আসাদুজ্জামান আসাদ:: বাগেরহাট জেলার ফকিরহাটে বোরো মৌসুমকে সামনে রেখে কৃষকের ব্যস্ততা শুরু হয়েছে। কৃষকের এ ব্যস্ততা ধান ফসলের মাঠে।উপজেলার যেদিকেই চোখ যায় সেদিকেই কৃষকের ব্যস্ততা চোখে পড়ছেই। কৃষকের ব্যস্ততা কোথাও জমি তৈরীতে, কোথাও ধানের চারা সংগ্রহে, আর কোথাওবা রোপণের মাঝে। জেঁকে বসা শীতের জড়তা কাটিয়ে তাই ধানী কৃষকের এখন সময় কাটছে ধান ফসলের কাদা পানিতে। কুয়াশা মাখা কাকডাকা ভোর থেকে সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত পর্যন্ত লেগে থাকছে কৃষক ধান ফসলের মাঠে।
ফকিরহাট উপজেলায় প্রচুর পরিমানে ধানের আবাদ হয়ে থাকে। মৌসুমের এ সময় তাই দম ফেলবার যেন ফুরসত নেই কারোর কাছে। উপজেলায় এ বছর সাড়ে আটহাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হচ্ছে। বিগত মৌসুমের চেয়ে এ বছর বেশি জমিতে বোরো ধানের আবাদ হচ্ছে বলে উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানিয়েছে। মুলত গেলো মৌসুমে বোরো ধানের বাম্পার ফলন,ভালো দাম পাওয়া, এবং উৎপাদন উপকরণের সহজ প্রাপ্তিতে কৃষক কোমর বেঁধে হাসিমুখে নেমেছে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতার যুদ্ধে। এ বছর প্রায় পাঁচ হাজার কৃষক প্রনোদনার বীজ-সার সুবিধা পেয়েছে বলেও নিশ্চিত করেছে উপজেলা কৃষি অফিস।
উপজেলার সদর ইউনিয়নের পাগলা দেয়াপাড়া, শ্যামনগর, আট্টাকী, কাঁঠালতলা, পাইকপাড়া, জাড়িয়া সহ বিভিন্ন এলাকায় বোরো মৌসুমের ব্যস্ততা যেমন চোখে পড়ার মত তেমনি আশা জাগানিয়া। উপজেলার অন্যান্য ইউনিয়নেও একই রকমের তোড়জোড় ব্যস্ততা সমানতালে শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে। জাড়িয়া গ্রামের কৃষক লুৎফর জানান, আমি আগেভাগেই চাষবাসের ব্যাবস্থা করে রোপণ শেষ করেছি।লুৎফর নিজের জমির পাশাপাশি অন্যের জমিতেও ধান লাগাচ্ছেন এবার। গত মৌসুমে বোরো চাষে লাভবান হওয়ায় শীতের মাঝে দিনরাত খাটুনির পরও কৃষক লুৎফরের মুখে চোয়াল জোড়া হাসি।
উপজেলা কৃষি অফিসার সেখ সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ফকিরহাটে দিন দিন কৃষক বোরো ধানের আবাদে আগ্রহী হয়ে উঠছে। অনুকূল আবহাওয়া, বীজ, সার সহ সরকারি কৃষি সেবা ও পরামর্শে কৃষক উৎসাহী। চলতি বছর উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কৃষক সঠিক সময়ে বীজ ও সার সুবিধা পেয়েছে। আমরা সবসময়ই কৃষকের সংগে আছি। আশাকরি ফকিরহাটে বোরো ধানের আশানুরূপ ফলন হবে।
ফকিরহাট উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান স্বপন দাশ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা হলো এক ইঞ্চি পতিত জমিও ফেলে না রেখে তার সদ্ব্যবহার করতে হবে। আমাদের সেদিকে খেয়াল রেখে উৎপাদনে এগোতে হবে। আমাদের কৃষকেরা সেদিকে খেয়াল রেখেই কৃষি উৎপাদনে এগিয়ে যাচ্ছে।এ সরকারের পদ্মা ব্রীজ বাস্তবতায় কৃষকেরা তাদের উৎপাদিত ফসলের ভালো দাম পাচ্ছে। পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ ও প্রনোদনাও সঠিকভাবে কৃষকের কাছে পৌঁছেছে।আমি আশা করি সরকারের যে উদ্যোগ তাতে ফকিরহাটে বোরো উৎপাদনে যে প্রত্যাশা তা কৃষকেরা পূরন করবে।