করোনার কারণে পিছিয়ে যাওয়া অমর একুশে বইমেলা ১৫ ফেব্রুয়ারি শুরু করে ১৭ মার্চ পর্যন্ত চালানোর প্রস্তাব দিয়েছে প্রকাশক সমিতি। মঙ্গলবার (১ ফেব্রুয়ারি ) দুপুরে বাংলা একাডেমি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এক বৈঠকে প্রকাশকদের পক্ষ থেকে এ প্রস্তাব দেওয়া হয় বলে জানান বইমেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব ও বাংলা একাডেমির পরিচালক জালাল আহমেদ।
প্রকাশক সমিতির দেওয়া প্রস্তাব বিষয়ে বাংলা একাডেমির পরিচালক বলেন, “প্রকাশকদের প্রস্তাব আমরা সরকারের সংশ্লিষ্টদের জানাব। কোভিড পরিস্থিতি বিবেচনা করে সরকার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। এর মধ্যে মেলার প্রস্তুতি চলবে।”
বৈঠক শেষে বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির সভাপতি ফরিদ আহমেদ বলেন, আজকে আমাদের বৈঠকে ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৭ মার্চ বইমেলা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছ। এই প্রস্তাবনটা সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠাবে বাংলা একাডেমি। তারপর সেটা অনুমোদিত হলে আনুষ্ঠানিকভাবে তারা ঘোষণা করবেন, কবে থেকে বইমেলা হবে।”
বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির সহ সভাপতি ও প্রকাশনা সংস্থা অন্যপ্রকাশের কর্ণধার মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা বলেছি, বইমেলা করতে হলে এক মাসই করতে হবে। আমরা ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৭ মার্চ পর্যন্ত বইমেলা আয়োজনের প্রস্তাবনার কথা জানিয়েছি। এ বিষয়ে বাংলা একাডেমি থেকে একটি চিঠি সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের পাঠানো হবে। তারপর সরকারি সিদ্ধান্ত মোতাবেক, বইমেলার দিনক্ষণ চূড়ান্ত করা হবে।’
করোনার সংক্রামক ধরন ওমিক্রনের প্রভাবে সারাদেশে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা যখন বাড়ছে, পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা; তখন সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক বইমেলা ফেব্রুয়ারির ১৪ তারিখ পর্যন্ত স্থগিত রাখা হয়েছে।
এরপর ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকেই বইমেলা শুরু হচ্ছে বলে প্রকাশকদের একাংশ দাবি করেন। কিন্তু বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মুহম্মদ নূরুল হুদা ও প্রকাশক সমিতির সভাপতি ফরিদ আহমেদ স্পষ্টতই জানান, বইমেলা ১৫ ফেব্রুয়ারি শুরু হবে এমন তথ্যের ভিত্তি নেই। বইমেলা আয়োজনের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে মন্ত্রিসভা। তারপর সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় দিনক্ষণ চূড়ান্ত করবে।
করোনা সংক্রমণের কারণে বইমেলা আয়োজন আপাতত স্থগিত রাখতে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরাও পরামর্শ দিয়েছেন।
কিন্তু প্রকাশকরা বলছেন, স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে অনুসরণ করা হবে বইমেলায়। এবারের বইমেলায় রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মেলা প্রাঙ্গণের আয়তনও বিস্তৃত করা হচ্ছে। বইমেলা থেকে যেন করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে না পারে, সেজন্য প্রকাশক, বই বিক্রেতা ও মেলার কর্মীদের টিকার আওতায় আনার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেছে বাংলা একাডেমি। প্রকাশক সমিতি ও বিক্রেতা সমিতিও এই সিদ্ধান্তে সায় দিয়ে বলেছেন, তারাও সবাইকে টিকার আওতায় নিয়ে আসতে পদক্ষেপ নিয়েছেন।