বাগেরহাট প্রতিনিধিঃ বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে বহরবুনিয়া ইউনিয়নের বহরবুনিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মন্ডলী ও ৩শ’ শিক্ষার্থীদের সুপেয় পানির অভাবে ভোগান্তি চরমে।
সরেজমিনে ওই বিদ্যালয়ে গিয়ে জানাগেছে, ১৯০৫ সালে এক একর ১৬ শতক জমির ওপর বহরবুনিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয়। শিক্ষার্থী রয়েছে ৬ষ্ট থেকে ১০ম শ্রেনী পর্যন্ত ৩শ’ ৩ জন। প্রধান শিক্ষকসহ শিক্ষক মন্ডলী রয়েছে ১৫ জন।
চতুর্থ শ্রেনী কর্মচারি ৩জন, দীর্ঘদিনের ঐতিয্যবাহি এ প্রতিষ্ঠানটির অবকাঠামো, শ্রেনীকক্ষ হয়নি কোন পরিবর্তন। শিক্ষার্থীর সংখ্যা, লেখা পড়ার গুনগত মান ভালো থাকলেও রয়েছে নানাবিধ সমস্যা।
শ্রেনীকক্ষে পাঠদানে বেঞ্চ, টেবিল, চেয়ার আসবাবপত্রে সংকট রয়েছে। যদিও ২০১৮ সালে শিক্ষা প্রকৌশলী অধিদপ্তরের মাধ্যমে একাডেমির ভবনে ৪ তলা বিশিষ্ট প্রায় ৩ কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মাণাধীন একটি কাজ চলমান রয়েছে।
এ বিদ্যালয়টি প্রত্যন্ত অঞ্চলে হওয়াতে যোগাযোগ ব্যবস্থা খুবই খারাব। বিদ্যালয়ে আসতে শিক্ষার্থীদের কোথাও কোন পাকা রাস্তা নেই। পশ্চিম বহরবুনিয়া আড়াই কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা। অপরদিকে ছাপড়াখালী থেকে ফুলহাতা পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার কাচা রাস্তা পেরিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের আসতে হয় এ বিদ্যালয়ে। বর্ষা মৌসুমে হাঁঠু পানি কাঁদা ভেঙ্গে শিক্ষার্থীদের সিমাহীন ভোগান্তিতে পড়তে হয়। বড় সমস্যা রয়েছে সুপেয় পানির অভাব। খাবার পানি আনতে হয় কয়েক মাইল পেরিয়ে। বৃষ্টির সময় ছোট ছোট পাত্রে ধরে রাখা হয় কিন্তু এ পানিতে সামান্য কিছুদিন যায়। দূর থেকে টাকা দিয়েও মিলছে না পানি।
জান্নাতুন সেফা, জান্নাতুন মোমতাহ, নকিবুল ইসলাম, শাকিবুলসহ একাধিক শিক্ষার্থীরা বলেন, দীর্ঘ পথ পায়ে হেটে এসে বিদ্যালয়ে শ্রেনীকক্ষে পাঠদানে একটু সুপেয় খাবার পানি খেতে পারছিনা। আমাদের মত এ সমস্যা পরবর্তী শিক্ষার্থীদেরও কি পোহাতে হবে। এ রকম অনেক প্রশ্ন তুলেন সংবাদকর্মীদের কাছে তারা।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রভাত কুমার মিস্ত্রী জানান, এ বিদ্যালয় শুধু নয় পাশেই একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দেড় শতাধিক শিক্ষার্থীরা একই সমস্যায় জর্জরিত। শিক্ষক সহ শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের সমস্যা খাবার পানির অভাব। অতিরিক্ত লবনাক্ততার কারনে পুকুরের পানিও খাবার উপযোগী থাকেনা। টিউবয়েল থেকেও লবন পানি আসে। এ অঞ্চলের মানুষের সুপেয় পানির জন্য বড়ই অভাব। সরকারিভাবে বৃষ্টির পানি ধরে রাখার জন্য রেইন ওয়াটার হারভেষ্টিং প্লান(টেংকি) বসানো হলে কিছুটা ভোগান্তি দূর হবে। ছাত্র-ছাত্রীরা পাবে সুপেয় খাবার পানি।
এ সর্ম্পকে উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী কর্মকর্তা মো. রায়হান হোসেন বলেন, সরকারিভাবে এ উপজেলায় বরাদ্ধকৃত রেইন ওয়াটার হারভেষ্টিং প্লান(টেংকি) বিতরনে ইতোমধ্যে ৩০-৩৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দেওয়া হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশনা আসলে পর্যাক্রমে আরো দেওয়া হবে। তবে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের অবহিত করা হবে।