আজ শনিবার মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে আয়োজিত সুধী সমাবেশে বক্তব্য দেওয়ার সময় বাবা-মায়ের কথা স্মরণ করে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন তিনি।
তিনি বলেন, আমি সব সময় অনুভব করি, আমার বাবা ও আমার মা, সব সময় তাদের দোয়া আমার উপরে রয়েছে। তাদের আর্শীবাদ আমার মাথার ওপর আছে। তা নাহলে আমার মতো একজন সাধারণ বাঙালি মেয়ে এতো কাজ করতে পারতাম না।
এ কথা বলার সময় প্রধানমন্ত্রীর গলা ভারী হয়ে আসে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোটি কোটি দেশবাসীর সঙ্গে আমিও আজ আনন্দিত, গর্বিত এবং উদ্বেলিত। অনেক বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে আর ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে প্রমত্তা পদ্মার বুকে আজ বহু-কাঙ্ক্ষিত সেতু দাঁড়িয়ে গেছে। এই সেতু শুধু ইট-সিমেন্ট-স্টিল-লোহার কংক্রিটের একটি অবকাঠামো নয় এ সেতু আমাদের অহঙ্কার, আমাদের গর্ব, আমাদের সক্ষমতা আর মর্যাদার প্রতীক। এ সেতু বাংলাদেশের জনগণের।
তিনি বলেন, এই সেতুর সঙ্গে জড়িয়ে আছে আমাদের আবেগ, আমাদের সৃজনশীলতা, আমাদের সাহসিকতা, সহনশীলতা এবং আমাদের প্রত্যয়। আমরা এই সেতু করবোই, সেই জেদ। ষড়যন্ত্রের ফলে আমাদের সেতু নির্মাণ দুই বছর বিলম্বিত হয়েছে, কিন্তু আমরা হতোদ্দম হইনি। শেষ পর্যন্ত অন্ধকার ভেদ করে আমর আলোর মুখ দেখেছি। পদ্মার বুকে জ্বলে উঠেছে লাল, নীল, সবুজ, সোনালি আলোর ঝলকানি। ৪২টি স্তম্ভ যেন স্পর্ধিত বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বলেছিলেন, বাঙালিকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না, পারেনি। আমরা বিজয়ী হয়েছি।
শেখ হাসিনা বলেন, তারুণ্যের কবি, দ্রোহের কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য্যের ভাষায় তাই বলতে চাই: সাবাস, বাংলাদেশ, এ পৃথিবী অবাক তাকিয়ে রয়, জ্বলে পুড়ে মরে ছারখার, তবু মাথা নোয়াবার নয়।
তিনি বলেন, আমরা মাথা নোয়াইনি। আমরা কখনো মাথা নোয়াবো না। বাঙালি জাতি কখনও মাথা নোয়ায় না। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মাথা নোয়াননি, তিনি আমাদের মাথা নোয়াতে শেখাননি, ফাঁসির মঞ্চে দাঁড়িয়ে তিনি জীবনের জয়গান গেয়েছেন। তারই নেতৃত্বে স্বাধীনতা অর্জন করেছি। তার পদাঙ্ক অনুসরণ করেই বাংলাদেশ আজ বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে এতে স্বাগত বক্তব্য দেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব আনোয়ারুল ইসলাম। অংশ নিয়েছেন জাতীয় সংসদের স্পিকার, মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরা, দেশের রাজনৈতিক নেতারা, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার প্রতিনিধি, সাংবাদিক, শিক্ষকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধিরা।