গুম নিয়ে জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের ৫৪তম অধিবেশন চলছে। যেখানে ৩৬টি দেশের তিন হাজারের বেশি জোরপূর্বক গুমের ঘটনা পর্যালোচনা করছেন জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা। এই অধিবেশনে গুম নিয়ে বার্ষিক প্রতিবেদনে বাংলাদেশের তথ্যও তুলে ধরা হয়েছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন থেকে বাংলাদেশ সরকারের কাছে ৮৮টি গুমের অভিযোগের বিষয়ে প্রকৃত অবস্থা জানতে চাওয়া হয়। জবাবে পাঁচজন আটক এবং ১০ জন মুক্ত অবস্থায় আছেন বলে জানায় সরকার। বাকি ৭০টি ঘটনার এখনো নিষ্পত্তি হয়নি বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।
সার্বিক বিষয়টি বিবৃতি দিয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন জানায়, বাংলাদেশে জোরপূর্বক গুম নিয়ে ওয়ার্কিং গ্রুপ অন এনফোর্স অর ইনভলেন্টারি ডিসাপিয়ারেন্স সর্বশেষ এ তথ্য দিয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বর্তমানে গুম নিয়ে জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের ৫৪তম অধিবেশন চলছে। গত ১১ সেপ্টেম্বর শুরু হওয়া অধিবেশন ৬ অক্টোবর পর্যন্ত চলবে। অধিবেশনে ৩৬টি দেশের তিন হাজারের বেশি জোরপূর্বক গুমের ঘটনা পর্যালোচনা করছেন জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা। এতে গুম নিয়ে বার্ষিক প্রতিবেদনে বাংলাদেশ অংশে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
যেখানে আরও বলা হয়, ১৩০তম অধিবেশনে গুমের ঘটনাগুলোর উত্তর বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া হলেও গুম নিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করায় দেশের মানবাধিকার সংগঠনের সদস্যদের হয়রানি ও ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। এই বিষয়ে ডব্লিউজিইআইডি উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
রিপোর্ট পর্যালোচনা করে দেখা যায়, নিখোঁজ ব্যক্তিদের মধ্যে দুটি দলকে প্রাথমিকভাবে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এবং বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামীর ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরের কর্মীরা। প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে কখনো কখনো সাধারণ নাগরিক ও ক্ষমতাসীন দলের সদস্যদেরও টার্গেট করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবার, মানবাধিকারকর্মী এবং সুশীল সমাজের প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে যারা ডব্লিউজিইআইডির পক্ষে কাজ করছে, সরকারকে অবশ্যই তাদের যে কোনো ধরনের হুমকি ও ভয়ভীতি দেখানো থেকে সুরক্ষা দিতে হবে। সেই সঙ্গে গুমের শিকার ব্যক্তিদের আত্মীয়দের ক্ষতিপূরণ এবং তথ্য তুলে ধরার অধিকার রক্ষায় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
প্রতিবেদনে জাতিসংঘের এই সংস্থাটি জানায়, গুমের অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখতে ডব্লিউজিইআইডির পক্ষ থেকে বাংলাদেশে প্রতিনিধি পাঠানোর বিষয়ে সরকারের সঙ্গে ২০১৩ সালের ১২ মার্চ প্রথম যোগাযোগ করা হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে এ বিষয়ে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।