সারা দেশের ন্যায় আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে উপকূলীয় দাকোপ এবং বটিয়াঘাটা উপজেলা নিয়ে গঠিত খুলনা-১ আসনে প্রচার প্রচারণা শুক্রবার শেষ হয়েছে। সংখ্যালঘু আধ্যাষিত এই এলাকা আওয়ামীলীগের রিজার্ভ আসন হিসাবে পরিচিত। এবারের নির্বাচনে এ আসনে ৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। কিন্তু এ নির্বাচনে প্রার্থী হয়েও ভোটের মাঠে প্রচারনায় দেখা যায়নি জাপা মনোনীত (লাঙ্গল) প্রতিকের কাজী হাসানুর রশিদকে। এমনকি তার কোন পোষ্টার লিফলেটও নির্বাচনী এলাকায় চোখে পড়েনি। আর প্রচার প্রচারনায় এগিয়ে আওয়ামী লীগের মনোনীত (নৌকা) প্রতীকের প্রার্থী সাবেক সংসদ ও জেলা আ‘লীগের সদস্য ননী গোপাল মন্ডল।
জানা গেছে, জাতীয় সংসদের ৯৯ তথা উপকূলীয় দাকোপ উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা এবং বটিয়াঘাটা উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত খুলনা-১ আসন। এ আসনটি বরাবরই নৌকার ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত থাকলেও নানা কারণে দীর্ঘদিন যাবৎ কাংক্সিক্ষত উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত রয়েছে। অথচ ১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনা এই আসন থেকে বিজয়ী হয়ে দীর্ঘ ২১ বছর পর প্রথমবারের মত প্রধানমন্ত্রী নির্বাচীত হন। এ নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী সাবেক সাংসদ সদস্য ননী গোপাল মন্ডল ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগের সহযোগীতা নিয়ে ব্যাপক গনসংযোগ সভা সমাবেশ করেছেন। দলের কেউ এখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী না হওয়ায় অসম প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নৌকার বিজয় অনেকটা সুনিশ্চিত রয়েছে। সারা দেশের ন্যায় আগামী ৭ জানুয়ারী এ আসনটির ১১০টি কেন্দ্রের স্থায়ী ৬৩৪টি ও অস্থায়ী ৩৬টি মোট ৬৭০টি ভোটকক্ষে ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হবে।
খুলনা শহরের প্রবেশদ্বার গল্লামারী হতে সুন্দরবন পর্যন্ত এ আসনের মোট ভোটার ২ লক্ষ ৯০ হাজার ২৬৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১ লক্ষ ৪৪ হাজার ৫৬৭ এবং মহিলা ১ লক্ষ ৪৫ হাজার ৬৯৮ জন। এ নির্বাচনে অন্যান্য প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীরা হলেন তৃণমূল বিএনপির এ্যাড. গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক প্রতীক (সোনালী আঁশ), স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক সচীব প্রশান্ত কুমার রায় প্রতীক (ঈগল)। গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক মাঝে মধ্যে দু’টি উপজেলা সদরে ঝটিকা প্রচারনা করেছেন। সে তুলনায় নিশ্চিত বিজয় জেনে ও নৌকার প্রার্থী ননী গোপাল মন্ডল উৎসব মূখর প্রচারনায় ব্যস্ত সময় পার করেছেন। কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি বাড়িয়ে নৌকার বিপুল বিজয় নিশ্চিত করতে আওয়ামী লীগের এই প্রচেষ্টা বলে জানান দাকোপ উপজেলা আ‘লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অসিত বরণ সাহা ও সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এ্যাডঃ জি.এম কামরুজ্জামান। নৌকার প্রার্থী ইতোমধ্যে দু’টি উপজেলার সকল ধর্মের মানুষের আস্থার প্রতিক হয়ে উঠেছেন। বাধ্যর্কের কারণে বর্তমান সাংসদের জনবিচ্ছিন্নতা এবং অতীতে দায়িত্বে থাকা অবস্থায় এলাকায় দৃশ্যমান কিছু উন্নয়ন করায় ননী গোপাল মন্ডলের জনপ্রিয়তা এখন আকাশচুম্বি। তার প্রতিটি জনসভায় উৎসব মূখর জনতার ঢল নেমেছে।
নির্বাচনে নৌকার সাথে শেষ পর্যন্ত স্বতন্ত্র প্রার্থী প্রশান্ত রায়ের ঈগল প্রতিকের প্রতিদ্বন্দি¦তা হতে পারে বলে ধারনা করা হচ্ছে। তবে ফলাফলে প্রভাব সৃষ্টি করার মত শক্ত প্রতিদ্বন্দি¦তা গড়ে ওঠেনি। সাবেক সংসদ ননী গোপাল মন্ডল বলেন, তিনি নির্বাচীত হলে অবহেলিত এই জনপদের যোগাযোগ, কৃষি এবং সম্ভবনাময় সুন্দরবন কেন্দ্রিক পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তুলবেন। একই সাথে বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান, শিপসা নদীতে নৌ বন্দর এবং পশুর নদী তীরের মোংলা বন্দরের সম্প্রসার করবেন।