ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় বৌ ও শ্যালিকাকে হত্যা অভিযোগ উঠেছে আমীর হোসেন নামের এক যুবকের বিরুদ্ধে। সোমবার (৩ মার্চ) মরদেহ দুটি উদ্ধার করে পুলিশ। পরে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এর আগে রোববার (২ মার্চ) গভীর রাতে উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের ধজনগর গ্রামে হত্যাকাণ্ডের এ ঘটনাটি ঘটে।
নিহতরা হলেন- ধজনগর গ্রামের রওশন আলীর মেয়ে যুঁথী আক্তার (২২) ও তার ছোট বোন স্মৃতি আক্তার (১৪)। যুঁথী অন্ত:সত্বা ছিলেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বছর দেড়েক আগে কুমিল্লা জেলার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার জামতলী গ্রামের জাকির হোসেনের ছেলে আমীর হোসেনের সঙ্গে যুঁথী আক্তারের বিয়ে হয়। স্মৃতি স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ত।
যুঁথী ও স্মৃতির মামাতো ভাই মো. মহসীন বলেন, “বিকেলে আমাকে জানানো হয় তাদের ঘরে ইফতার করার মতো কিছু নেই। আমি ইফতার কিনে দেই। আমাকে ইফতার করার জন্য বলা হলেও আমি আসতে পারিনি। সকালে দুই বোনের লাশ খাটে পড়ে থাকার খবর পাই।”
স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে পারিবারিক কলহ ছিল উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, “রোববার রাতে যুঁথীর স্বামী আমীর হোসেন এ বাড়িতেই (শ্বশুর বাড়ি) ছিল। শ্যালক জাহিদকে তার সঙ্গে থাকতে বলে। রাতে শ্যালক উঠে তার বোনেরা রোজা রাখবে কিনা জানতে ডাকতে চায়। এতে বাধ সাধে আমীর। হত্যার পর তাদেরকে ঘুমানোর মতো করে কম্বল ও চাদর দিয়ে ঢেকে রেখে এক পর্যায়ে সে ঘর থেকে সটকে পড়ে।”
গোপীনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য (মেম্বার) মো. ইউনুস পাঠান জানান, খবর পেয়ে তারা এসে বিছানায় লাশ দেখতে পান। দুই বোনের শরীরে আঘাত না থাকায় শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। পরিবারের লোকজন বলছে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দ্বন্দ্ব ছিল। রাত ১টার পর এ ঘটনাটি ঘটানো হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
গোপীনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মিজানুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, খবর পেয়ে তিনি ওই বাড়িতে যান। পুলিশও ঘটনাস্থলে গিয়ে কীভাবে কি হয়েছে সেটা জানার চেষ্টা করছে। আমীর হোসেন পালিয়ে গেছে।
কসবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবদুল কাদের জানান, তাদের বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয় বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে কী কারণে তাদের খুন করা হয়েছে সে বিষয়ে নিশ্চিত করে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। ঘাতককে ধরতে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।