খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক বলেছেন, বর্জ্যকে সম্পদে পরিণত করতে হবে। আগে সিটি কর্পোরেশন এলাকার বর্জ্য কোন কাজে আসতো না। আধুনিক বর্জ্য পরিশোধনাগারের মাধ্যমে বর্জ্য থেকে সার ও ডিজেল উৎপাদন করে বাণিজ্যিকভাবে বিক্রি করা হবে।
মেয়র বুধবার দুপুরে খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার শলুয়া ডাম্পিং পয়েন্টে কেসিসি ও এলজিইডি’র যৌথ উদ্যোগে দ্বিতীয় নগর অঞ্চল উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় আধুনিক বর্জ্য পরিশোধনাগার নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
সিটি মেয়র বলেন, এই প্রকল্পে প্রাথমিক পর্যায়ে প্রতিদিন ৩৭৫ টন বর্জ্য পরিশোধন করা যাবে। প্রকল্পের কাজ শেষ হলে ১২শত মেট্রিক টন বর্জ্য পরিশোধন করা যাবে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে এ বর্জ্য সংগ্রহ করা হবে। প্রকল্পের জন্য ২৫ একর জমি সরকারের পক্ষ থেকে চায়না কোম্পানিকে ভাড়া দেওয়া হয়েছে যা ২০ বছর পর কর্তৃপক্ষ ফেরত নেবে। মেয়র এই প্রকল্পটি সঠিক সময়ে বাস্তবায়ন করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেন।
অনুষ্ঠানে কেসিসি’র প্যানেল মেয়র মোঃ আলী আকবর, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা লস্কার তাজুল ইসলাম, সচিব মোঃ আজমুল হক, বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলর, সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর, প্রধান বর্জ্য কর্মকর্তা, যোগিপোল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কমকর্তা ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় নগর অঞ্চল উন্নয়ন প্রকল্পের (সিআরডিপি-২) এর আওতায় কেসিসি ও এলজিইডি যৌথভাবে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় হবে প্রায় ৫২ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। বর্জ্য পরিশোধনাগারের আওতায় পৃথক পৃথকভাবে কম্পোস্ট প্লান্ট, প্লাস্টিক রিসাইক্লিং প্লান্ট, ওয়ার্কশপ, পাম্প, সাবস্টেশন, লিচেট ট্রিটমেন্ট ফ্যাসিলিটি, ল্যান্ডফিল সেল, ফায়ার হাইড্রেন্ট, সীমানা প্রাচীর, অভ্যন্তরীণ সড়ক, ড্রেজন ও পুকুর এবং প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে। বর্জ্য পরিশোধনাগারে ৩-আর পদ্ধতিতে বর্জ্য হ্রাস, পুন:চক্রায়নের মাধ্যমে বর্জ্য পরিশোধন করা হবে। বর্জ্য থেকে প্রতিদিন ১৫ টন কম্পোস্ট সার, বায়োগ্যাস থেকে বিদ্যুৎ ও প্লাস্টিক বর্জ্য থেকে প্রতিদিন ৫ হাজার লিটার ডিজেল তৈরি করা হবে। এছাড়া দূষিত পানি বাইরে না ফেলে পরিশোধনের মাধ্যমে প্রকল্পের কাজে ব্যবহার, ওয়েস্ট টু এনার্জি প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিদ্যুৎ তৈরি করে প্লান্টের চাহিদা মেটানো এবং উৎপাদিত সার বিক্রির মাধ্যমে রাজস্ব অর্জন করা সম্ভব হবে।
এর আগে সিটি মেয়র একই প্রকল্পের আওতায় খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয় (কুয়েট) সম্মুখস্থ এ্যাপ্রোচ রোডের উন্নয়ন কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এক হাজার একশত ৮৫ মিটার দীর্ঘ এ সড়কটির নির্মাণে ব্যয় হবে প্রায় ২২ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনকালে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয় উপাচার্য প্রফেসর ড. মিহির রঞ্জন হাওলাদার, উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. সোবহান মিয়া, কেসিসি’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা লস্কার তাজুল ইসলাম, সচিব মোঃ আজমুল হক, বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলর, প্রধান বর্জ্য কর্মকর্তা, যোগিপোল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ সাজ্জাদুর রহমান লিংকন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।