চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃরেল ভ্রমণে সব দেশেই সব শ্রেণির মানুষের আগ্রহ থাকে বেশি। আমাদের দেশও এর ব্যতিক্রম নয়। তাই রেলওয়েকে আধুনিকায়ন করতে নতুন নতুন পরিকল্পনা নিচ্ছে সরকার। পছন্দের পরিবহন রেলওয়েকে লাভবান করতে এবং মানুষের যানজটমুক্ত ও স্বস্তিদায়ক ভ্রমণের অধিকার নিশ্চিত করতে রেলের আধুনিকায়নের বিকল্প নেই।
এরই ধারাবাহিকতায় দক্ষিণাঞ্চলে রেলপথ শিগগিরই দৃশ্যমান হতে যাচ্ছে। অচিরেই বরিশালের মানুষ শুনতে পাবে রেলগাড়ির ‘কু ঝিকঝিক’ শব্দ। ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে পর্যটন এলাকা কুয়াকাটা পর্যন্ত ২৭০ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। রেলপথের জন্য এরই মধ্যে শুরু হয়েছে ফিজিবিলিটি স্টাডি ও ভূমি অধিগ্রহণের কার্যক্রম। বরিশাল জেলায় বসানো হবে দুটি রেল স্টেশন। নগরীর কাশিপুর ও বিমানবন্দরসংলগ্ন বাবুগঞ্জের দেহেরগতি এলাকায় এ স্টেশন হবে। তবে কাশিপুরে বসতে যাওয়া রেল স্টেশন নিয়ে এলাকার বাসিন্দাদের মাঝে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। এ এলাকায় কিছু বনেদি পরিবার আছে, যারা বাড়িঘর হারানোর চিন্তায় হতাশ।
নগরীর ২৮ নং ওয়ার্ডের চৌহুতপুর এলাকার চায়ের দোকানে যেন আসর জমেছিল রেললাইন আসার বিষয় নিয়ে। কথা হয় সেখানকার বাসিন্দা মো. পাভেলের সাথে।
তিনি বলেন, তার ১০ শতাংশ জমির ওপর করা বাড়ি রেল স্টেশনের মধ্যে পড়েছে। তার দাদা বাড়ির একাংশ সরকার অধিগ্রহণ করবে। সেখানকার একাধিক ব্যক্তি বলেন, রেল স্টেশন হওয়ায় তারা বেশ খুশি। এ এলাকা বেশ উন্নত হবে। এখনই নানা পরিকল্পনা শুরু করেছেন সম্ভাব্য এ স্টেশনকে ঘিরে। রেলের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ হলে কয়েকগুন অর্থ পাওয়ার আশায় আছেন অনেকে।
বরিশাল সিটি করপোরেশনের ২৮ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, কাশিপুরে তার এলাকার মধ্যে এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে একটি স্টেশন হচ্ছে। এর পরিধি হবে ৬৪০ ফিট। গত বৃহস্পতিবার তার এলাকায় এসে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা বাড়ি-ঘরে মার্কিং করে গেছে। তিনি বলেন, এ প্রতিষ্ঠানটি পরিসংখ্যান নিচ্ছে ওই এলাকায় কতটা স্থাপনা আছে। তিনি বলেন, এ ঘটনায় তার এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে।
রেলপথ নির্মাণে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ফিজিবিলিটি স্টাডির দায়িত্ব পাওয়া ফিল্ড সুপারভাইজার মো. সারোয়ার জাহান পার্থ বলেন, ডিডিসি ও ডিএসসি নামের দুইটি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ভাঙ্গা থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত প্রাথমিক জরিপ করে যাচ্ছে। ভাঙ্গা থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত ২৭০ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণ হবে। এ জন্য বরিশালে দু’টি স্টেশন হচ্ছে। এরই মধ্যে ২ হাজার ৬০০ ঘরে মার্কিং করা হয়েছে, যেগুলো উচ্ছেদ করতে হবে। তাদের জরিপের কাজও অনেকাংশে শেষ পর্যায়ে বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে ঢাকা-বরিশাল-কুয়াকাটা রেল লাইন বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য সচিব অধ্যক্ষ মহসিন উল ইসলাম হাবুল বলেন, তাদের দীর্ঘদিনের দাবি ঢাকা-বরিশাল-কুয়াকাটা পর্যন্ত রেল লাইন। নগরীতে স্টেশনের উদ্যোগ ও ফিজিবিলিটি স্টাডি শুরু হওয়া নিঃসন্দেহে সুখবর। এজন্য যে কোনো ত্যাগ স্বীকার করতে বরিশালবাসী প্রস্তুত রয়েছেন বলে জানান তিনি।