চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃনগরীর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ’র এক ছাত্রী (২৮) ধর্ষণের শিকার হয়েছে। তবে এবারের অভিযুক্ত হচ্ছেন সশস্ত্র বাহিনীর একজন সদস্য। তার বিরুদ্ধে নগরীর সদর থানায় মামলা হয়েছে। তবে পুলিশ আইনী জটিলতার কারণে আসামিকে আটক করতে পারেনি। বিবিএ’র ছাত্রী গর্ভবতী অবস্থায় রয়েছেন। তিনি তার সন্তানের পিতৃত্বের দাবি করেন। এর আগে একই বিশ্ববিদ্যালয়ের এলএলবি’র ছাত্রীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণের অভিযোগের ঘটনায় সম্প্রতি নগরীতে আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শিঞ্জন রায় এ ঘটনায় আটকের পর বর্তমানে রিমান্ডে আছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, বরগুনা জেলার পূর্ব কেওড়া বুনিয়ার গোলাম কবির ও তহমিনা কবিরের ছেলে তানজিল ইসলাম (২৫) বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ’র ছাত্রীকে একাধিকবার ধর্ষণ করে। এ ঘটনায় ছাত্রী বাদী হয়ে চলতি বছরের ১৯ জুন খুলনা সদর থানায় তানজিলসহ তার বাবা-মাকে আসামি করে মামলা করেন। সম্প্রতি কর কমিশনারের ছেলের ধর্ষণের ঘটনা মিডিয়ায় প্রকাশ হওয়ার পর বিবিএ’র ছাত্রী মিডিয়ার স্মরণাপন্ন হয়েছেন। মামলার এজাহারে তিনি উল্লেখ করেছেন, তানজিল নৌবাহিনীর সৈনিক এবং বর্তমানে কোস্ট গার্ড বিসিজি বেইজ মোংলাতে কর্মরত। ২০১৭ সালে তার সাথে বিবিএ’র ছাত্রীর ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচয় হয়। বছর খানেক প্রেম করার পর ২০১৮ সালের ফেব্র“য়ারি মাসে তানজিল বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে খুলনার সাত রাস্তা মোড়ের টাইটান আবাসিক হোটেলে নিয়ে একাধিক সময়ে ধর্ষণ করেন। সর্বশেষ চলতি বছরের ২২ এপ্রিল একই হোটেলের চতুর্থ তলার ৪০৯ নম্বর কক্ষে নিয়ে ধর্ষণ করার পর বিবিএ’র ছাত্রী গর্ভবতী হয়ে পড়ে। বিষয়টি তানজিলকে জানানো হলে সে বিয়ে করতে পারবে না বলে জানান। পরবর্তীতে তানজিলের বাবা ও মাকে বিষয়টি জানান ঐ ছাত্রী। তবে ছাত্রীর সাথে তানজিলের বাবা-মা খারাপ ব্যবহারের পাশাপাশি হুমকিও দেয়।
এ বিষয়ে বিবিএ’র ছাত্রী এ প্রতিবেদককে জানান, তানজিল বিবাহিত এবং কন্যা সন্তানের বাবা। বিষয়টি গোপন করেই আমার সাথে মিথ্যা প্রেমের অভিনয় এবং বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করেছে। আমি এখন ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। আমার সন্তানের পিতার পরিচয় দরকার। বিষয়টি তার বাবা ও মাকে জানানোর পর তারা আমার সাথে খুবই খারাপ ব্যবহার ও হুমকি দিয়েছে। এমনকি টাকার বিনিময়ে বিষয়টি সমাধান করার চেষ্টাও করেছে। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের পাশাপাশি সন্তানের পিতৃত্বের দাবি জানাই।
খুলনা সদর থানার এস আই শাহনেওয়াজ বলেন, ছাত্রীটি তিনজনকে আসামি করে মামলা করেছে। মামলার ১ নম্বর আসামি বর্তমানে কোস্ট গার্ডে কর্মরত। এ ঘটনায় তাকে ক্লোজড করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে নৌ-বাহিনী অভ্যন্তরীণ তদন্ত করছে। আসামির বাবাও সরকারি চাকুরি করে। সেখানেও অফিসিয়াল ভাবে মামলার বিষয়টি জানানো হয়েছে। এখনও কাউকে আটক করা হয়নি।
সদর থানার ওসি তদন্ত সুজিৎ মন্ডল জানান, এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কমকর্তা নৌ-বাহিনীকে কয়েক দফা চিঠির মাধ্যমে জানিয়েছেন। তাদের অভ্যন্তরীণ তদন্ত শেষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Like+1