নারী ও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রীদের টার্গেট করে প্রেমের ফাঁদে ফেলত সাগর মিজি নামের এক যুবক। পরে তাদের বিভিন্ন হোটেল ও গোপন জায়গায় নিয়ে ধর্ষণ করত। এভাবে প্রেম করে নারীদের ধর্ষণ করা ছিল তার নেশা।
কক্সবাজারের রিসোর্টে চাঞ্চল্যকর নারী হত্যার প্রধান আসামি সাগর মিজিকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। এ বিষয়ে শনিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে কাওরানবাজারে অবস্থিত র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান র্যাব-১০ এর অধিনায়ক (সিও) অতিরিক্ত ডিআইজি মো. মাহফুজুর রহমান।
মাহফুজুর রহমান বলেন, গত ১৮ সেপ্টেম্বর সাগর কক্সবাজার কলাতলী এলাকার ‘আমারী রিসোর্টের’ ১০৮ নম্বর রুম ভাড়া নেন। ভাড়া নিয়ে হোটেল কর্তৃপক্ষকে তিনি জানান, ২০ সেপ্টেম্বর তার স্ত্রী ঢাকা থেকে আসবেন তখন তাকে একটি ডাবল রুম দিতে হবে। সে অনুযায়ী গত ২০ সেপ্টেম্বর সাগর তার স্ত্রীর পরিচয়ে এক নারীকে (২৬) রিসোর্টে নিয়ে আসে এবং ৪০৮ নম্বর রুমে উঠেন। পরে ২১ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টায় হোটেল কর্তৃপক্ষ ৪০৮ নম্বর কক্ষে কোনো সাড়া-শব্দ না পেয়ে তাদের মিস্ত্রিকে ডাকে। পরে মিস্ত্রি এসে কক্ষের দরজা ভাঙে। ওই রুমে ওই নারীর মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠায় বলে জানা যায়। এ ঘটনায় ২২ সেপ্টেম্বর কক্সবাজার সদর থানায় একটি মামলা হয়।
সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুর পৌনে ১২টায় র্যাব-১০ এর একটি দল রাজধানীর সায়েদাবাদ বাসস্ট্যান্ড টোলপ্লাজা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে মো. সাগর মিজিকে (২৪) গ্রেফতার করে। এ সময় তার কাছ থেকে তিনটি মোবাইল ফোন ও ১৫ হাজার টাকা জব্দ করা হয়েছে।
হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে সাগর র্যাবকে জানায়, পূর্ব পরিচয়ের সূত্র ধরে নিহত নারীকে স্ত্রী পরিচয়ে কক্সবাজার ‘আমারী রিসোর্টে’ এ নিয়ে যায় সে। রিসোর্টের ৪০৮ নম্বর রুমে নিয়ে ভিকটিমকে ধর্ষণ করে সে। একপর্যায়ে সাগরের সঙ্গে ভিকটিমের ধস্তাধস্তি শুরু হয়। ধস্তাধস্তির সময় সাগর ভিকটিমের গলা চেপে ধরে দেওয়ালের সঙ্গে ধাক্কা দিলে ওই নারী মেঝেতে পড়ে যায়। তখন আবার ভিকটিমের গলা চেপে ধরে সে এবং পাশে থাকা গ্লাস দিয়ে দুই/তিনবার মাথায় আঘাত করে হত্যা করে। পরে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় সাগর।
মাহফুজুর রহমান বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সাগর জানায়, সে বিভিন্ন এলাকায় একাধিক নারীকে মিথ্যা প্রেমের ফাঁদে ফেলে অনৈতিক কর্মকাণ্ডে বাধ্য করেছে। এছাড়া সে বিভিন্ন স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্রীদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে ঘুরতে নিয়ে কৌশলে ধর্ষণ করে আসছিল।