ফকিরহাটের পানচাষীরা ভাল নেই।পানের দাম হঠাৎ কমে যাওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছে চাষীরা। ধারদেনা করে পানের বরজ গড়ে ঋন পরিশোধ করা তো দূরের কথা,পরিবারের রুটি রুজি যোগাড় করতেই তারা হিমশিম খাচ্ছেন। উৎপাদন ভালো হলেও দামের বাজার মন্দা হওয়াকেই দুষছেন পানচাষীরা। ফকিরহাট উপজেলায় প্রায় ৪৫০ হেক্টর জমিতে পানচাষ এবং তিন হাজারের অধিক পানচাষী রয়েছে। পানের বরজই তাদের একমাত্র আয়ের উৎস।এই পান চাষের সাথে জড়িত আরো বেশ কয়েক হাজার মানুষের রুজি-রোজগার। সিডর, আইলা,আম্পানের মত ঝড়, বন্যা বা অতিবৃষ্টি অনাবৃষ্টির মত নানা প্রতিকুলতার ক্ষয়ক্ষতি সামলে বারবার নতুন স্বপ্নে ঘুরে দাড়িয়েছে তারা। সেই তাদের বুনানো স্বপ্ন ভেঙে আজ দামের কাছে।উৎপাদনে ভরপুর পানের বরজে এখন শুধুই কান্না।পানচাষীরা এখন রীতিমতো হতাশ।পানের বরজই এখন তাদের গলার ফাঁস।পান তাদের চোখের কাটা। টানা পড়তি দামের পর গেলো বছর পানের ভালো ফলন হওয়ায় ও ভালো দাম পাওয়ায় চাষীরা অধিক আগ্রহেই ঝুঁকে পড়েছিলেন পান চাষে। কিন্তু এই সময়ে এসে পানের বরজ নিয়ে পড়ে গেছেন বিপাকে । উপজেলার জাড়িয়া গ্রামের পানচাষী হাফেজ মোঃ নজরুল ইসলাম জানান,ফলন যতই ভালো হোক না কেন,দাম না থাকায় এ করে আর সংসার চালানো তো দুরের কথা খরচও উঠবেনা।বাঁচতে হলে বরজ গুটিয়ে অন্য কিছু করতে হবে।১০০ টাকা বিড়া দরের পান এখন বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকায়। লাভতো হচ্ছেইনা বরং খরচের টাকাও উঠছেনা। পানের বাজারে ঘুরে চাষীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে , এ বছর পানের আশাতীত উৎপাদন হয়েছে। গত বছর দাম বাড়তি যাওয়ায় পানে লাভ হয়েছে। কিন্তু দাম না থাকাতে এবার সব ধরা। এছাড়া চলতি বছর কৃষকরা অধিক পরিমাণে পানের বরজ গড়েছে। বাম্পার ফলন হলেও দাম পড়ে যাওয়ায় তাই লোকসান গুণতে হচ্ছে সবার। ফকিরহাট থেকে প্রতিনিয়ত লাখ লাখ টাকার পান দেশের বিভিন্ন স্হানে চালান হয়।এখানকার পান রপ্তানি হয় বিদেশেও।করোনার থাবা সেখানেও।কোটি টাকার ক্ষতি নিয়ে কোমর ভাঙা পানচাষীরা কোন রকমে টিকে আছে। ফকিরহাট উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ নাছরুল মিল্লাত বললেন,বর্তমানে পানচাষীরা আছেন চতুর্মূখী সংকটে। রপ্তানিজনিত সমস্যা কোনো একক সমস্যা নয়, দেশের ভেতরেও পানের বাজারজাতকরনে বেগ পেতে হয়েছে। কিছুদিন ধরে বৃষ্টিজনিত কারনে যোগাযোগে বেশ সমস্যা গেছে, দেশের সব বাজারে সময়মত পান পৌছাতে পারেনি।চাহিদার তুলনায় উৎপাদন বেশী,আপাতত ব্যবহার কমে যাওয়া,বাজার ব্যবস্হাপনায় ঘাটতিসহ নানা কারনে পানের দাম কম।তবে আগামী দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে পানের দাম উর্ধমূখী হতে থাকবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন ।