আসাদুজ্জামান আসাদ:: ফকিরহাটে প্রথমবারের মতো বানিজ্যিক ভাবে রঙিন ফুলকপির চাষ করে সফলতা পেলেন কৃষক শ্যামল পাল। ভালো ফলনের পাশাপাশি রঙিন ফুলকপির ভালো দামের কারণে কৃষক শ্যামলের মত রঙিন ফুলকপি চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন আরো অনেক কৃষক। রঙিন ফুলকপির সাফল্যে যেমন খুশি কৃষক, তেমনি খুশি কৃষি অফিস।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশে আগে থেকেই রঙিন ফুলকপি চাষ শুরু হয়েছে। তবে ফকিরহাটে এবারই প্রথম বানিজ্যিক ভাবে রঙিন ফুলকপির চাষ হচ্ছে।
ভারত থেকে আনা এই ফুলকপির বীজ থেকে উৎপন্ন চারা উপজেলার বেতাগা ইউনিয়নের মাসকাটা ব্লকে কৃষক শ্যামলকে দিয়ে ৫০ শতাংশ জমিতে চাষ করানোর মধ্য দিয়েই শুরু হলো এ অগ্রযাত্রা। চারা ছাড়াও ফুলকপি চাষের জন্য প্রয়োজনীয় জৈব সার সহ নিবিড় পরিচর্যায় পাশে থেকে পরামর্শ দিয়ে তাকে সহযোগিতা করেছে কৃষি অফিস ।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ সোলায়মান আলী মন্ডল ও প্রদীপ কুমার মন্ডল জানান, চারা রোপণের পর থেকে আড়াই মাসের মধ্যে জমি থেকে রঙিন এ ফসল ফুলকপি জমি থেকে তোলা যাচ্ছে। এই ফুলকপি চাষে রাসায়নিক সার ব্যবহার করা হচ্ছে না। উৎপাদন যেমন ভালো তেমনি বাজারে যেখানে এখন একটি সাদা ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ২৫/৩০ টাকায়, সেখানে এই রঙিন ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ৫০/৬০ টাকায়।
কৃষক শ্যামল পাল বলেন, আমি প্রতি বছর শীতকালে নানান সবজির চাষ করি।সাদা ফুলকপির পাশাপাশি এবার স্থানীয় কৃষি বিভাগের পরামর্শ ও সহযোগিতায় ৫০ শতক জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে হলুদ ও গোলাপি রঙের ফুলকপি চাষ করেছি। ভালো ফলন পেয়েছি।দাম সাদা ফুলকপির দিগুণ। এলাকার মানুষ আগ্রহী হয়ে ভালো দাম দিয়ে ক্ষেত থেকেও এই ফুলকপি কিনে নিচ্ছেন। প্রতিদিন বেতাগা বাজারে আমি ফুলকপি নিই বিক্রি করতে। বাজারে নেওয়া মাত্রই বিক্রি হয়ে যাচ্ছে এসব রঙিন ফুলকপি। মাঝারি আকৃতির একেকটি ফুলকপি ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।বড়গুলো ৬০/৭০ টাকা পর্যন্ত। ভালো ফলন ও সাধারণ ফুলকপির চেয়ে বেশি দাম পাওয়ায় উৎসাহী হয়ে আগামী মৌসুমে আরো জমিতে এই রঙিন ফুলকপি চাষ করার আশা করছেন শ্যামল পাল।
প্রথমবারের মতো রঙিন ফুলকপি চাষে শ্যামল পালের সাফল্য স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।
তার এই রঙিন ফুলকপির সৌন্দর্য দেখতে প্রতিদিনই ভিড় করছেন কৃষকসহ অনেক উৎসুক মানুষ। তাদের কেউ ফুলকপি কিনছেন, কেউ চাষের বিষয়ে পরামর্শ নিচ্ছেন শ্যামল পালের কাছ থেকে ।
ফকিরহাট উপজেলা কৃষি অফিসার শেখ সাখাওয়াত হোসেন বলেন, পতিত জমিতে কৃষি উৎপাদন সফলতার পাশাপাশি কৃষিতে বৈচিত্র্যময় উৎপাদন বাড়ানোর জন্য ফকিরহাটে প্রথমবারের মত রঙিন ফুলকপি পরীক্ষামূলকভাবে চাষের উদ্যোগ নেওয়া হয়। বেতাগা ইউনিয়নের মাসকাটা ব্লকে কৃষক শ্যামল পালকে কৃষি অফিস থেকে ফুলকপির চারা, জৈব সার সহ প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করা হয়।
এটি স্থানীয় মাটি ও আবহাওয়ায় চাষে কতটা উপযোগী বা কেমন ফলন হয় আমরা তা দেখতে চেয়েছিলাম। আমরা সফল হয়েছি। তিনি আরো বলেন, সাদা ফুলকপির চেয়ে রঙিন ফুলকপিতে পুষ্টিগুণ বেশি। দেখতেও সুন্দর। তার মতে, সাধারণ ফুলকপি চাষের যে পদ্ধতি ওই একই পদ্ধতিতে রঙিন ফুলকপি চাষ হয়। খরচ ও পরিশ্রম একই। শুধু জৈব সার ব্যবহার করেই এই ফুলকপি চাষ করা যায়।