চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃবিশ্বব্যাপী পরিবেশ বিপর্যয় ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে প্রকৃতিকে রক্ষায় সারাদেশে বৃক্ষরোপন কর্মসূচি পালন করছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে সংগঠনের শীর্ষ দুই নেতা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।
এ কর্মসূচির আওতায় সারাদেশে ছাত্রলীগের প্রত্যেকটি কমিটির প্রতি বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি সফল করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংগঠনের শীর্ষ নেতারা। এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন, কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দসহ ছাত্রলীগের বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় বলেন, জলবায়ু সহিষ্ণু বাংলাদেশ গঠনে নেতাকর্মীদের সারাদেশে গাছ লাগাতে হবে। বিভিন্ন সময় নানা অসাধু গোষ্ঠীর কারণে দেশের বিভিন্ন জায়গায় গাছ কেটে ফেলায় পরিবেশে এর প্রভাব পড়েছে। এটা কাটিয়ে উঠতে সারাদেশে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের বনজ, ফলজ ও ভেষজ গাছ লাগাতে হবে।
তিনি বলেন, দেশরত্ন শেখ হাসিনার নির্দেশে আমরা সারাদেশে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়িয়েছি। ঘূর্ণিঝড় আম্ফান ও করোনায় ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রাণ সহায়তা দিয়েছি। এছাড়া নেত্রীর নির্দেশে জলবায়ু সহিষ্ণু বাংলাদেশ বিনির্মাণে কাজ করে যাচ্ছি। ছাত্রলীগের প্রতিটি নেতা-কর্মী সারাদেশে বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে সবুজ বাংলাদেশ বিনির্মাণ করে আমরা প্রমাণ করব আমরাই নেত্রীর ভ্যানগার্ড।
এসময় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য বলেন, ছাত্রলীগ শুধু ছাত্র সংগঠনই নয়, এটা একটি মানবিক সংগঠন। বন্যা কিংবা ঝড়, সব সময় মানুষের দুর্দিনে পাশে দাঁড়ায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মী। বিপন্ন পরিবেশ রক্ষায় আমাদের সবুজের বনায়ন গড়ে তুলতে হবে। সরকারিভাবে চারাগাছ লাগানো হচ্ছে। সেই সঙ্গে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা রাস্তার পাশে, বাড়ির আঙ্গিনায়, স্কুল-কলেজ চত্বরসহ আশপাশ এলাকায় বৃক্ষরোপণ করছে। এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে হবে।
তিনি বলেন, কেন্দ্রীয়ভাবে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আজকের পর থেকে সারাদেশে এ কর্মসূচি সফল করতে ছাত্রলীগের সকল নেতাকর্মী মাঠে নেমে কাজ করবে।
সরকার ও ছাত্রলীগের পাশাপাশি ব্যক্তি ও সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি- পেশার মানুষকে বৃক্ষরোপণে এগিয়ে আসতে হবে বলেও মন্তব্য করেন ছাত্রলীগের এই শীর্ষ নেতা।
পরিবেশ রক্ষায় কাজ করা ছাড়াও গত মাসে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় দেশের উপকূলীয় ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয় স্থানীয় ছাত্রলীগের সব ইউনিট।
এছাড়াও করোনা পরিস্থিতিতে ক্ষেতের ধান নিয়ে বিপাকে পড়া কৃষকের ধান কেটে দেয় ছাত্রলীগ। এ সময় সারাদেশের প্রায় প্রত্যেকটি উপজেলায় একযোগে ধানকাটা কর্মসূচি সফল করে ছাত্রলীগের প্রত্যেকটি ইউনিট।
এর আগে করোনা পরিস্থিতিতে সরকার ঘোষিত ছুটির সময় কর্মহীন অসহায় জনতার পাশে দাঁড়ায় ছাত্রলীগ। হ্যান্ড স্যানিটাইজার, খাবারসহ নানা সহযোগিতা করে জনগণের ঘরে ঘরে আস্থার বার্তা ছড়িয়ে দেয় সংগঠনটি।
ছাত্রলীগের সূত্র জানায়, বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার খবরের পরপরই সাধারণ জনগণের সুরক্ষায় রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণ শুরু করা হয়। পরে দেশে করোনাভাইরাস ধরা পড়ার পরে সরকারের নির্দেশে জনসমাগম থেকে বিরত থাকার আহবান জানানো হলে হতদরিদ্র মানুষদের পাশে দাঁড়িয়ে খাদ্য সহযোগিতা দেয়া শুরু করে ছাত্রলীগ।
একইসঙ্গে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধ না করা পর্যন্ত ছাত্রলীগের এসব কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। তারা জানান, দেশের প্রায় ৬৪ জেলাতেই প্রায় কয়েক লাখ মানুষের মাঝে নানা সহযোগিতা নিয়ে পাশে দাঁড়িয়েছে নেতাকর্মীরা। করোনাভাইরাসের এ দুর্যোগ যতদিন চলতে থাকবে ততদিন ছাত্রলীগের সকল কার্যক্রম চলমান থাকবে।
নেতারা জানান, কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশে ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা পর্যায়ে ছাত্রলীগের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা জনগণের পাশে থেকে কাজ করছে। এছাড়া শীর্ষ নেতারা এসব কার্যক্রম চলমান রাখার নির্দেশও দিয়েছেন।