পিরোজপুর প্রতিনিধি :: বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব সেতুর উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বরিশাল-খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের কচা নদীর উপর নির্মিত বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব সেতু উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সেতুর মধ্যে দিয়ে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে ফেরি যুগের অবসান ঘটল।
আজ রবিবার (৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব অষ্টম বাংলাদেশ চীন মৈত্রী সেতুর উদ্বোধন ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী।
এর আগে সকাল ১০ টায় গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর ১০টা ৫৮ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণের শেষ পর্যায়ে সেতুর শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ.ম রেজাউল করিম এমপি, জাতীয় পার্টি জেপির চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু এমপি, পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কে এম এ আউয়াল ও সেতুর প্রকল্প ব্যবস্থাপক মাসুদ মাহমুদ সুমন, পিরোজপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহেদুর রহমান, পুলিশ সুপার মুহাম্মদ সাঈদুর রহমানসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ ও রাজনৈতিক নেতা-কর্মী।
জানা গেছে, ৮৯৮ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ৯৯৮ মিটার দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট এই সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে আজ সেতুর কুমিরমারা ও বেকুটিয়া দুই প্রান্তে ছিল অনুষ্ঠান। সেতু এলাকায় ছিল সাজ সাজ রব।
পিরোজপুরের সেতুর কুমিরমারা প্রান্তে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহেদুর রহমান এবং বেকুটিয়া প্রান্তে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কাউখালীর ইউএনও মোছা. খালেদা খাতুন রেখা।
প্রতীক্ষিত বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব সেতু উন্মোচন করায় খুশি বরিশাল অঞ্চলের মানুষ। ফলে এই অঞ্চলে যান চলাচল যেমন বাড়বে তেমনি আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন হবে।
উদ্বোধনের পরপরই স্থানীয় হাজারো জনতার ঢল নামে সেতুতে। এ সময় বাঁধভাঙ্গা উচ্ছাস প্রকাশ করেন তারা।
এদিকে সেতুটি চালু হওয়ায় বেনাপোল স্থলবন্দর ও পায়রা গভীর নৌ বন্দর সড়ক যোগাযোগ নিরবিচ্ছিন্ন হলো।
উল্লেখ্য, ২০০০ সালের ১০ জুন প্রথমে পিরোজপুরের একটি জনসভায় কচা নদীর ওপর একটি সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর ২০০১ সালে নতুন সরকার গঠিত হওয়ার পর সেতু নির্মাণ অনিশ্চিত হয়ে যায়। পরবর্তীকালে শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসলে ২০১৩ সালের ১৯ মার্চ পিরোজপুরে আরেকটি জনসভায় এ সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি। এরই ধারাবাহিকতায় এপ্রিল ২০১৬ সালে বাংলাদেশ সরকার ও চীন সরকারের মধ্যে বেকুটিয়া নামক স্থানে ৮ম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু নির্মাণের জন্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
এরপর ২০১৮ সালে ১ নভেম্বর ৮ম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। চার বছর মেয়াদে নির্মাণ কাজের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের উদ্যোগে সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে সেভেন্টি ব্যুরো গ্রুপ কোম্পানি লিমিটেড নির্মাণ কাজ শেষ করে গত ৭ আগস্ট সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রনালয়ে হস্তান্তর করে।