চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃবরিশাল গনপূর্ত অধিদপ্তরে বিগত দশ বছরে পাঁচশ কোটি টাকার উপরে কাজ বাগিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে জি কে শামিমের বরিশাল প্রতিনিধি মিজান খান ওরফে (কাশি মিজান)’র বিরুদ্ধে। বরিশালে বিভিন্ন সময় গণপূর্ত বিভাগে দায়িত্বরত নির্বাহী প্রকৌশলীদের জি কে শামিমকে ফোনে ধরিয়ে দিয়ে কিংবা প্রধান নির্বাহী প্রোকৌশলীকে ঘুষ দিয়ে ম্যানেজ করে কাজগুলো বাগিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। সূত্র বলছে, কাশি মিজানের পিতা বরিশাল নথুল্লাবাদ বাস মালিক সমিতির স্থানীয় বাস গাড়ীর ড্রাইভার ছিলো। অন্যদিকে তার সন্তান কাশি মিজান বর্তমানে চলাফেরা করে সোয়া কোটি টাকা মূল্যের প্রাইভেট গাড়িতে।
ঝালকাঠির সাবেক সংসদ সদস্য আজিজ গাজীর ভগ্নিপতি খান বিল্ডার্সের স্বত্বাধিকারী নাসির খানের লাইসেন্সের সাথে জে কে বিল্ডার্সের জেভি করে এবং শুধু খান বিল্ডার্সের নামে ৫০০ কোটি টকার উপরে কাজ বাগিয়ে নেয় বিসিসি’র ৩০নং ওয়ার্ডের সাবেক যুবদলের সভাপতি মিজান খাঁ ওরফে (কাশি মিজান)। বিভিন্ন স্থানের সরকারি কাজ পেতে মিজান বিভিন্ন সময় মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে আওয়ামীলীগ,যুবলীগ এবং ছাত্রলীগের প্রভাবশালী নেতাদের ব্যাবহার করে থাকেন। তার বিরুদ্ধে প্রধান নির্বাহীর রুমে ক্যাডার নিয়ে ঢুকে সাধারন ঠিকাদারের উপর হামলার অভিযোগও রয়েছে।
বরিশালে এই কাশি মিজান বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও সাবেক সাংসদ মজিবর রহমান সরোয়ারের প্রধান ডোনার হিসেবে ব্যপক পরিচিত রয়েছে। বিএনপির সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন ২৭,২৯ ও ৩০ নং ওয়ার্ডে আওয়ামীলীগের বিভিন্ন পরিবারের উপর হামলার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। সুত্র বলছে,খান বিল্ডার্স ও পলি ইন্জিনিয়ারিং এ জেভি করে শুধু বরিশাল নয় পটুয়াখালী,ভোলা,বরগুনা,ঝালকাঠী ও পিরোজপুরের প্রায় ৯০% কাজ বাগিয়ে নেন কাশি মিজান। অভিযোগ রয়েছে পলি ইনজিনিয়ারিং এর সমস্ত অফিসিয়াল কাজ সম্পাদন করে কাশি মিজানের সেন্ডিকেট।
পলি ইঞ্জিনিয়ারিং এর স্বত্বাধিকারী আকবর হোসেন জামাতের জেলা আমির মোয়াজ্জেম হোসেন হেলালের বেয়াই। পি পি আর অনুযায়ী সর্বনিম্ন ৩ কোটি টাকার কাজ এল টি এম করার কথা থাকলেও অফিসের যোগ সাজগে ও টি এম পদ্ধিতির মাধ্যেমে তাদের নিজস্ব দুটি লাইসেন্স এর মাধ্যমে বরিশাল বিভাগের সমস্ত বড় কাজ বাগিয়ে নিয়ে পরবর্তীতে তারা সেগুলো ১৫/২০% কমিশনে বিক্রি করে দেন। তাদের বাগিয়ে নেয়া কাজগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো, বরিশাল জেলা দায়রা জজ আদালত,আব্দুর রব সেরনিয়াবাত টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ,মেরিন একাডেমী ভবন,নতুন কয়েকটি ভূমি অফিস,আর আর এফ,পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়।অভিযোগ রয়েছে তাদের প্রায় কাজ গুলোই হয় নিম্নমানের এ যেনো দুর্নীতির সাগর।
এ বিষয়ে একাধিক সাধারণ ঠিকাদাররা বলেন, জিকে বিল্ডার্স, খান বিল্ডার্স, মের্সাস পলি ইঞ্জিনিয়ারিং নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোর খোঁজ নিলেই জানা যাবে গত দশ বছরে গণপূর্ত বিভাগ থেকে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে তারা কত কোটি টাকার কাজ বাগিয়ে নিয়েছেন। ঠিকাদাররা আরও বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও র্যাবের উর্ধতন কর্মকর্তারা উল্লেখিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অনুসন্ধান করলেই ভয়াভহ দুর্নীতির চিত্র বেরিয়ে আসবে।
এদিকে গত ২৫ সেপ্টেম্বর বরিশালের এক অনুষ্ঠানে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ.ম রেজাউল করিম হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন-দুর্নীতি ও অনিয়মের সাথে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের কেউ জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কারণ আমি নিজে অনিয়ম করি না, আর কাউকে অনিয়ম করতেও দেব না। এরপরেও যদি কেউ দুর্নীতিতে জড়ায় তা বরদাশত করা হবেনা। বরং তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
তিনি আরো বলেন,মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এ ব্যাপারে কাজ করা হচ্ছে । অন্যদিকে এফ.আর টাওয়ারের ঘটনায় মন্ত্রণালয়ের ৬২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসা এবং রূপপুরের ঘটনায় ৩০ জনের নাম আসায় কাউকে ছাড় দেওয়া হয়নি জানিয়ে মন্ত্রী বলেন-যেহেতু জি.কে শামীমের বিষয়টি তদন্তাধীন তাই তার বিষয়ে কোন মন্তব্য করা সমীচীন হবেনা।