্ন ক্রয় প্রক্রিয়ায় অনিয়ম করছেন। প্রশাসনের কিছু কর্মকর্তাই একটি মহলকে কাজ পাইয়ে দেওয়ার জন্য তৎপর রয়েছে। যার কারণে টেন্ডারগুলোতে অনিয়ম হচ্ছে এবং টেন্ডারের মূল্য ফুলে ফেপে উঠছে। প্রশাসনের যোগসাজশ ছাড়া বালিশ কে’লেঙ্কারি বা পর্দা কেলেঙ্কারি সম্ভব নয় বলে মনে করছেন সরকারী নীতিনির্ধারকরা। তাই প্রশাসনে যারা এসব কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত তাদের বি’রুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
৩. সাম্প্রতিক সময় প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তার বি’রুদ্ধে নারী নি’র্যাতন, নারী কেলেঙ্কারি এবং যৌ’ন হ’য়রানির অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে। এই সমস্ত প্রশাসনের কর্মকর্তাদের বি’রুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং এই ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট তালিকা তৈরীর জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে এবং সে অনুযায়ী কাজ করা হচ্ছে।
৪. প্রশাসনের অনেকেই ব্যবসা বাণিজ্যসহ বেশকিছু অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত আছে। প্রশাসনে থেকে যা করা অনৈতিক। সরকারী চাকরি করেও তারা অ’বৈধ ব্যবসা বাণিজ্য করে সম্পত্তির পাহাড় গড়েছে। তালিকা তৈরী করে তাদের বি’রুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
৫. প্রশাসনের অনেক কর্মকর্তারা নিয়োগ বাণিজ্যসহ নানা রকম জালিয়াতির সঙ্গে নিজেদেরকে জড়িয়ে ফেলছেন। গো’য়েন্দা সংস্থাগুলোকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তাদের তালিকাও প্রণয়ন করার জন্য।
সরকারী সূত্রগুলো বলছে যে, আওয়ামী লীগের শুদ্ধি অভিযানের পর ধাপে ধাপে সর্বক্ষেত্রে এসব অভিযান পরিচালনা করা হবে। দু’র্নীতিবাজ যেপদেই থাকুক না কেন, যত বড় কর্মকর্তাই হোক না কেন, তার বি’রুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
সরকারের একজন উর্ধতন নীতি নির্ধারক বলেছেন, এককভাবে জি কে শামীম বা খালেদ মাহমুদ ভুঁইয়া গড়ে উঠতে পারে না। তাদের সঙ্গে যারা যেভাবে যুক্ত আছেন তা খতিয়ে দেখা হবে। পাশাপাশি প্রশাসনের মধ্যেও যেসমস্ত দু’র্নীতিবাজ, ঘুষখোর আমলা বা অন্যন্য কর্মকর্তা রয়েছেন। চিহ্নিত করে তাদেরকেও দৃষ্টান্তমূলক শা’স্তি দেওয়া হবে। দু’র্নীতির বি’রুদ্ধে সরকার যে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করেছে, সেই নীতির আওতায় সবাইকেই আনা হবে। কাউকেই বাদ দেওয়া হবে না।